রাহুল-মমতার একত্রিত বিজেপি বিরোধিতা কি নতুন মোড়ের ইঙ্গিত?

এ নিয়ে সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই যে, বৎসরান্তের ছুটির মেজাজকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক কার্যক্রমের মধ্যে এর আগে এই ভাবে নিজেকে নিবিষ্ট রাখেননি কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সংশয় নেই এ নিয়েও যে, সাম্প্রতিক কালে বিশেষত নগদ-কাণ্ডকে কেন্দ্র করে নিজেকে যে ভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে মেলে ধরছেন তিনি, তাতে চমকিত প্রতিপক্ষ শিবিরও।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৫
Share:

নয়া দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল-মমতা। ছবি: পিটিআই।

এ নিয়ে সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই যে, বৎসরান্তের ছুটির মেজাজকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক কার্যক্রমের মধ্যে এর আগে এই ভাবে নিজেকে নিবিষ্ট রাখেননি কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সংশয় নেই এ নিয়েও যে, সাম্প্রতিক কালে বিশেষত নগদ-কাণ্ডকে কেন্দ্র করে নিজেকে যে ভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে মেলে ধরছেন তিনি, তাতে চমকিত প্রতিপক্ষ শিবিরও। তবু, বছরশেষে রাহুল গাঁধী যে নিশ্চিন্ত, নতুন বছরের দিকে পা বাড়াবেন হাসিমুখে, এই কথাটা নিঃসংশয়ে বলা গেল না।

Advertisement

বড়দিন শেষ করে, বর্ষবরণের ঠিক আগে দিল্লিতে ঘটা করে সর্বদলীয় ঐক্যের যে ছবি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন রাহুল, তা পারলেন না তো বটেই, বরং ফাটলের মোটা দাগগুলোই যেন প্রকট হয়ে উঠল। সমাজবাদী পার্টি থেকে বহুজন সমাজ পার্টি, বাম দলগুলো থেকে জনতা দল ইউনাইটেড, বিরোধী শিবিরের প্রধান কিছু দল সরে দাঁড়িয়ে বরং এযাবৎ অস্বস্তিতে থাকা বিজেপি-কে বৎসরান্তে কিছু স্বস্তিই উপহার দিল। সম্মিলিত বিরোধী ঐক্যের উপর দাঁড়িয়ে সদর দফতরে কামান দাগার কাজটা যে নিতান্ত কঠিন, সেটা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করলেন কংগ্রেস শিবিরের যুবরাজ।

তবু, রাহুল গাঁধীর মুখের হাসি হয়ত সম্পূর্ণত মলিন হল না। ইন্দ্রপ্রস্থের রুক্ষ, কর্কশ, বন্ধুহীন প্রান্তরে দাঁড়িয়ে তিনি পাশে পেলেন অনেক দিনের পুরনো এক পারিবারিক বন্ধুর। কলহদীর্ণ অতীতকে পিছনে ফেলে রাহুল গাঁধীর পাশে দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অভিযানের নতুন কোনও মোড়ে দেশ এসে দাঁড়াচ্ছে কি না, তা বলবে ভবিষ্যৎ। তবে তার আগে ঐতিহাসিক প্রয়োজনে দেশের প্রধান দুই বিরোধী শক্তি কী ভাবে এসে হাত ধরল পরস্পরের, কী ভাবে লেখা হতে শুরু করল নতুন এক অধ্যায়, ইতিহাসবিদের গভীর গবেষণার বিষয় হবে তা একদিন, তা নিয়ে তর্ক থাকার কথা নয়।

Advertisement

ইতিহাস জানে, রাহুল গাঁধীর এই মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বৃহৎ একটি শক্তিকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে পাশে পাওয়ার প্রয়োজন, বিশেষত যেখানে মুলায়ম-মায়াবতী-নীতীশ-শরদেরা দোদুল্যমান। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরকার তুলনামূলকভাবে দুর্বল এক সর্বভারতীয় দল কংগ্রেসকে। ২০১৯ সালের দিল্লি চলো ডাকের আগে সাবধানে, অতি সতর্কে, প্রথম পা ফেললেন মমতা। বন্ধু সনিয়া-রাহুলকে সামনে রেখেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement