সম্পাদক সমীপেষু

এই বছর, অর্থাৎ ২০১৭ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বালি দ্বীপে নাবালিকা বিবাহ প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুটি আলোচনা সভা হয়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share:

নাবালিকা বিবাহ

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্যের (‘নাবালিকা বিয়ে রুখতে...’, ৪-৭) প্রতিবেদনটি পড়ে ভাল লাগল। এই প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এই প্রসঙ্গে সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের বালি দ্বীপে অবস্থিত আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নেওয়া কয়েকটি উদ্যোগ তুলে ধরছি।

২০১১ সালে বালি দ্বীপের স্থানীয় মহিলা ও পুরুষদের নিয়ে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি হয়, যার মূল লক্ষ্য লিঙ্গবৈষম্য বিষয়ক আলোচনা, নাবালিকা বিবাহ প্রতিরোধ এবং পারিবারিক নির্যাতনের শিকার মেয়েদের পাশে দাঁড়ানো। ২০১২ সালে এই এলাকায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ধারাবাহিক প্রচারকাজের সূচনা হয়। দ্বীপের বিভিন্ন গ্রামে একাধিক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথ ভাবে। এই বিষয়ে সহজ বাংলায় পাওয়ারপয়েন্ট তৈরি করে দেয় তারা। তার সাহায্যে অনেক দিন ধরেই আমরা প্রচার চালাচ্ছি।

Advertisement

এই বছর, অর্থাৎ ২০১৭ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বালি দ্বীপে নাবালিকা বিবাহ প্রতিরোধের লক্ষ্যে দুটি আলোচনা সভা হয়। প্রথমটিতে স্থানীয় পুরোহিত, ডেকরেটার, কেটারার, নাপিত এবং যাঁরা বিভিন্ন ভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানের সঙ্গে পেশাগত ভাবে যুক্ত থাকেন, তাঁরা ছাড়াও এলাকার বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও সংঘের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় উপস্থিত কয়েক জন পুরোহিত অতীতের দু’একটি উদাহরণ দিয়ে জানান যে, অনেক সময় তাঁরা কোনও নাবালিকার বিয়ের পৌরোহিত্য করতে অস্বীকার করার পর সেখানে অন্য কোনও পুরোহিত এসে বিয়ে দিয়েছেন। ফলে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্যের অভাব কী ভাবে সামাজিক বাধা হয়ে দাঁড়ায়, সেটা নিয়েও আলোচনা হল। এক জন ডেকরেটর ওই সভায় দৃঢ়তার সঙ্গে জানালেন যে, এ বার থেকে কোনও বিয়েবাড়ির বায়না এলে, সেটি যে নাবালিকা বিবাহ নয়— সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তবেই তাঁরা সেখানে মাইক ভাড়া দেবেন। এ ভাবে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়, সচেতনতা প্রসারের কাজকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায় বলেই আমাদের বিশ্বাস।

দ্বিতীয় আলোচনাসভাটি স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। আলোচনার শেষে ক্লাবের অনেকেই জানান যে এই অঞ্চলে ২০১২ সালের তুলনায় নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কম এবং ক্রমাগত প্রচারের ফলেই তা সম্ভব হয়েছে। ক্লাবের কয়েক জন সদস্য নিজেরাও সচেতনতামূলক প্রচারে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু এখানে একটা কথা বলা দরকার। এই উদ্যোগ চালিয়ে নিয়ে যেতে গেলে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করি, ভবিষ্যতে আমরা পূর্বস্থলীর মতোই পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের সক্রিয় সহযোগিতা পাব।

তাপসী মণ্ডল গোসাবা

জেলায় শিক্ষা

বর্ধমানের জেলাশাসক যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তা অভিনব ও চমকপ্রদ (‘বিদ্যালয়ের দায়িত্ব’, সম্পাদকীয়, ১৫-৭)। নিয়মিত পাঠদান, পরিকল্পনা রূপায়ণ, পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রভৃতি কাজের দায়িত্ব সামলাবেন ভারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীরা। পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া যে সমস্ত জেলায় স্কুল শিক্ষার পাঠদান, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের যোগ্যতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রশ্ন উঠছে, তাদেরও এই বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। তাতে স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমবে, সরকার নিযুক্ত এই ‘অভিভাবক’দের তত্ত্বাবধানে পড়াশুনোর মানও বাড়বে। অপর দিকে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এঁদের উপস্থিতিতে, যেখানে শিক্ষকদের প্রশাসনিক এত কাজকর্ম সামলানো বাস্তবিকই কঠিন। কিন্তু শুধু বর্ধমান জেলা কেন? সব জেলাতেই এই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকদের কাছে আবেদন জানাই।

আবু তাহের ভগবানগোলা, মুর্শিদাবাদ

মাছ-ডিম নেই

মিড ডে মিল সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বেশ কিছু তথ্য অসম্পূর্ণ ও অসত্য প্রকাশিত হয়েছে (‘স্কুলে কবে কী খাবার...’, ৩-৭)। প্রথমত, মিড ডে মিল রান্নার জন্য খরচের পরিমাণ বা হিসাব সম্পর্কিত কোনও তথ্য পরিবেশন করা হয়নি। মিড ডে মিল রান্নার জন্য বরাদ্দ, আহার গ্রহণকারী উপস্থিত ছাত্রছাত্রী প্রতি ৪ টাকা ১৩ পয়সা। অর্থাৎ, বিদ্যালয়ে ৫০ জন ছাত্রছাত্রী উপস্থিত থাকলে সেই দিন রান্নার জন্য বরাদ্দ হবে মোট ২২৭ টাকা। এই স্বল্প পরিমাণ টাকাতে ভাত-ডাল-সবজির (ইচ্ছা থাকলেও) রান্না উন্নত মানের করা সম্ভব নয়। মাছ-ডিমের প্রসঙ্গ আনাটা হাস্যকর। দ্বিতীয়ত, প্রতিবেদকের কথা অনুযায়ী ‘২০০৯ শিক্ষার অধিকার আইন’ অনুযায়ী মিড-ডে মিলে নাকি মাছ-ডিম দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রতি বিদ্যালয়ে আরটিই অ্যাক্ট বইটি পুস্তিকা হিসাবে দেওয়া হয়েছে, সেখানে এমন তথ্য পেলাম না। মিড ডে মিল সম্পর্কিত তথ্য পুস্তিকাতেও (মিড-ডে মিল প্রকল্পের রূপরেখা, প ব সরকার, বি শি দফতর) ‘মিল’ হিসাবে যে তালিকা আছে তা হল— জন প্রতি চাল ১০০ গ্রাম, ডাল ২০ গ্রাম, সবজি ৫০ গ্রাম, তেল ও ঘি ৫ গ্রাম। অর্থাৎ, মাছ-ডিমের কোনও উল্লেখ নেই। তৃতীয়ত, মিড-ডে মিলের হিসাব (ছাত্রসংখ্যা) প্রতি দিন মোবাইল মেসেজ-এর মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়। এই তথ্যটিও প্রতিবেদনে নেই।

মিন্টু দত্ত লোকপুর

ঘনাদার ছবি

চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী লিখেছেন, ঘনাদার প্রচলিত আদলটি শিল্পী শৈল চক্রবর্তীর সৃষ্টি (‘কল্পনা যেন...’, পত্রিকা, ৮-)। এ-কথা মানা কঠিন। সিরিজের প্রথম গল্প ‘মশা’ (১৯৪৫) থেকে প্রতুলচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এক বয়স্ক ঘনশ্যাম দাসকে আঁকেন। ‘ঘনাদার গল্প’ (১৯৫৬) গ্রন্থে সেই ধাঁচ সম্পূর্ণ বদলে দেন অজিত গুপ্ত। তাঁর প্রতিকৃতিকেই প্রেমেন্দ্র মিত্র এবং অধিকাংশ পাঠক যথার্থ ঘনাদা বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন। শৈল চক্রবর্তী সম্ভবত দুটি মাত্র ঘনা-কাহিনি চিত্রিত করেন‘ঘড়ি’ (১৯৪৮) ও ‘ঘনাদার ধনুর্ভঙ্গ’ (১৯৭০)। অলংকরণ অসাধারণ। কিন্তু তাঁর গুম্ফহীন স্মার্ট যুবক ঘনাদার চেহারা কি আদর্শ বলে গৃহীত হয়েছিল? এখনও কিসেই পোর্ট্রেটই চলে আসছে? সম্ভবত না। ‘ঘনাদা গ্যালারি’ ওয়েবসাইটে মিলবে ‘ঘড়ি’ গল্পের ছবিগুচ্ছ: “http://ghanada.wixsite.com/ghanada-gallery/short-stories-from-the”1940s

সৌরভ দত্ত কলকাতা-১৯

মাঠের মাছ

এখন আর মাঠে মাছ জন্মায় না। বিল, পুকুর সব মেশিন দিয়ে সেচা হয়। দু’চারটে বড় পুকুর থেকে ভারী বর্ষায় ডিমভর্তি মৌরলা, পুঁটি, কই, মাগুর, শোল, শিঙি বেরনোর সময় একপ্রস্থ ধরা হয়। যেগুলো ফাঁক গলে মাঠে বেরিয়ে যেতে পারে, রড, বর্শা, ফেকা-জাল দিয়ে তাদের সিংহভাগকে নিধন করা হয়। চারা ছাড়ার পরে বাঁকী, ঘুনিতে মা ও চারা ধরা পড়ে। বাকিরা জমির রাসায়নিক সার ও কীটনাশকে মারা পড়ে। ঠাকুরদা বলতেন, এক সময় মাঠে বড় বড় বাগদা, পারশে, ভেটকি মিলত! আমরা বিশ্বাস করিনি। পরবর্তী প্রজন্মও করবে না।

প্রণবকুমার মাটিয়া পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

ভ্রম সংশোধন

‘‘নব রূপে ‘রক্তকরবী’’’ (আনন্দ প্লাস, ২০-৭) প্রতিবেদনে পরিচালক অমিতাভ ভট্টাচার্যের ছবি ‘রক্তকরবী’-র মুক্তির তারিখ লেখা হয়েছে ২১ জুলাই। হবে ২৮ জুলাই। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন