‘ভোট-ব্যানারেও থাকবে সুচিত্রা সেনের ছবি’ (২১-৩) শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনটি পড়ে এই চিঠি। মহানায়িকা সুচিত্রা সেন আপামর সিনেমাপ্রেমীর হার্টথ্রব। তাঁকে একটি বিশেষ দলের ভোট-ব্যানারের আওতা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক। ডেসডিমোনার গায়ে রাজনৈতিক রং না লাগালেই মানুষ খুশি হবেন। একটি চলচ্চিত্রে তাঁকে রাজনৈতিক নেত্রীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। এই কারণ দেখিয়ে তাঁর গায়ে একটি দলের পোশাক চড়ানো কি যুক্তিসম্মত? সুচিত্রা সেন থাকুন অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে। ঘুম ঘুম চাঁদ, ঝিকিমিকি তারা হয়ে। নবরাগের আলোয়, ভোটের ধুলোয় নয়। যিনি স্বেচ্ছায় নির্বাসনকে বেছে নিয়েছিলেন, তাঁকে নির্বাচনের ভিড়ে টেনে আনা কেন?
হীরালাল শীল
কলকাতা-১২
অন্য স্টেডিয়াম
‘‘কর্নাটকের বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়াম শুধুমাত্র অ্যাথলিটরা ব্যবহার করবেন। বেঙ্গালুরু ফুটবল ক্লাব, যারা এত দিন ব্যবহার করে এসেছে, তাদের কাছে এই স্টেডিয়ামের দরজা বন্ধ করা হোক।’’— এমন আন্দোলন দানা বেঁধেছে ওখানে। যুক্তি: অলিম্পিক পারফর্ম্যান্সের নিরিখে ভারতীয় ফুটবল, অ্যাথলেটিক্সের ধারেকাছে নেই। তা ছাড়া, সরকারি স্টেডিয়াম একটা ব্যক্তিমালিকানাধীন বা বেসরকারি ক্লাবের জন্য ব্যবহৃত হবে, আর সরকারি জাতীয় দল গড়ার জন্য অ্যাথলিটরা বাইরে অনুশীলন করবেন, এটা মেনে নিতে অনেকের অসুবিধে আছে। তেমন কোনও ভাবনা কি বাংলার অ্যাথলিটদের জন্য ভাবা যায় না সরকারি স্তরে? রাজ্য প্রশাসন কি শুধুমাত্র অ্যাথলেটিক্সের জন্য, গ্রামগঞ্জ থেকে নিজের গরজে ও তাগিদে উঠে আসা অ্যাথলিটদের জন্য, একটা স্টেডিয়াম উৎসর্গ করতে পারে না! তা হলে রাজ্যবাসী হিসেবে বড়াই করে বলতে পারি, আমাদের সরকার গুরুত্ব দেয় ও প্রেরণা দেয় গাঁ-গঞ্জের প্রতিভাবান অ্যাথলিটদের! বাংলা বিষয়টা আগেভাগে ভেবে সারা দেশকে তাক লাগিয়ে দিক না! অনেকগুলো তো স্টেডিয়াম আছে খেলাধুলার জন্য। গ্রামের আল ধরে আর এবড়োখেবড়ো ধানজমিতে দৌড় শুরু করে অলিম্পিক বা বিশ্ব প্রতিযোগিতার আসরে পদক জিতে আনবেন আমাদের ছেলেমেয়েরা— তাই তাঁদের জন্য বাড়তি কিছুই করার দরকার নেই— এটা ভাবা বাতুলতা।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সৌম্যেন্দ্রনাথ জানা
কলকাতা-১৫৪
ভাড়া ও ভিড়
একটি চিঠিতে (‘মেট্রোর ভিড়’, ২০-৩) পড়লাম, ‘‘...ভাড়া বাড়িয়ে, ভিড়ে রাশ টানতে হবে।’’ আজ পর্যন্ত ভাড়া বাড়িয়ে কোনও যানবাহনে ভিড় কমানো যায়নি। মেট্রোর ভাড়া বাড়ালে হয়তো অল্পসংখ্যক মানুষ মেট্রোর বদলে বাস কিংবা অন্য কোনও যানবাহনে ভিড় করবেন। সাধারণ নাগরিকদের ভিড়ে যাতায়াত করার সমস্যাটা কিন্তু থেকেই যাবে। পত্রলেখক সম্ভবত, সমাজে যাঁরা অর্থনৈতিক দিক থেকে তুলনামূলক ভাবে উচ্চ অবস্থায় আছেন, তাঁদের জন্য বিশেষ ভাবে মেট্রোর ব্যবহার নির্দিষ্ট করতে চেয়েছেন, আমজনতার জন্য নয়। ভিড় এড়িয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে হলে পর্যাপ্ত যানবাহন ও উন্নত মানের
সড়ক-ব্যবস্থার প্রয়োজন। ভাড়া বাড়ালেই সেটা হবে কি? তার নিশ্চয়তা কোথায় ?
আলোক রায়
পল্লিশ্রী, সোদপুর
হিন্দি ভাষা
জনসমাজে বহুল প্রচলিত একটা ধারণা যে, হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা। ‘রাষ্ট্রভাষা’ বলতে অনেকেই বোঝেন, হিন্দি হল ভারতের ‘জাতীয় ভাষা’ বা ‘ন্যাশনাল ল্যাঙ্গোয়েজ’। কিন্তু ভারতের কোনও জাতীয় ভাষা বা ন্যাশনাল ল্যাঙ্গোয়েজ নেই। আর ২২টা ভাষার মতো হিন্দিও ভারতের সংবিধানস্বীকৃত একটি দাফতরিক ভাষা বা ‘অফিশিয়াল ল্যাঙ্গোয়েজ’।
হিন্দির সঙ্গে দাফতরিক ভাষা হিসেবে অন্য ভাষাগুলি হল— বাংলা, ওড়িয়া, অসমিয়া, গুজরাতি, কন্নড়, কাশ্মীরি, পঞ্জাবি, মরাঠি, তামিল, তেলুগু, মালয়ালম, উর্দু, হিন্দি, কঙ্কনী, সংস্কৃত, মণিপুরি, নেপালি, বোরো, সাঁওতালি, মৈথিলি, ডোগরি এবং ভোজপুরি।
রমজান আলি
বর্ধমান
বিমল মিত্র
কথাসাহিত্যিক বিমল মিত্র কমবেশি ৭০টি বই রচনা করেছিলেন; লেখার জন্য চাকরি ছেড়েছিলেন। বেশির ভাগ সময় থাকতেন কলকাতায়। ‘সাহেব বিবি গোলাম’, ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ ইত্যাদি উপন্যাস লিখেছেন তিনি। তাঁর বই থেকে সিনেমাও হয়েছে। বিশিষ্ট মানুষটির পৈতৃক বাসভূমি ছিল নদিয়ার মাজদিয়ার কাছে বাংলাদেশ বর্ডার সংলগ্ন ফতেপুর গ্রাম। এই গ্রামে তাঁর স্মৃতিরক্ষার্থে বিরাট কিছুই করা হয়নি। কিন্তু ফতেপুরের কৃষিজীবী গ্রামবাসীরা তাঁর বিক্রীত জমির পাশেই তাঁর নামাঙ্কিত একটি স্মৃতিফলক আর গ্রামের মাঝখানে তাঁর নামে একটা ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। ক্লাবটির নাম ‘বিমল মিত্র স্মৃতি সংঘ’। বর্তমানে এই ক্লাবে একটি লাইব্রেরি গড়ে তুলেছেন ক্লাবের সদস্যেরা।
দেবদুলাল কুণ্ডু
বগুলা, নদিয়া
প্রচারের অঙ্গ
২০ মার্চ আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশিত একটি ছবির ক্যাপশন করা হয়েছে ‘জনসংযোগ: প্রচারের ফাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী মৌসম নুর।’ ক্যাপশনটি যথার্থ নয় বলেই মনে হয়। বিভিন্ন দলের বিভিন্ন নেতানেত্রী ও প্রার্থীরা আজকাল নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে শিশুকে কোলে নেওয়ার জন্য বড়ই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। শিশুদের প্রতি সমস্ত মানুষের স্বাভাবিক দুর্বলতা ও ভাবাবেগকে কাজে লাগাতেই তাঁদের এই শিশুপ্রীতির প্রদর্শনী। সুতরাং ক্যাপশনে ‘জনসংযোগ’ কথাটিই যথেষ্ট। যা পরিকল্পিত প্রচারেরই অঙ্গ, তাকে ‘প্রচারের ফাঁকে’ বললে একটু ফাঁক থেকে যায় না কি?
চন্দ্রপ্রকাশ সরকার
বিবেকানন্দপল্লি, বহরমপুর
ডিফল্টার
পশ্চিমবঙ্গে অনেক ‘প্রাইভেট টিউটর’, সময়মতো মাইনে দিতে না পারা ছাত্রছাত্রীদের ‘ডিফল্টার’ আখ্যা দিয়েছেন এবং সেই নামের তালিকা প্রকাশ করছেন ফেসবুকের দেওয়ালে বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। এমন দিনও হয়তো আসবে, যখন ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়ার আগে শিক্ষকেরা তাদের ‘ক্রেডিট স্কোর’ যাচাই করে নেবেন!
অনির্বাণ দাম
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
টিকটক
দেশে নতুন এক রোগ আসিয়াছে এবং ইহার করাল প্রকোপ পড়িতেছে ছেলে-বুড়া সকলের উপর। রোগটির নাম ‘টিকটক’ (tiktok)। ভাবিয়া অবাক লাগে, এই বস্তু আবিষ্কার না হইলে, অজানাই থাকিয়া যাইত, গ্রামে-শহরে এত মধুবালা, শশী কপূর, উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন রহিয়াছেন।
বিপদ হইল, আমি তত দিনই মুদির দোকান হইতে দ্রব্য কিনিব, যত দিন স্বয়ং একটি দোকান না খুলিয়া বসিতেছি। সুতরাং ঘরে-ঘরে যদি নায়ক-নায়িকা উৎপাদন হইতে থাকে অহোরাত্র, তবে চলচ্চিত্রের টিকিট বিক্রি হইবার সম্ভাবনা কম। এমনিতেই কম্পিউটার ও স্মার্টফোনগুলি তাহাদের ব্যবসা লোপাট করিয়া দিয়াছে, যাহা বাকি রহিয়াছিল তাহা শেষ করিয়া দিতেছে এই নতুন রোগ।
চলচ্চিত্রে প্রয়োজন অভিনয়পটুতা, কিন্তু এই টিকটক-এ যত বিকৃত অভিনয় প্রদর্শিত হইবে, পরিচিতি লাভের সম্ভাবনা বাড়িবে! এই ডিজিটাল মহামারি রোধিবে কে!
অভিষেক মুখোপাধ্যায়
বীরভূম
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।