দেওয়ালে পিঠ ঠেকছে ওদের, অযথা শক্তিক্ষয় করব কেন?

গোটা দেশ আবেগে ফুটছে। সীমান্তে অতন্দ্র পাহারায় ছিলেন দেশের যে বীর সন্তানরা, তাঁদের উপর হামলা হয়েছে। ঝরে গিয়েছে আঠেরোটা প্রাণ। প্রত্যেকটা মৃত্যু কাঁটার মতো বিঁধছে ভারতবাসীর বুকে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৭
Share:

উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা। ফাইল চিত্র।

গোটা দেশ আবেগে ফুটছে। সীমান্তে অতন্দ্র পাহারায় ছিলেন দেশের যে বীর সন্তানরা, তাঁদের উপর হামলা হয়েছে। ঝরে গিয়েছে আঠেরোটা প্রাণ। প্রত্যেকটা মৃত্যু কাঁটার মতো বিঁধছে ভারতবাসীর বুকে।

Advertisement

যোগ্য জবাব দেওয়ার দাবি তীব্র হতে শুরু করেছে হিমাচল থেকে মহাসমুদ্র পর্যন্ত বিছিয়ে থাকা সুবিস্তীর্ণ এক ভূভাগের প্রান্তে প্রান্তে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার বিস্ফোরণ ঘটছে গোটা দেশে। অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই ঘটছে এই সব কিছু।

কিন্তু অস্বাভাবিক কিছুও মাথা তুলছে। উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলা ভারতের স্নায়ুতন্ত্রে যে তীক্ষ্ণ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, তার সুযোগ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং মিডিয়ায় এক মাত্রাতিরিক্ত আগ্রাসন দেখা যাচ্ছে। এই আগ্রাসী মতের প্রকাশ, প্রচার ও প্রসারে কিছু ক্ষণস্থায়ী করতালি জুটতে পারে ঠিকই। কিন্তু বাস্তবের পরিসরে এই আগ্রাসন যে কোনও মুশকিলই আসান করবে না, তা এর প্রচারকরাও জানেন।

Advertisement

কী করা উচিত ভারতের? দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে, সব সীমা-পরিসীমা ভুলে, তুমুল আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত? বেপরোয়া হয়ে আচমকা যুদ্ধ শুরু করা উচিত? যুদ্ধেই মুছে যাবে সব সমস্যা? না, তা হবে না। মনে রাখতে হবে, যুদ্ধ হল অন্তিম বিকল্প। সেই বিকল্প বেছে নেওয়ার আগেও একাধিক শক্তিশালী অস্ত্র রয়েছে আমাদের হাতে। গোটা বিশ্ব আমাদের পাশে। সন্ত্রাসের মদতদাতাদের ক্রমশ ঘিরে ফেলছি আমরা। এই লড়াইকে পরিণতি পর্যন্ত পৌঁছে দিতে আরও কৌশলী হওয়াই জরুরি এই মুহূর্তে।

কাশ্মীর উপত্যকায় আগুন জ্বলছিল গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে। পরিস্থিতি সামলাতে বেশ নাজেহালই হতে হচ্ছিল ভারত সরকারকে। শুধু তাই নয়, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সামনে অস্বস্তিও বাড়ছিল ভারতের। আর উল্লাস বাড়ছিল সীমান্তের ও পারে। উরিতে হামলার পর কিন্তু অস্বস্তির সেই ঘেরাটোপ এখন পাকিস্তানের চার পাশে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেওয়ালে পিঠ ঠেকছে ইসলমাবাদের কর্তাদের।

এই সন্ধিক্ষণে প্রতিটা পদক্ষেপ সুচিন্তিত এবং অভ্রান্ত দিশায় হওয়াই কাম্য। সে লক্ষ্যে যদি সফল হই আমরা, কোনও যুদ্ধ ছাড়াই হয়তো কুঠারাঘাত করতে পারব সমস্যার শিকড়টাতে। সেই পথে কি হাঁটব? নাকি বেপরোয়া রক্তপাতে মেতে উঠব? সিদ্ধান্ত আমাদেরই নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন