Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: শৈশবের সঙ্গী

আমরা নিজেদের অসুস্থতার সম্ভাবনা বাড়াচ্ছি না তো?

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২০ ০০:৫০
Share:

‘প্রয়াত অ্যাসটেরিক্সের চিত্রশিল্পী ইউদেরজ়ো’ (২৫-৩) নিবন্ধ প্রসঙ্গে এই লেখা। তুখড় কার্টুনিস্ট ইউদেরজ়ো ছিলেন বর্ণান্ধ, আর জন্মের পর দুই হাতেই তাঁর ছ’টি করে আঙুল ছিল, যা পরে অপারেশন করে বাদ দেওয়া হয়। তাই ইউদেরজ়োর আঁকার সময়ে তুলি/কলম ধরার গ্রিপ ছিল অন্য রকম।

Advertisement

১৯৫৮ সালে গোসিনির সঙ্গে ইউদেরজ়োর সৃষ্টি রেড ইন্ডিয়ান উম পা পা-র অভিযান শুরু হলেও, আসলে তাঁদের যুগ্ম সৃষ্টি অ্যাসটেরিক্সের অ্যাডভেঞ্চারের (ছবিতে) জন্যই তাঁরা জগদ্বিখ্যাত।

চিত্রশিল্পী-লেখক উইল আইসনার-এর নামে আইসনার পুরস্কারকে কমিকস জগতে বলা হয় অস্কার পুরস্কারের সমতুল্য। সেই আইসনার পুরস্কারে হল অব ফেম-এ স্থান পাওয়া বা ফরাসি লিজিয়ঁ দ্য’নর পাওয়া ইউদেরজ়ো ২০১১ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

Advertisement

ইউদেরজ়োর মৃত্যুতে আমার মতো অনেকেরই একখণ্ড ছোটবেলা মুহূর্তে উধাও হয়ে গেল!

শঙ্খশুভ্র চট্টোপাধ্যায়

ঢাকুরিয়া

বাজারে ভিড়

লকডাউন চলছে। কিন্তু সকালে শিবপুর বাজারে অনাজ কিনতে গিয়ে এত বেশি লোকের জমায়েত দেখে চমকে যাই। সকলেই ঘেঁষাঘেষি দাঁড়িয়ে উদ্বেগের সঙ্গে বাজার করছে। উদ্বেগ হল সামগ্রী না পাওয়ার, আচমকা দাম বেড়ে যাওয়ার, ইত্যাদি। কিন্তু আসল উদ্বেগ যা নিয়ে হওয়া উচিত: আমরা যে ভিড় করছি, পরস্পরের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখছি না, তাতে সরকারের মহতী উদ্যোগ মাঠে মারা যাবে না তো? আমরা নিজেদের অসুস্থতার সম্ভাবনা বাড়াচ্ছি না তো?

বাড়ি ফিরে টিভি দেখে আরও শিউরে উঠলাম। সারা পশ্চিমবঙ্গেই একই দৃশ্য। ঠাসা ভিড় সব বাজারেই। নির্দেশ মেনে সারা দিন ঘরে বসে থাকলাম, অথচ আনাজের বাজারে গিয়ে জমায়েত করে নিজেদের সমস্ত বোধবুদ্ধি বিসর্জন দিলাম, এটা কোনও কাজের কথা নয়।

প্রতিটি এলাকার স্থানীয় নির্বাচিত রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের কিছুটা দায়িত্ব নেওয়া প্রয়োজন। শুধু ঘরে বসে না থেকে, পথে নেমে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা উচিত। ভোটের আগে তাঁদের মধ্যে যে উদ্যোগ দেখা যায়, তার কিছুটাও যদি এই সঙ্কটের সময় তাঁরা প্রদর্শন করেন, তা হলে সমাজ, রাজ্য, দেশের মঙ্গল।

শান্তনু ঘোষ

শিবপুর, হাওড়া

আর ওঁরা?

২৩-৩ তারিখে বিকেল চারটের সময়ে পরিচিত এক রিকশাচালক (যাঁর রিকশায় আমি জিনিস কিনে ফিরছিলাম) বললেন, আপনারা ২০ কিলো চাল, ৫ কিলো ডাল, ১ ক্রেট (৩০টা) ডিম, ৫ কিলো আলু, গোটা মুরগি, তার সঙ্গে পেঁয়াজ, রসুন, আদা কিনে বাড়ি যাচ্ছেন, আর কাল রিকশা চালাতে না পারলে আমরা খেতে পারব না।

ঠিকই, যাঁদের প্রতি দিন কাজ না করলে কোনও রোজগার হয় না, তাঁরা খাবেন কী করে? পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে অনাহারে মৃত্যু এতই সাধারণ ব্যাপার যে কেউ ধর্তব্যের মধ্যেই আনে না। আমাদের দেশে ২৭ হাজার লোক অনাহারে মরলেও সেটা বিরাট কোনও খবর নয়, কিন্তু ২৭ জন করোনাভাইরাসে মারা গেলে সেটা রাষ্ট্রীয় খবর।

নিশ্চয়ই তাঁদের জন্য বহু সরকারি বন্দোবস্ত করা হচ্ছে, আশা করা যায় তা যথেষ্ট পরিমাণে করা হবে।

চিন্ময় সমাদ্দার

কলকাতা-৬০

দেখলে গুলি!

লকডাউন অমান্য করলে দেখা মাত্র গুলি, বলছেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ভয়াবহতা এবং সমস্যার গভীরতা উপলব্ধি করেই তিনি এ কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি কি বাস্তবতার মাটিতে দাঁড়িয়ে এ কথা বলছেন? এ ভাবে কি গুলি চালিয়ে কাউকে মেরে ফেলা বা আজীবন পঙ্গু করে দেওয়া যায়?

অধিকাংশ মানুষ রাস্তায় বেরোচ্ছেন পেটের দায়ে। যদি এ ভাবে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না হলেও, গুলিতে কিংবা অনাহারে বা বিনা চিকিৎসায় অনেকেই মারা যাবেন। বেশি সমস্যা হবে তাঁদের, যাঁরা দিন আনেন দিন খান। তাঁদের মজুত করার ক্ষমতাও নেই। এই সময়সীমায় সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি বাড়ি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর জোগান দিয়ে, চিকিৎসার সুযোগ দিয়ে, তার পর এ কথা বললে, তার একটা মানে থাকে।

গুলি চালানোর সময়, লকডাউন অমান্যকারীদের সঙ্গে, প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বোরোনো মানুষ, বা চিকিৎসার প্রয়োজনে বেরোনো মানুষদের আলাদা করবেন কী করে ?

গৌরীশঙ্কর দাস

সাধারণ সম্পাদক, ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ইউনিটি ফোরাম, পশ্চিমবঙ্গ

করোনা-উত্তর

করোনা-উত্তর পৃথিবী সম্পূর্ণ অন্য রকম হবে। এমআইটি-র টেকনোলজি রিভিউ এডিটর গিডিয়ন লিখফিল্ড তাঁর ‘উই আর নট গোয়িং ব্যাক টু নরমাল’ নিবন্ধে জানাচ্ছেন, করোনার প্রভাব বিশেষ করে পরিলক্ষিত হবে রেস্তরাঁ, বার, জিম, সিনেমা, বিমান পরিবহনে।

জিম অনলাইন ট্রেনিং সেশন চালাবে। রেস্তরাঁ পর্যবসিত হবে ডেলিভারি কিচেনে। ই-কমার্স সংস্থার রমরমা হবে। বিমানের টিকিট কাটার আগে, আপনাকে কোনও ট্র্যাকিং সংস্থার কাছে নথিভুক্ত হতে হবে— আপনার পূর্ববর্তী সব অসুখের রেকর্ড সহ। শরীরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র রাখা থাকবে সর্বত্র । চাকরিতে আপনার নিয়োগকর্তা আপনার টিকাকরণের বা কোনও সংক্রামক অসুখ থেকে সুস্থ হওয়ার শংসাপত্র ছাড়া আপনাকে কাজে যোগ দিতে দেবেন না।

এ সবের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে অবশ্যই সমাজের দরিদ্র মানুষদের উপর, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসকারী বিপুল জনতার উপর, যাঁদের স্বাস্থ্য খাতে খরচের ক্ষমতা কম। করোনা-পরবর্তী ভারতবর্ষে সরকার এঁদের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করলে, মানবসম্পদের যে বিরাট ক্ষতিসাধন হবে, তা এই দেশকে আরও অনেকটা পিছিয়ে দেবে।

শুভেন্দু দত্ত

কলকাতা-১০১

পুলিশের আচরণ

রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার পর প্রথম দিনেই (২৪ মার্চ) সারা দিন ধরে ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের লাঠি-চালনার ছবি ভেসে বেড়াল। পুলিশ বাইকের পেছনে ছুটে আরোহী ও সহযাত্রীকে মেরেছে। রাস্তায় লোকজনকেও মেরেছে। টোটোর হেডলাইট পুলিশের লাঠিতে চুরমার হয়েছে। দোকানের কাচ ভাঙা পড়েছে। ছোট মাছবিক্রেতার সব মাছ ফেলে দেওয়া হয়েছে রাস্তায়।

এগুলো কি সভ্য সমাজের একটি প্রশিক্ষিত শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীর আচরণ হবার কথা? যে দেশে শিক্ষা ও নাগরিক সচেতনতার হার খুব কম, সেখানে সরকারি নির্দেশ অমান্য করার ঘটনা প্রাথমিক ভাবে কিছু তো ঘটবেই। লকডাউনের অভিজ্ঞতাটাও তো একেবারে নতুন!

নাগরিকদের জিজ্ঞাসাবাদ না করে, সতর্ক না করে, জরিমানা না করে, একেবারে মার? মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে, পুলিশের কি আর একটু মানবিক হওয়ার প্রয়োজন ছিল না?

সুগত চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা-৫৬

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement