Editorial News

প্রশাসনের রাশ কি শিথিল হয়ে যাচ্ছে?

এই রাজ্যের সরকার ও শাসক দলের বোঝা উচিত, নিয়মটা স্থির করে দেবে রাষ্ট্রই। অর্থাৎ বৃহত্তর সমাজগোষ্ঠীর স্বার্থে আইন-কানুন-বিচার-প্রশাসনিক যে ব্যবস্থা তার গুরুত্ব আজও একই ভাবে বহাল। শাসকের বোঝা উচিত এই মুহূর্তে তার অন্যথা হচ্ছে রানিগঞ্জে অথবা জ্যোতিনগরে।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০১
Share:

এর আগেও লিখেছিলাম, দুর্ভাগ্যজনক, আবারও লিখতে হচ্ছে ঠিক একই কথা। হয়তো বা কয়েক মাসের ব্যবধানে। পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হল না। আইনরক্ষকরাও যে নিরাপদ নন, রানিগঞ্জ অথবা কলকাতার জ্যোতিনগর বস্তি আরও এক বার বুঝিয়ে দিল সে কথা। পুলিশকে যে মারধর করা যায়, সে বিয়ারের বোতল, ইট, লাঠি বা বোমা যা দিয়েই হোক না কেন, সেটা যে আসলে জলভাত তা আরও এক বার প্রমাণ করে দিল বঙ্গবাসী। এবং সেখানেই উদ্বেগ, কারণ নৈরাজ্য ও অরাজকতার এমন নিদর্শন এই আধুনিক সভ্যতায় খুব স্বাভাবিক বলে গণ্য হয় না।

Advertisement

স্বীকার করে নিতে হবে, পুলিশের সম্পর্কে মানুষের ভয় ও সমীহ দুই-ই ক্রমহ্রাসমান। পুলিশের ভয় কমছে, আইনের ভয় চলে যাচ্ছে, দুষ্কৃতীদের মনে হচ্ছে অপরাধ করলেও ছাড় পাওয়া সম্ভব এবং তাদের মনে হচ্ছে তারাই শাসকের অংশ, অতএব যা খুশি করা তাদের পক্ষে একান্তই স্বাভাবিক— এ হেন পরিস্থিতিকে মধ্যযুগে প্রায়-মাৎস্যন্যায়ের পর্যায়ে আখ্যায়িত করা সম্ভব ছিল। প্রশাসনের বোঝা দরকার, সভ্যতার ইতিহাসে মাৎস্যন্যায় নিতান্তই সাময়িক বিকারই ছিল। অন্যথায় মানুষ এবং রাষ্ট্রের স্বাভাবিক সমীকরণে পরস্পরের নিরাপত্তা সুদৃঢ় করাটাই এ যাবৎ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নিয়মে স্বাভাবিক বলে গণ্য হয়ে এসেছে।

এই রাজ্যের সরকার ও শাসক দলের বোঝা উচিত, নিয়মটা স্থির করে দেবে রাষ্ট্রই। অর্থাৎ বৃহত্তর সমাজগোষ্ঠীর স্বার্থে আইন-কানুন-বিচার-প্রশাসনিক যে ব্যবস্থা তার গুরুত্ব আজও একই ভাবে বহাল। শাসকের বোঝা উচিত এই মুহূর্তে তার অন্যথা হচ্ছে রানিগঞ্জে অথবা জ্যোতিনগরে। অথবা, এই রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে দুষ্কৃতী-মানসেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝুন, রাশ কোথাও আলগা হয়ে যাচ্ছে কি না। দুষ্কৃতী নাকি সাধারণ মানুষ, কার স্বার্থে থাকবে সামগ্রিক কাঠামো সেটা স্থির করতে হবে প্রশাসনকেই। সময় সমাগত, বুঝুক সরকার।

Advertisement

সরকার বাহাদুর শুনছেন তো?

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন
‘রাত বাড়লে দেখা মেলে না পুলিশের’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement