Editorial News

শান্তির প্রস্তাবে মত নেই, পরমাণু যুদ্ধে রাজি!

উত্তর কোরিয়ার সর্বময় শাসক কিম জং উনও পিছিয়ে থাকার পাত্র নন। অন্য যে বিষয়েই তিনি পিছিয়ে থাকুন, হুমকি-হুঙ্কারে অন্য সকলের চেয়ে এগিয়ে থাকতেই তিনি পছন্দ করেন।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

মাত্র কয়েকটা দিন আগে ঘোষিত হয়েছে শান্তির নোবেল পুরস্কার। পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে ভুবনজোড়া মানবশৃঙ্খল গড়ে তুলছে যারা, সেই আইক্যান-এর হাতে উঠছে ২০১৭ সালের শান্তির নোবেল। এই মনোনয়নে ঠিক কী বার্তা নিহিত, স্পষ্ট বুঝে নিয়েছে গোটা মানবজাতি। বুঝতে পারেননি মাত্র কয়েকজন। অপরিসীম দুর্ভাগ্যক্রমে সেই কয়েকজনই নানা দেশে রাষ্ট্রপ্রধান পদে আসীন।

Advertisement

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসন্ন যুদ্ধের ইঙ্গিত দিয়েছেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। বিপুল অর্থ অনর্থক খরচ হয়ে গিয়েছে বলে তাঁর ধারণা। একের পর এক চুক্তি বা সমঝোতার নামে আমেরিকাকে বোকা বানানো হয়েছে বলে তাঁর বিশ্বাস। তাই উত্তর কোরিয়াকে বাগে আনতে একটাই মাত্র পথ কার্যকরী হবে বলে তিনি মন্তব্য করলেন।

উত্তর কোরিয়ার সর্বময় শাসক কিম জং উনও পিছিয়ে থাকার পাত্র নন। অন্য যে বিষয়েই তিনি পিছিয়ে থাকুন, হুমকি-হুঙ্কারে অন্য সকলের চেয়ে এগিয়ে থাকতেই তিনি পছন্দ করেন। স্বাভাবিক ভাবেই ফের প্রশস্ত ব্যাদানে পরমাণু আক্রমণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করলেন কিম। আমেরিকা বার বার যুদ্ধের প্ররোচনা দিচ্ছে এবং এই প্ররোচনার জবাব একমাত্র পরমাণু বোমাতেই দেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করলেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন

উত্তর কোরিয়ার জন্য একটাই ওষুধ: ট্রাম্পের মন্তব্যে যুদ্ধের জল্পনা তুঙ্গে

অর্থাৎ দুই রাষ্ট্রপ্রধানই সহমত হয়েছেন যে, এই টানাপড়েনের ‘সুরাহা’র পথ মাত্র একটাই। একজন খোলাখুলি বলে দিয়েছেন, পথটা হল পরমাণু হামলা। আর একজন শব্দগুলো স্পষ্ট করে উচ্চারণ করেননি। কিন্তু খুব দরাজ ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, কী বলতে চাইছেন।

নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষিত হওয়ার পর যে প্রশ্নটা তুলতে হয়েছিল, আজ ফের সেই প্রশ্নই রাখতে হচ্ছে। আমরা আদৌ সভ্য পৃথিবীতে বাস করছি তো? মানবজাতির প্রতি আদৌ কোনও দায়বদ্ধতা আমাদের রয়েছে তো?

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী দুই রাষ্ট্র কোনও বিষয়েই পরস্পরের সঙ্গে সহমত হতে পারে না। ইতিবাচক কোনও পথে হেঁটে সমস্যাটাকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে বললে রাষ্ট্রনায়করা কিছুতেই পেরে ওঠেন না। বহু চেষ্টাতেও রফাসূত্র না মেলা আশ্চর্যজনক বটে। কিন্তু আরও আশ্চর্য হতে হয় তখন, যখন দেখা যায় যে চরম বিনাশের পথে হাঁটার প্রশ্নে দু’পক্ষই এক সুরে কথা বলছে। একটা পরমাণু যুদ্ধ হওয়া নাকি অত্যন্ত জরুরি এবং সে বিষয়ে দু’পক্ষই একমত। এই রকম একটা গ্রহের ইতিবাচক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী হওয়া কি সত্যিই সম্ভব?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন