‘তাস পিটিয়ে এশিয়াডে সোনা দুই বাঙালির’ (২-৯) শীর্ষক সংবাদ বিষয়ে বলি, এশিয়াডে এই তাস খেলোয়াড়রা দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন নিশ্চয়ই, আমরা সে জন্য গর্বিতও, কিন্তু তাস খেলা আমার সামনে সর্বনাশা রূপে ধরা পড়েছে বার বার। আমার বাড়ির পাশে কয়েকটি চায়ের ও মুদির দোকান রয়েছে। সেখানে সকাল থেকে চলে তাসের আড্ডা। উঠতি যুবক, মাঝবয়সি থেকে বৃদ্ধরা এ আড্ডা জমিয়ে তোলেন। প্রায় সকলেই শ্রমজীবী মানুষ, তাঁরা বেশির ভাগ মাঠের কিংবা বাড়ির কাজ ফেলে তাসের আড্ডায় মজে থাকেন। এই খেলাকে কেন্দ্র করে সাংসারিক অশান্তি ঘর ছেড়ে রাস্তার উপর উঠে আসে। কোথাও কোথাও দেখি রাতদুপুর পর্যন্ত টাকা বাজি রেখে তাস খেলা চলে। তা জুয়া খেলারই নামান্তর। এই জুয়ায় অনেককে সর্বস্বান্ত হতে দেখেছি। তাই ভয় হয়, এশিয়াডে সোনা জয় পাড়ার তাসের জুয়াকে উৎসাহিত করবে না তো? বেকার শিক্ষিত যুবকদের চপ-মুড়ি বিক্রি কিংবা পকোড়া বিক্রিতে উৎসাহ দিচ্ছে প্রশাসন। এখন প্রশাসন আবার না বলতে শুরু করে, কাজ নেই? তাস খেলুন, এশিয়াডে যান! তাস কর্মসংস্কৃতি ধংসের কারণ হয়ে দাঁড়ালে খুবই খারাপ হবে।
শ্রীমন্ত কুমার দাস
বামনাসাই, পশ্চিম মেদিনীপুর
বালকাশ্রম
রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বালকাশ্রমের ‘প্ল্যাটিনাম জুবিলি’ পালিত হচ্ছে। ১৯৪৪ সালের রহড়া বালকাশ্রম এবং এখনকার বালকাশ্রমের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। তখন আশ্রমের চার পাশে জঙ্গল ছিল। বিজলির আলো ছিল না। ভাল রাস্তাঘাট ছিল না। আমরা লণ্ঠন জ্বেলে পড়াশোনা করতাম। এক একটা লণ্ঠনের চার পাশে আমরা চার-পাঁচ জন বসতাম। এক সেট বই দু’জনে মিলে পড়তাম। স্কুলে যেতাম খালি পায়ে। টিউবওয়েলের জলে রান্না-খাওয়া হত। বাকি কাজ পুকুরের জলে হত। নিজেদের ঘরদোর পরিষ্কার করা, জামাকাপড় কাচা, বাগান কোপানো, বাগানে জল দেওয়া, গাছ লাগানো ইত্যাদি কাজ নিজেরাই করতাম।
১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষ, যাকে পঞ্চাশের মন্বন্তর বলে, তার ফলে তখন রাস্তাঘাটে শীর্ণকায় ক্ষুধার্ত মানুষের মিছিল। শিয়ালদহে লঙ্গরখানা খুলেছিল। আশ্রম থেকে দল বেঁধে আমরা যেতাম তাঁদের সেবা করতে। খিচুড়ি পরিবেশন করতাম। আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী পুণ্যানন্দজি মহারাজ। তিনি ছিলেন ঋষিতুল্য কর্মযোগী সন্ন্যাসী। আমরা তাঁকে ‘স্বামীজি’ বলে সম্বোধন করতাম। আমাদের প্রতি তাঁর ছিল অসীম স্নেহ। তিনি আমাদের হাতে ধরে শিখিয়েছেন, কী ভাবে নিঃস্বার্থ মানবসেবা করতে হয়।
তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেলের পত্নীর এক প্রশ্নের উত্তরে স্বামীজি বলেছিলেন, ‘‘এই ছেলেরা যে দিন ভুলে যাবে যে তারা অনাথ, সে দিন মনে করব আমার কাজ সার্থক।’’ আজ তিনি থাকলে দেখতে পেতেন, কী ভাবে তাঁর স্বপ্ন সার্থক রূপ নিয়েছে। এখানে এখন অতি দরিদ্র ৬০০ অনাথ শিশু সেবাযত্ন পেয়ে হাসিমুখে পড়াশোনা করে যাচ্ছে। রহড়া বালকাশ্রম থেকে জীবনে যা কিছু পেয়েছি তার তুলনা হয় না। তবে স্বামীজির হাতে ধরে শেখানো দুটো জিনিস জীবনসায়াহ্নে এসেও বাঁচার আনন্দ দান করছে। তা হল, স্বাবলম্বী হওয়া ও নিঃস্বার্থ ভাবে মানবসেবা করা।
বিনোদ বিহারী মণ্ডল
ধারিন্দা, তমলুক
একমত
‘জীবন বিমা’ শীর্ষক চিঠির (সম্পাদক সমীপেষু, ৫-৯) পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের প্রতিবেদকের উত্তরের সঙ্গে আমি একমত। আমাদের এলআইসি-র প্রতিনিধি দেবাশিস দত্তও অসত্য কিছু উপস্থাপিত করেননি। আসলে উনি এ কথা বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, ‘‘ইফ ইউ হ্যাভ লট্স অব মানি ইউ ক্যান পারচেজ় এনিথিং এক্সেপ্ট এলআইসি পলিসি।’’ কারণ বয়সের সময়সীমা এবং শারীরিক সুস্থতাই জীবন বিমা করার প্রাথমিক মাপকাঠি। এ ক্ষেত্রে বয়সের কথা এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কথা মাথায় রেখে, এলআইসি-র তরফ থেকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে ডাক্তারি পরীক্ষা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য, এই পরীক্ষা ছাড়া যে বিশেষ তাৎক্ষণিক ত্রৈমাসিক পেনশন প্ল্যান আছে, সেই বিশেষ যোজনাতেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে ভুল বোঝার জন্য
আমি দুঃখিত।
কৌশিক ঘোষ
সিনিয়র বিজ়নেস অ্যাসোসিয়েট
এলআইসি ইন্ডিয়া
কয়েকটি ভুল
‘শ্রীঅটলবিহারী বাজপেয়ী (১৯২৪-২০১৮)’ নিবন্ধে (১৭-৮) দু’টি তথ্যপ্রমাদ চোখে পড়ল। লেখা হয়েছে, ১৯৫৭ সালে বাজপেয়ী জনসঙ্ঘের সভাপতি হন। এই তথ্য ঠিক নয়। কারণ অটলবিহারী ১৯৬৮ সালে ভারতীয় জনসঙ্ঘের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং চার বছর এই পদে ছিলেন। তাঁর বহু দিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা আডবাণী বাজপেয়ীর স্থলাভিষিক্ত হন। আর, ১৯৫৭ সালে এই দলের সভাপতি ছিলেন আচার্য দেবপ্রসাদ ঘোষ।
দুই, লেখা হয়েছে, পাঁচ দশকেরও বেশি দীর্ঘ সাংসদ জীবনে বাজপেয়ী ছ’বার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে অটলবিহারী বাজপেয়ী দশ বার লোকসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। বলরামপুর থেকে দু’বার (১৯৫৭, ’৬৭), গ্বালিয়র থেকে এক বার (’৭১), নিউ দিল্লি থেকে দু’বার (’৭৭, ’৮০) এবং লখনউ থেকে পাঁচ বার (’৯১ থেকে ২০০৪)।
এ ছাড়া, স্বপ্না বর্মণ সম্পর্কে ‘উচ্চতা কম তো কী! পরিশ্রম আর জেদেই ব্যতিক্রম স্বপ্না’ সংবাদ প্রতিবেদনে (৩০-৮) লেখা হয়েছে, ‘‘চার বছর আগে ইঞ্চিয়নে সেই সাফল্য মেলেনি। হেপ্টাথলন থেকে স্বপ্না ফিরেছিল চতুর্থ হয়ে।’’ এই তথ্য ঠিক নয়।
গত এশিয়াডে এই ইভেন্টে স্বপ্না ৫১৭৮ পয়েন্ট পেয়ে পঞ্চম হয়েছিলেন। আর চতুর্থ হয়েছিলেন বাংলার আর এক ‘ভারতসেরা মেয়ে’ সুস্মিতা সিংহরায়, ৫১৯৪ পয়েন্ট পেয়ে।
সজলকান্তি ঘোষ
শ্রীনিকেতন, বারুইপুর
মেট্রোর কাজ
‘জোকা মেট্রোর কাজ রুখে দিলেন মুখ্যমন্ত্রীই’ (প্রথম পৃষ্ঠা, ৭-৯) শীর্ষক সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর সংবাদটির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে এই প্রতিবাদপত্র।
এই প্রসঙ্গে জানাই যে, উক্ত খবরের শিরোনামে যা বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার কারণ অনুসন্ধানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি গঠিত হয়েছে এবং উক্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করা পর্যন্ত ভেঙে পড়া অংশে মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ শুধুমাত্র সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কোনও ভাবেই জোকা-বিবাদী বাগ বা অন্যান্য মেট্রো প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করার কোনও সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার গ্রহণ করেনি এবং মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীও এই জাতীয় কোনও বিবৃতি দেননি।
এমন একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয়ে এই জাতীয় বিভ্রান্তিকর সংবাদ সাধারণ মানুষের মধ্যে অযথা ভুল ধারণার সৃষ্টি করতে পারে।
মিত্র চট্টোপাধ্যায়
তথ্য অধিকর্তা
তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ
পশ্চিমবঙ্গ সরকার
প্রতিবেদকের উত্তর: প্রকাশিত সংবাদের গোড়াতেই এটা স্পষ্ট বলা আছে যে, ‘‘তদন্ত শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে।’’ শিরোনামে ‘রুখে দিলেন’ শব্দে আপত্তি কেন? ‘রোখা’ মানে স্থায়ী ভাবে বন্ধ করা নয়। রেল রোকো, রাস্তা রোকো ইত্যাদি কখনওই চিরতরে রেল বা রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলে না। এটাও তেমনই। এটুকু বুঝলে আর প্রতিবাদের প্রয়োজন হয় না।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।