Sports mews

ভরসা থাক ভালবাসায়

ভারতের ফুটবল দল এই আসরে খেলছে না। কখনও খেলেওনি। তবে হৃদয়ে আকাঙ্খা অসীম— ১২৫ কোটির মধ্যে থেকে উঠে আসা কোনও ১১ জন দাপিয়ে বেড়াবে ফুটবল বিশ্বকাপের আসরে। কবে আসবে সেই দিন, আজ তা বলা কঠিন। তবে ভরসা থাক, আশার প্রদীপ উজ্জ্বল থাক, অদম্য আকাঙ্খা জীবন্ত থাক।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৮ ০০:৩১
Share:

ছবি:এএফপি।

ভালবাসায় সব হয়। এ জগতে অনেক কিছুই অসম্ভব ঠেকে আপাতদৃষ্টিতে রোজ। কিন্তু ভালবাসার উদ্যান যেন নন্দনবন। মাটির পৃথিবীর অস্বাভাবিক বিষয়গুলোরই অত্যন্ত স্বাভাবিক বিচরণ সে কাননে।

Advertisement

এক অসামান্য মহামিলনের মরসুম এল। সূচনা হল ফুটবল বিশ্বকাপ-২০১৮-র। বিশ্বকাপের আয়োজন রাশিয়ায়। কিন্তু সে সম্ভবত আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কার্যক্ষেত্রে ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই প্রায় গোটা বিশ্ব জুড়ে ফুটবল-ফুটবল উৎসব এক। ফুটবলের ঘোরে আচ্ছন্ন গোটা মানবজাতি। বিশ্বকাপের বর্ণালী থেকে রং নিয়ে নিয়ে রাঙিয়ে নেওয়া সমগ্র পৃথিবীকে। এই মহামিলন পৃথিবীতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী সম্ভবত, এই মহামিলনের সংঘটন শুধুমাত্র ফুটবলের পক্ষেই সম্ভব।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের বাঁকুড়া নামের এক জেলার প্রত্যন্ত কোনও প্রান্ত থেকে ব্রাজিল নামের দেশটির দূরত্ব কতখানি? কোন গোলার্ধে অবস্থিত দেশটা, কোন মহাদেশে, পৃথিবীর কোন দিকটায়, সে দেশের মানুষ কী ভাষায় কথা বলেন, কী খান? প্রত্যন্ত গ্রামটাতে এই প্রশ্নগুলোর একটারও জবাব হয়তো পাওয়া যাবে না। কলকাতার মতো মহানগরেও অনেকেরই হয়তো জানা নেই এই প্রশ্নগুলোর জবাব। কিন্তু কলকাতা থেকে কোতুলপুর, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ— ব্রাজিলের পতাকাটা দারুণ ভাবে চেনা সর্বত্র। ১১ জনের টিমটা চেনা, রিজার্ভ বেঞ্চটাও চেনা। আর বিশ্বকাপের মরসুমে ভৌগোলিক দূরত্ব সংক্রান্ত প্রশ্নটাও বেশ অবান্তর। বিশ্বকাপে বাঁকুড়া হয়তো ব্রাজিলেরই একটা জেলা। জলপাইগুড়ি হয়তো আর্জেন্তিনার। কোনও প্রান্তে উঠে এসেছে এক খণ্ড জার্মানি, কোথাও ফ্রান্স, কোথাও স্পেন বা পর্তুগাল।

Advertisement

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

কাগুজে হিসেব বলছে, বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে ৩২টা দেশ। কিন্তু ও কোনও হিসেবই নয়। আসল হিসেবে বিশ্বকাপের অংশীদার তো গোটা পৃথিবী। ওই ৩২টা দেশ গোটা পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব করছে, গোটা পৃথিবী ওই ৩২টা দেশের মধ্যে নিজেদের খুঁজে পাচ্ছে আবেগে।

কতখানি আবেগ আর কতটা উন্মাদনা থাকলে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা অজস্র-অসংখ্য সীমান্ত রেখাকে নিমেষে মুছে দিতে পারে শুধু একটা খেলার আসর! অপরিমেয় সে আবেগ, অমেয় সে উন্মাদনা। নিজের নিজের জাতীয় পরিচিতি ভুলে যান কোটি কোটি মানুষ, ফুটবল আবেগে একাত্ম হয়ে যান পৃথিবীর অজানা প্রান্তের সম্পূর্ণ অচেনা মানুষের সঙ্গে। ভালবাসা, ফুটবলের প্রতি ভালবাসা। ভালবাসাতেই এই এত কিছু হয়।

আরও পড়ুন: উইলিয়ামসের গানে শুরু হয়ে গেল রাশিয়া বিশ্বকাপ

আরও পড়ুন: কাউন্টডাউন শেষ, জমজমাট উদ্বোধন বিশ্বকাপের

এমন মহামান্বিত সমারোহের জন্য অশেষ শুভেচ্ছা থাক সকলের তরফ থেকে। ভারতের ফুটবল দল এই আসরে খেলছে না। কখনও খেলেওনি। তবে হৃদয়ে আকাঙ্খা অসীম— ১২৫ কোটির মধ্যে থেকে উঠে আসা কোনও ১১ জন দাপিয়ে বেড়াবে ফুটবল বিশ্বকাপের আসরে। কবে আসবে সেই দিন, আজ তা বলা কঠিন। তবে ভরসা থাক, আশার প্রদীপ উজ্জ্বল থাক, অদম্য আকাঙ্খা জীবন্ত থাক। কারণ, আবার বলি, ভালবাসায় সব হয়। আর ফুটবলের প্রতি ভারতের ভালবাসার প্রমাণ নতুন করে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement