সম্পাদক সমীপেষু: জলের সঙ্কট

Advertisement
শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ০০:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

জলসঙ্কটে জেরবার বিশ্ব। বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি: জলের জন্য বিশ্বযুদ্ধ বাধবে। এ সবের মধ্যে আরও একটি ২২ মার্চ চলে গেল। ২২ মার্চ বিশ্ব জলদিবস। আমজনতার মধ্যে জলের সদ্ব্যবহার ও সংরক্ষণ ব্যবস্থার চেতনা যথাযথ ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রতি বছর দিনটিকে উদ্‌যাপন করে।

Advertisement

পৃথিবীর তিন ভাগ জল এবং এক ভাগ স্থল। এত জল থাকা সত্ত্বেও মানুষ জল-সমস্যায় ভুগছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাটির উপরের জলপ্রবাহের হার কমে যাওয়া, যথেচ্ছ ও অপরিকল্পিত ভাবে ভূগর্ভের জলের উত্তোলন, মিষ্টিজল দেদার অপচয়— জলসঙ্কটের মূল কারণ। আজ মিষ্টি জলের ভাণ্ডার বাড়ন্ত।

ভারতের পঞ্চম ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প শুমারি বিশেষ রিপোর্ট ২০১৭-র নভেম্বরে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০০৬-২০০৭ থেকে ২০১৩-১৪— এই সাত বছরে গোটা দেশে ভূপৃষ্ঠস্থ জলপ্রবাহের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের সংখ্যা ৬,০১০০০ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫,৯২০০০-এ। যার প্রভাব দেশের ৪.৮৯ মিলিয়ন হেক্টর কৃষিযোগ্য জমিতে পড়েছে। ভূপৃষ্ঠের জল কমা মানে মাটির নীচের জলের উপর নির্ভরশীলতা বাড়া। তাই মাটির নীচে থাকা জলস্তরে টান পড়বেই।

Advertisement

২০১৮ নাসার উপগ্রহ-চিত্রে ধরা পড়েছে, বিশ্বের ৫ লক্ষ জলাধারের জলস্তর হুহু করে নামছে। জলের ব্যবহার ও অপচয় বাড়তে থাকায় এই মারাত্মক পরিণতি। তার জেরে টান পড়ছে মাটির নীচে জলভাণ্ডারে। ভারত, মরক্কো, ইরান, স্পেন-এ মারাত্মক জলসঙ্কট ঘনিয়ে আসছে।

জলের অপচয় জলসঙ্কটের অন্য কারণ। গ্রামাঞ্চলে কৃষিক্ষেত্রে পাম্প দিয়ে অনর্গল জল পড়ছে, শহরে জলকল খোলা থাকাটা নিত্য ছবি। কিন্তু জলাধারে লিকেজ, পাইপ লাইন লিকেজ হয়ে জল নষ্ট হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা অনেকেরই জানা নেই।

আড়াই বছর আগে ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন ‘পেরি আরবান ওয়াটার জাস্টিস’ এই বিষয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছিল পৃথিবীর তিনটি শহরকে নিয়ে। যার মধ্যে কলকাতাও ছিল। গবেষণায় জানা গিয়েছে, পাইপলাইন লিকেজের কারণে পাম্পিং স্টেশন থেকে রিসিভিং এন্ড-এ পৌঁছনোর পথে প্রতি দিন এই শহরে মোট জল সরবরাহের ৩০-৩৫ শতাংশ নষ্ট হয়। পরিমাণগত ভাবে প্রায় ২৭৪ মিলিয়ন লিটার। ভারতের ৩,১১৯টি ছোটবড় শহরের উঁচু-উঁচু ফ্ল্যাটের দ্বারা যথেচ্ছ ভাবে মাটির নীচের জল তোলাও মাটির নীচের জলস্তর কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ, সে কথা মনে করেন অনেকে।

সেই সঙ্গে অতিরিক্ত জল তোলার ফলে আর্সেনিক দূষণ হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। শুধু জল পাওয়া গেলে চলবে না, জল পরিস্রুত দূষণমূক্ত হওয়া দরকার। রাষ্ট্রপুঞ্জ বলছে, এই দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত। বিশুদ্ধ জল পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। সমাজের সকল অংশের মানুষ যাতে পরিস্রুত জল পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।

তাই এই বছর জলদিবসের ভাবনা ‘লিভিং নো ওয়ান বিহাইন্ড’ অর্থাৎ সমাজের দারিদ্র শোষিত, প্রান্তিক মানুষ যেন বিশুদ্ধ জল থেকে বঞ্চিত না হন। থার্ড ওয়ার্ল্ড সেন্টার ফর ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট বলছে, ফুটপাতবাসী, বস্তিবাসীরা অবস্থাপন্ন, ধনী মানুষের তুলনায় কম জল পান। এই বৈষম্য ঘোচাতে হবে।

সঙ্গে করণীয়: ১) কৃষিক্ষেত্রে জল অপচয় বন্ধ করতে হবে।

২) জলাভূমি, জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে। ৩) বৃষ্টির জল সংগ্রহ করে তা ব্যবহার করতে হবে। ৪) প্রাত্যহিক জীবনে জল অপচয় ও পাইপ লাইনে জল সরবরাহের সময় অপচয় রুখতে হবে।

অনুভব বেরা

জাহালদা, পশ্চিম মেদিনীপুর

নোংরা জল

সম্প্রতি উত্তরপাড়া পুরসভার অধীনস্থ মাখলায় বাসিন্দাদের বাড়ির পুরকর ১০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এই বৃদ্ধি নাকি রাজ্য মূল্যায়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। যার ত্রৈমাসিক ট্যাক্স ছিল ৯০ টাকা, বেড়ে হয়েছে ২৯০ টাকারও বেশি। অথচ পরিষেবায় কোনও উন্নতি হয়নি। মাখলার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে সম্প্রতি কেন্দ্রের আম্রুত প্রকল্পের টাকায় নর্দমায় (হাইড্রেনে) পাইপ বসানো হয়েছে। কয়েক দিন আগের দুই-তিন দিনের বৃষ্টিতেই হাইড্রেন সংলগ্ন পুরনো বাড়িগুলোর নর্দমা দিয়ে হাইড্রেনের নোংরা জল ঢুকে যাচ্ছে। সমস্ত বাড়ি নোংরা জলে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির পরেও জল নামছে না।

বাড়ির নর্দমা যেখানে হাইড্রেনে পড়েছে, সেখানে একটি ঢাকা বাক্স বসানো হয়েছে, যেটি যে কোনও বৃষ্টির পরেই পাম্প দিয়ে পরিষ্কার করার কথা। কিন্তু তা কোনও সময়েই হয় না। খোলা নর্দমা থাকার সময় এই নোংরা জলের সমস্যা ছিল না।

এই ব্যাপারে এলাকার কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে লাভ হয়নি। তিনি জবাব দেন, উনি একমাত্র ওঁর ইঞ্জিনিয়ারদের কথা শুনবেন। আরও বলেন, এগুলো নাকি রটনা, এ রকম কিছুই নাকি হয়নি।

এ দিকে হাইড্রেনের জল নিয়ে ফেলা হয়েছে এমন একটি জায়গায় যেটি ক্রমশ বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে, ফলে নোংরা জল পিছনে ধাক্কা মেরে আবার কলোনির মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে। রিলিফ দফতরের মূল নকশা অনুযায়ী এই জল ফেলার কথা অধুনা বন্ধ দীপক সিনেমার পাশ দিয়ে নিয়ে গঙ্গার খালে, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে।

শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

মাখলা, হুগলি

নিকাশি, কাদা

দুর্ভাগ্যবশত আমরা, অর্থাৎ আমার ও গোটা কুড়ি পরিবার, যাঁরা বনহুগলি ১ পঞ্চায়েতের রামচন্দ্রপুরের (উত্তর) পুরকাইত পাড়ায় বাস করি, তাঁদের কাছে উন্নয়নের ছোঁয়া এসে পৌঁছয়নি। গত ২৮ বছর ধরে এখানে বাস। বাড়ির সামনে কাঁচা রাস্তা, এত দিন পর্যন্ত জল নিকাশির ব্যবস্থা ছিল না। মাস ছয়েক হল রাস্তায় নিকাশির জন্য পাইপ বসানো হয়েছে, কিন্তু সেই পাইপের সঙ্গে বাড়িগুলির নিকাশির সংযোগ স্থাপন করা হয়নি।

আর রাস্তার হাল? পাইপ বসানোর সময় খুঁড়াখুঁড়ির ফলে রাস্তাটি এমন হয়ে গিয়েছে, হেঁটে চলাও দুষ্কর। ক’দিন আগের বৃষ্টিতে এমন কর্দমাক্ত হয়েছিল, কারও পক্ষে বাড়ির বাইরে পা রাখা যাচ্ছিল না। ওই কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স আসা সম্ভব নয়। তেমনই অসম্ভব কোনও অসুস্থ ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া।

সঞ্জিত ঘটক

কলকাতা-১০৩

শব্দ দূষণ

গড়িয়া মোড় থেকে নরেন্দ্রপুর যাওয়ার রাস্তায়, হিন্দুস্থান মোড় থেকে এগোলে ডান দিকে একটি কারখানা আছে। ওখানে অসম্ভব তীব্র শব্দ হয়। মনে হয় এক বা দু’টি বিশাল মেশিন কাজ করে। রবিবার বাদে প্রতি দিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা, সাড়ে ১০টা থেকে ১২টা, দুপুর ২টো থেকে সন্ধে ৬টা আর সাড়ে ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তীব্র শব্দ হয়। এত ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চলে দিনের পর দিন কী ভাবে এত ক্ষতিকর শব্দ হয় বুঝি না। আশেপাশে বসবাস করা শিশু, রোগী, বৃদ্ধ ও ছাত্রছাত্রীদের অবস্থা খুবই খারাপ।

আমরা এই অঞ্চলের মানুষ ওই কারখানা কর্তৃপক্ষকে, বহু সাধারণ মানুষের স্বার্থে, ওই তীব্র শব্দ হ্রাস বা বন্ধ করার আবেদন জানাচ্ছি। পাশাপাশি দূষণ বা শব্দ-দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কর্তৃপক্ষ আছেন, তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অমৃতকুমার দাস

গড়িয়া

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন