Joe Biden

আধাআধি

মূল্যস্ফীতি, অন্য দিকে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার প্রতিক্রিয়া— নানা কারণেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-এর দল নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত ছিল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৩১
Share:

জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল চিত্র।

ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর অনুরাগীদের হতাশ করেননি। ‘মহান এবং গৌরবময় আমেরিকা’ গড়বার পুরনো বুলি আওড়ে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নিজের নাম ঘোষণা করেছেন তিনি। মাঠে নামার সময় নির্বাচনটি তাৎপর্যপূর্ণ। দেশের আইনসভা অর্থাৎ কংগ্রেস-এর অন্তর্বর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের সাফল্য প্রত্যাশার তুলনায় কম হয়েছে। ট্রাম্পের কীর্তিকলাপ তার জন্য দৃশ্যত অনেকখানি দায়ী। দলের একটা বড় অংশ ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন চান না। এই পরিস্থিতিতে কালক্ষেপ না করে দৌড়ে নেমে পড়ার সিদ্ধান্তটি যে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ রণকৌশল, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। রিপাবলিকানরা এই কৌশল কী ভাবে সামলাবেন, তা ক্রমশ প্রকাশ্য। বৃহত্তর অর্থেও দল কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। তাঁদের প্রত্যাশামাফিক ‘লাল ঢেউ’-এ এ বার ভেসে যায়নি আমেরিকা। বরং, সর্ব অর্থেই আইনসভায় লাল আর নীল আধাআধি। এক দিকে মূল্যস্ফীতি, অন্য দিকে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার প্রতিক্রিয়া— নানা কারণেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-এর দল নির্বাচন নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত ছিল। কিন্তু সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রেখেছেন ডেমোক্র্যাটরা, এবং প্রতিনিধিসভায় রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতা বহাল থাকলেও তার মাত্রা সীমিত।

Advertisement

সেনেট দখলে রাখার সুবাদে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে সুবিধা পাবেন। যেমন, আদালত। বিচারব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে বিচারক নিয়োগে তাঁর ‘স্বাধীনতা’ বজায় থাকবে। মনে রাখতে হবে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান-প্রধান সেনেট-এর জমানায় দু’শোর বেশি বিচারক নিযুক্ত হন, যাঁরা অভিবাসন নীতি, গর্ভপাতের অধিকারের মতো নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন। অন্য দিকে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে সেনেট-এর আলোচ্য বিষয়সূচি নির্ধারণের ক্ষমতা থাকবে ডেমোক্র্যাটদের। হাউস থেকে আসা কোনও বিল অনুমোদন না-করার উপায়ও তাঁদের থাকবে। পাশাপাশি বাইডেন প্রশাসন বা ডেমোক্র্যাট নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ইত্যাদির মাধ্যমে শাসক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার রিপাবলিকান প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করাও তুলনায় সহজ হবে।

অন্য দিকে, আইনসভার দুই কক্ষে দুই দল প্রায় সমান অবস্থায়, যা ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টকে স্বস্তি দেবে না। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার কারণে অচলাবস্থার আশঙ্কা প্রবল। যেমন, পরিবেশ নীতি। ডেমোক্র্যাটরা জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সক্রিয় হতে চাইলেও রিপাবলিকানরা, বিশেষত ট্রাম্প-পন্থীরা, সে পথে হাঁটতে রাজি নন। এর ফলে বিশ্ব পরিবেশের সঙ্কট তীব্রতর হতে পারে। সমস্যায় পড়তে পারে ভারতের মতো দেশ। তাদের দাবি, জ্বালানি ব্যবহারে পরিবর্তন আনুক উন্নত দেশগুলো আর তার সঙ্গে বেশি টাকা দিক উন্নয়নশীল দেশগুলিকে যাতে তারা ক্রমে বিকল্প শক্তির ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু আমেরিকান কংগ্রেসে সে দাবি মেটার সম্ভাবনা সুদূরপরাহত। ভারতের উদ্বেগের আরও একটি বিষয়: অভিবাসন নীতি। দ্বিধান্বিত আইনসভায় এবং নির্বাচনী রাজনীতির রেষারেষিতে অভিবাসন নীতিতে উদারতার আশা কম। ফলে ভারতীয় দক্ষ শ্রমিকদের সমস্যা বাড়বে। অন্তর্বর্তী নির্বাচন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘পুনরাগমন’ ভারতের দুশ্চিন্তা বাড়াল।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন