দেশের একটা বড় অংশ জুড়ে যে মোদী-হাওয়া বইছে, সেই হাওয়া ঝড় হয়ে আছড়ে পড়ল দিল্লিতে। প্রত্যাশিতভাবেই । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়াকে আটকানোর কোনও লক্ষণ কুরুক্ষেত্রের এই প্রান্তরে দেখতে পাননি কোনও বিশ্লেষকই। তার একটা কারণ যদি বিজেপির পক্ষ থেকে সদর্থক ভাবনা সঞ্চার করতে সফল হওয়া হয়, দ্বিতীয় এবং বড় কারণ রয়ে গিয়েছে প্রতিপক্ষ আপ শিবিরে। দু’বছরের মধ্যেই জনপ্রিয়তার আকাশচুম্বী অবস্থান থেকে এই রকম সশব্দ পতন যে সম্ভব, অরবিন্দ কেজরিবালেরা সেটা করে দেখালেন। বীতশ্রদ্ধ নাগরিক আপের থেকে মুখ ফিরিয়ে বিজেপি-কেই বেছে নিলেন। সিএম-কে ছেড়ে পিএম-কে বেছে নিল দিল্লি।
প্রতিপক্ষ দুই শিবিরের বিপ্রতীপ দুই অবস্থানই আসলে পার্থক্যটা গড়়ে দিল দিল্লি ভোটে। ভুললে চলবে না, দিল্লির পুর প্রশাসনে শাসনক্ষমতায় ছিল বিজেপি। ফলে প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোটের চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী অস্বস্তিতে থাকার কথা ছিল তাদেরই, বিশেষত যেখানে বিরোধী শিবিরে ছিল আপের মতো সব উ়ড়িয়ে-দেওয়া ঝড়। আপ মানুষের কাছ থেকে দ্রুত সরিয়ে নিয়েছে নিজেকে, হাস্যাস্পদ করেছে এবং সরে এসেছে যাবতীয় প্রতিশ্রুতি থেকেও। অন্য দিকে বিজেপি পুরনো প্রার্থীদের সরিয়ে নতুন মুখ হাজির করে সবচেয়ে বড় চমক এনেছে এবার। অর্থাৎ, যা কিছু পুরাতন, তা জীর্ণ পাতার মতো বিচার্য হোক। স্বাগত নতুন। টিম মোদী। পুরনোর দায় এই নতুনের নয়।
সংশয় নেই, অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীদের মাস্টারস্ট্রোক ছিল দিল্লির এই কৌশল। তার চেয়েও বড় কথা, মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে তারা। আজকের দিল্লি অন্তত সেই কথাই বলছে। সেই আস্থার যথাযোগ্য উত্তর পেতে চায় দেশ—অখণ্ড এই ভারত।