Covid 19

প্রথম বিদেশ সফর এত ভয়াবহ হবে, স্বপ্নেও ভাবিনি

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২০ ১৫:৫০
Share:

ইংল্যান্ডে রাস্তা একদম ফাঁকা। —নিজস্ব চিত্র।

আমি দেবলীনা চট্টোপাধ্যায়, বয়স ২৫। পূর্ব বর্ধমান জেলার গোস্বামী খন্ড গ্রামে আমার বাড়ি। ২০২০ সাল থেকে আমি বিবাহ সূত্রে কলকাতার বাসিন্দা। আমার স্বামী আইটি কোম্পানিতে কর্মরত । আমরা বর্তমানে ইংল্যান্ডে আছি। স্বামীর চাকরির সুবাদে আমার প্রথম বিদেশে আসা।

Advertisement

গত ১ মার্চ আমরা ইংল্যান্ডে এসেছি। মিলটন কিনস নামে একটি শহরে আমরা আছি। পরিবারের সবাই খুব খুশি ছিল আমি বিদেশে আসায়। এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই আনন্দ ভয়ে পরিণত হয়েছে।

মার্চের প্রথম দিকে সবই স্বাভাবিক ছিল। আমার স্বামী অফিসেও যাচ্ছিল। আমরা প্রথম উইকএন্ডে মিলটন কিনসে ঘুরেওছি। এখানকার শপিং মলেও গিয়েছিলাম। তারপর ১৩ মার্চ থেকে স্বামীর অফিস বন্ধ। ওয়ার্ক ফ্রম হোম চালু হল। আমরা তার আগে থেকেই কোভিড-১৯ প্রভাবে ইটালির ভয়াবহ পরিস্থিতি শুনেছিলাম।

Advertisement

স্বামীর সঙ্গে শেষ বার বাইরে গিয়েছি ২০ মার্চ। সেদিন আমরা দুটো সুপার মার্কেট ঘুরে বেশ কিছু খাবার নিয়ে এসে মজুত করেছিলাম। যাতে আর বাইরে বার হতে না হয়। তবে তখন থেকেই ভারতীয় খাবারের ঘাটতি পড়েছে এখানে। ২৩ মার্চ থেকে লকডাউন চলছে এখানেও।

আরও পড়ুন: লকডাউন নিউজিল্যান্ডেও, তবে করোনা যেন থমকেছে স্পেস বাবল-এর কাছে​

আরও পড়ুন: প্লিজ কিছু করুন! লকডাউন বেড়ে যাওয়ার পর নতুন করে মরিয়া আকুতি আটকে পড়াদের​

এই পরিস্থিতির জন্য আমাদের বাড়ি ভাড়া পেতেও খুব সমস্যা হয়েছে। পুরো মার্চ মাস আমরা ‘সার্ভিসেড অ্যাপার্টমেন্ট’-এ ছিলাম। এই লকডাউন পরিস্থিতিতেও আমাদের বার বার ঘর পালটে পালটে থাকতে হয়েছে। যা ছিল আরও ভয়ের ব্যাপার। ৬ এপ্রিল আমরা ভাড়া বাড়িতে এসেছি। এখন প্রতিটা দিন ভয় আর উৎকন্ঠায় কাটছে। নিজেদের দেশ, বাড়ি— সব ছেড়ে এত দূরে বিদেশে আছি বলে পরিবারের সবাই ভীষণ চিন্তায় আছে।

গোটা পৃথিবীই আজ অশান্ত। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে জানি না। কবে আবার নিজের দেশে নিজেদের কাছের মানুষের কাছে ফিরতে পারব কিছুই জানি না।

আমাদের খাবারের স্টকও ফুরিয়ে এসেছে। গত কয়েক দিন ধরে আমরা শুধু ডাল আর ভাত খাচ্ছি। আলুও শেষ। সবজিপাতি অনেক দিনই ফুরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু বাজার যেতে হবে ভাবলেই ভয় করছে। এখন বাজারে খাবার পাব কি না, তাও জানি না।

আমার প্রথম বিদেশ আসার অভিজ্ঞতা যে এত ভয়াবহ হবে স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। তবু তারই মধ্যে ভগবানের উপর ভরসা করে মনের জোর নিয়ে আছি। সব আবার শান্ত হবে এই আশা রাখছি।

দেবলীনা চট্টোপাধ্যায়, ইংল্যান্ড

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন