Mamata Banerjee

আপাতত সব দরজা খোলা, জল মাপছেন মমতা

মমতা আপাতত রাহুলের নেতৃত্বকে দূরে সরিয়ে আঞ্চলিক দলের ফ্রন্ট গঠনে উদ্যোগী। লিখছেন জয়ন্ত ঘোষালমমতা আপাতত রাহুলের নেতৃত্বকে দূরে সরিয়ে আঞ্চলিক দলের ফ্রন্ট গঠনে উদ্যোগী। লিখছেন জয়ন্ত ঘোষাল

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৮ ০০:২১
Share:

মমতার সঙ্গে বৈঠকের পর বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হা এবং যশবন্ত সিন্হা। বুধবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

তিন মাস পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি এলেন। তিনি এ বার এসে দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করলেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। তাই রাজধানীতে মমতাকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে আগ্রহ। অনেকেই জানতে চাইছেন, মমতা কী ভাবছেন? তাঁর রাজনৈতিক কৌশল কী? শুধু আঞ্চলিক নেতারাই নন, সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেও দেখা করলেন মমতা। এক কথায় বলা যায়, এ হল মমতার রাজনৈতিক জনসংযোগ কর্মসূচি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন খুব ‘ফ্লুইড’। এই অবস্থায় এই জনসংযোগ খুবই জরুরি। মমতাও সমস্ত পথ খোলা রাখছেন। তিনি দিল্লিতে থাকেন না, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দিল্লি তাঁর পরিচিত স্থান। ’৮৪ সাল থেকে একটানা দীর্ঘ সময় তিনি সাংসদ ছিলেন। তাই দিল্লির কুশীলবেরা মমতার কাছে অচেনা–অজানা চরিত্র নয়। প্রশ্ন একটাই, মমতা কী হতে চাইছেন? ঢাক ঢাক গুড় গুড় না করে একটা কথা বলি, মমতা প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার। এই দাবির মধ্যে কোনও অন্যায় নেই। ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে এখন মমতার কাছে ৩৩টি আসন। রাজনৈতিক বিশ্লেষণে সাধারণ ভাবে সকলেই একমত, মমতা এ বার ভাল ফল করবেন। আঞ্চলিক নেতা হিসেবে জাতীয় রাজনীতির তিনি অন্যতম নির্ধারক হবেন।

Advertisement

মমতা অপাতত রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বকে দূরে সরিয়ে আঞ্চলিক দলের একটি ফ্রন্ট গঠন করতে উদ্যোগী। আজ নয়। বেশ কিছু দিন ধরেই করছেন, আর এই ফ্রন্টে তিনি শিবসেনাকে পাওয়ার সম্ভাবনাও খারিজ করে দেননি। এই ফ্রন্টে ফারুক আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্সকেও থাকার জন্য অনুরোধ করছেন। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে শুধু আঞ্চলিক দলের ফ্রন্ট গঠন করে যে দিল্লি দখল করা সম্ভব নয় সেটা মমতাও জানেন। কিন্তু তিনি চাইছেন ফ্রন্ট সরকার হোক, কংগ্রেস সে ফ্রন্টে যোগ দিক, অথবা সে ফ্রন্ট সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করুক, যেমন ভাবে ’৭৭ সালের মোরাজি সরকার ও কিছু দিনের জন্য চরণ সিংহ সরকার গঠন হয়, যেমন ভাবে ’৮৯ সালে বিশ্বনাথপ্রতাপ, তার পর চন্দ্রশেখর, দেবেগৌড়া ও গুজরালের সরকার গঠন হয় বাইরে থেকে কংগ্রেস বা বিজেপির মতো বড় দলের সমর্থন নিয়ে।

শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা। নয়াদিল্লিতে। ফাইল চিত্র।

Advertisement

মমতার সামনে বিকল্প কী কী?

প্রথমত মমতা+কিছু আঞ্চলিক দল, কংগ্রেসের সমর্থন বাইরে থেকে। দ্বিতীয়ত, মমতা+কিছু আঞ্চলিক দল, বিজেপির সমর্থন বাইরে থেকে। তৃতীয়ত, এনডিএ সরকার মোদীহীন বিজেপি সরকার, রাজনাথ সিংহ বা গড়কড়ি প্রধানমন্ত্রী, মমতাদের সমর্থন বাইরে থেকে। চতুর্থত, রাজনাথ বা বিজেপির অন্য কোনও প্রধানমন্ত্রী, মমতা উপ-প্রধানমন্ত্রী বা সে সরকারে সামিল।

মমতা তাই দবি তুলেছেন, ভোট ১:১ আসন সমঝোতার ভিত্তিতে হোক। যেখানে যে শক্তিশালী সেখানে বিজেপি-বিরোধী প্রার্থী দাঁড়াবে। কংগ্রেস ১০০টি আসনে কমপক্ষে প্রত্যক্ষ লড়াই লড়ুক। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, গুজরাত প্রভৃতি রাজ্যে। আবার তামিলনাড়ুতে স্তালিনকে, বাংলায় মমতাকে ছেড়ে দেবে কংগ্রেস। কংগ্রেস আজও প্রধান বিরোধী দল, এখনও এত অবক্ষয়ের পরেও কংগ্রেস সর্বভারতীয় পার্টি।

আরও পড়ুন: ‘একের বিরুদ্ধে এক’ প্রার্থী, সনিয়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে বললেন মমতা

এ প্রস্তাব কংগ্রেস মানে কী করে?

আর তাই আপাতত সব দরজা খোলা রেখে জল মাপছেন মমতা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন