ক্ষতির শিকার সেই চাষিই
সম্পাদকের মতে, ‘কৃষিঋণ মকুব করিলে ঋণ শোধ করিবার অভ্যাস নষ্ট হয়। ক্ষতি হয় কৃষির ও কৃষকের’ (‘চাষি ও ব্যাঙ্ক’, সম্পাদকীয়, ২০-৩) এই কথা স্টেট ব্যাঙ্কের প্রধান ‘ঠিক বলিয়াছেন’। কথাটি বিবেচনার দরকার। কারণ, পর ক্ষণেই বলা হয়েছে ‘তাহাতে রাজনৈতিক নেতাদের কানে জল ঢোকে নাই’। এই রাজনীতির কথা আলোচনাও করা হয়েছে। কিন্তু আলোচনায় দুটি প্রসঙ্গ আরও দরকার ছিল। প্রথমে দরকার, সাধারণ ভাবে সমস্ত ঋণের অবস্থা আলোচনা। এর পর দরকার, বিশেষ ভাবে ক্ষেত্রভিত্তিক আলোচনা। অর্থাৎ, কৃষির পাশাপাশি শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রে ঋণের অবস্থা। কারণ, ক্ষতি শুধু কৃষির হচ্ছে না। শুধু কৃষকেরও হচ্ছে না। অথচ ক্ষতির শিকার দেখা যাচ্ছে সেই কৃষকই।
১৯৬৯ সালে জাতীয়করণের পর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক শিল্প এই প্রথম ১৮,০০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে। ব্যাঙ্ক শিল্পে ইউনিয়নগুলির মঞ্চ দাবি করছে, এর কারণ, কর্পোরেট ক্ষেত্রে অনাদায়ী ঋণ। আরও অভিযোগ, এই কর্পোরেট পুঁজিপতিরা ইচ্ছাকৃত ভাবে ঋণ পরিশোধ করছে না, তাদের নামও ঘোষণা করা হচ্ছে না। এ বার ‘ঋণ পরিশোধ করিবার অভ্যাস’। সংবাদপত্রের পাতা খুললেই মাঝে মাঝে এখন চোখে পড়ছে খেলাপি ঋণগ্রহীতার ছবি। এই অভ্যাস কী ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে! সুতরাং, সোনার হাঁস ব্যাঙ্কগুলিকেও বাঁচাতে হবে। ভোটে জেতার জন্য চাষিদের বাঁচাতে কত কথা বলা হয়, এই ব্যাঙ্কগুলিকে বাঁচানোর জন্যও তেমন বলা দরকার।
শুধু কৃষি নয়, শিল্প ও পরিষেবাও আক্রান্ত। শিল্পমালিক যেমন কঠিন প্রতিযোগিতার মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছেন, তেমনই কৃষি-শিল্প-পরিষেবা ক্ষেত্রে শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষ সহ সব ধরনের কর্মচারীর জীবিকার সঙ্গে জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। তাই প্রথম বিবেচনা, শুধু কৃষিক্ষেত্র নয়, শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রেও ঋণ মকুব বন্ধ হোক। বরং বিশাল অনাদায়ী ঋণ আদায়ের প্রতি আরও জোরদার নজর দেওয়া হোক। নয়তো গোড়ায় গলদ থেকে যাবে আর অভ্যাসের পুনর্জাগরণ চলতেই থাকবে।
হাজার হাজার আত্মহত্যাকারী গরিব কৃষক বেঁচে থাকার মতো পরিবেশ পাবে না। আর কিছু মুষ্টিমেয় ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশ্বে ধনী ব্যক্তির শিরোপা পাবে— এই বিচার চেয়েছিলেন গাঁধী, রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, সুভাষ? তাঁরা তো স্বপ্ন দেখেছিলেন সক্ষম, স্বাবলম্বী হবে দেশের সমস্ত মানুষ, বিশেষ ভাবে দরিদ্র ভারতবাসী।
সম্পাদক সমালোচনায় লিখেছেন, ভর্তুকি আর সাহায্যের নামে রাজকোষ থেকে কোটি কোটি টাকা গুনাগার দেওয়া হচ্ছে। ঠিকই তো। অর্থের অপচয় হোক কেউ চাই না। প্রকৃত অভাবী মানুষের কাজে লাগুক অর্থ। দেশের সম্পদও যাতে বিকশিত হতে পারে, সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। এই জন্য অর্থনীতিতে চাষি বা শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী বা শ্রমজীবী, এমনকী ক্ষেত্রবিশেষে উদ্যোগপতি, যে-ই হোন, তিনি দুর্বল হলে দুর্বলতার কারণ বিচার-বিবেচনা করে তাকে সাহায্য সহযোগিতা করতেই হবে।
অর্থাৎ, কৃষক যদি সত্যিই নিজের শ্রমের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক হয়েও নিরুপায় হয়ে অভাবে আত্মহত্যা করতে যায় তাকে বাঁচাতেই হবে, তার ঋণশোধেরও ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সব ক্ষেত্রে নয়, সবার জন্যও এই সুযোগ দেওয়া যেতে পারে না। রাজনীতি নিশ্চয় সুবিচার করবে কে গরিব, কে-ই বা প্রকৃত চাষি। এই বিবেচনায় স্টেট ব্যাঙ্ক প্রধান ঠিক কথাই বলেছেন।
শুভ্রাংশুকুমার রায় চন্দননগর, হুগলি
দুরন্ত অসুবিধে
২৮ ডিসেম্বর হাওড়া থেকে যশোবন্তপুর এবং ৫ জানুয়ারি যশোবন্তপুর থেকে হাওড়া যাওয়া- আসা করলাম দুরন্ত এক্সপ্রেসে। দু’বারই আমাদের এস-১ কোচে টিকিট ছিল। যাওয়ার সময় প্রায় শুরু থেকেই কামরায় জল ছিল না। বাথরুমের নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই খারাপ যে, মেঝেগুলো উপচে গিয়ে থইথই করছিল— সেটা জল নয়, মানুষের বর্জ্য। শুরু থেকেই দেখলাম, একটা কমোড থইথই করছে। জল ও ময়লা কিছুই নামেনি। দুপুরে লাঞ্চে এল ফ্রিজের মতো ঠান্ডা খাবার। লোয়ার বার্থে ইঁদুর ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। মাঝে মাঝে এত জোর ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেন চলতে শুরু করছিল যে, পুরনো দিনের কয়লা ইঞ্জিনের গাড়ির যাত্রার কথা মনে আসছিল। আর নিরাপত্তা? শুরু থেকে শেষ অবধি ট্রেনে এক জনও আরপিএফ চোখে পড়েনি।
স্বপন দত্ত রানিরবাগান, বর্ধমান
নিষিদ্ধ হোক
সাধারণ মানুষের অসুবিধে করে ট্রেনে বা যে কোনও জনস্থানে তাস খেলা নিষিদ্ধ হোক। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন রেল কর্তৃপক্ষ ও জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
গৈরিক পত্রনবীশ রাজপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
নিচু প্ল্যাটফর্ম
সম্প্রতি হালিসহরে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলাম। যাতায়াত করলাম, কল্যাণী সীমান্ত লোকালে। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে রীতিমত শরীরে জোর লাগল। ফেরার সময়ে বিধাননগর স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এতটা নিচু যে, ঝুলতে হল। আমি এক জন সিনিয়র সিটিজেন, উচ্চতা পাঁচ ফুট, আর্থারাইটিস সঙ্গী। আমার স্বামীর পাঁচ ফুট এগারো ইঞ্চি উচ্চতা, দুজনের কেউ মসৃণ ভাবে ওঠা-নামা করতে পারলাম না। সারা জীবন জুড়েই তো লোকাল (তারকেশ্বর), দূরপাল্লা, মেট্রো, চক্র রেলে উঠেছি, কোথাও এত বিব্রত হতে হয়নি।
সুমিতা বসু কলকাতা–১০১
আজও হয়নি
স্টেশনের নাম কাঁসাই হল্ট (মেদিনীপুরের ঠিক আগে)। সব ইএমইউ লোকাল দাঁড়ায়। এক দিকে একটি কামরার মাপে প্ল্যাটফর্ম, অন্য দিকে তাও নেই। এক মানুষ সমান পাদানি দিয়ে বিপজ্জনক ভাবে নামা-ওঠা করেন অসংখ্য গ্রামের মানুষ। রয়েছে স্কুল পড়ুয়া থেকে বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষ। দীর্ঘ দিনের দাবি, একফালি প্ল্যাটফর্ম, যা আজও হয়নি।
সুদর্শন নন্দী রাঙামাটি, মেদিনীপুর
‘নীচ’ নয়
‘মনুষ্যেতর প্রাণী’ বলতে বোঝায়, মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণী (‘মনুষ্যেতর কেন’, সম্পাদক সমীপেষু, ২৬-৩)। ‘নীচ’ ছাড়াও ‘ইতর’ শব্দের মানে ‘অন্য’ বা ‘অপর’। অন্য প্রাণীরা মানুষ থেকে যে পৃথক অর্থাৎ ‘অপর’, সেটা স্বতঃসিদ্ধ। তবে অবশ্যই ‘নীচ’ নয়। উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ মনুষ্য-মস্তিষ্কের এক অনবদ্য সৃষ্টি।
সৈকত রুদ্র কলকাতা-১১০
ভ্রম সংশোধন
সোমবার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘মোদীর মুখে জয় বাংলা’ শীর্ষক খবরে সেনাপ্রধানের নাম হরিশ রাওয়ত লেখা হয়েছে। সেটি বিপিন রাওয়ত হবে।
মঙ্গলবার প্রথম পাতায় ‘গায়কোয়াড় নিয়ে নরম সুর কেন্দ্রের’ এবং ছয়ের পাতায় ‘উদ্ধবের সমর্থন চাইছেন মোদী’ শীর্ষক খবরে বিমানমন্ত্রীর নাম অশোক গণপতি রাজু লেখা হয়েছে। সেটি অশোক গজপতি রাজু হবে।
কলকাতার কড়চা-য় (২৭-৩) ‘সম্মাননা’ শীর্ষক খবরে লেখা হয়েছে, ‘সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় নাতি সুধীরেন্দ্রনাথ ও পূর্ণিমার বড় মেয়ে সুপূর্ণা।’ সুধীরেন্দ্রনাথ নয়, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় নাতি সুবীরেন্দ্রনাথ। ‘ছোটদের জন্য’ শীর্ষক খবরে যে পত্রিকার কথা বলা হয়েছে, তার নাম ‘হুল্লোর’ নয়, ‘হুল্লোড়’।
অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in