Budget 2020

মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবী আমি বাজেট দেখি একটু স্বস্তির আশায়

আসলে আমরা, যারা মিডিল ক্লাস, সব সময় চিন্তা করি কোথা থেকে একটু বাঁচানো যায়, একটু সঞ্চয় করা যায়।

Advertisement

অরিন্দম গুহ

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:০৪
Share:

ছবি: পিটিআই

বাজেট নিয়ে বাস ট্রাম অফিস আদালতে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে, সোশ্যাল মিডিয়া, নিউজ চ্যালেন আর পেপারগুলোতেও একটু একটু করে খবর জায়গা নিতে শুরু করেছে।

Advertisement

তা হবে নাই বা কেন? দেশের বাজেট বলে বলে কথা!

আজকের দুনিয়ায় আমাদের মাথায় ঢুকে গিয়েছে আর্থিক বৃদ্ধি মানেই দেশের সার্বিক উন্নতি। তাই সরকারের দেওয়া আগামী এক বছরে দেশের সাম্ভাব্য আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত হিসেবনিকেশ, মানে বাজেট, থেকে ভারতবর্ষ কতটা এগলো বা পিছলো তার একটা আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করি।

Advertisement

দেশের উন্নতি হলে দশের উন্নতি হবে— এই কথা শুনে বড় হওয়া এই আমিও তাই অন্য চারটে মানুষের মতো আগামী এক তারিখ সকালের কাগজের ফ্রন্ট পেজটায় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ব আমার চাহিদার কথা, বাজেট থেকে কী আশা করা উচিত সেটা জানার। তার পর অফিসে বসে টিভি বা মোবাইলটা খুলে দেখে নেব ‘লাইভ বাজেট’। বাড়ি ফেরার পর রিমোটের দখল নিয়ে রোজকার সিরিয়ালের চ্যানেলগুলো এড়িয়ে সোজা চলে যাব নিউজ চ্যালেনে, জেনে নেব দশের অর্থাৎ আমার কী লাভ হল।

তার পর মোটামুটি তিন চার দিন চলবে হিসেবনিকেশ। সব দিক থেকে বাঁচিয়েকুচিয়ে বছরের শেষে ব্যাঙ্ক ব্যালান্সটা কী ভাবে একটু বাড়ানো যায়, তার পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা। তবে কিনা জানেন, জীবনের ওঠাপড়া, ঘাত-প্রতিঘাত এগুলো তো আর বলেকয়ে আসে না। আবার মানুষের দায়দায়িত্ব, মূল্যবোধ ভালবাসা এই ব্যাপারগুলোকে টাকার অঙ্কে ফেলা যায় না, তাই বছরের শেষে হাতে পাওয়া ব্যালান্স শিটটার সঙ্গে আমার খাটাখাটনি করে বের করা হিসাবের অঙ্ক সবসময় মেলে না। তবুও হিসাবটা করি। কারণ, আমাদের মতো চাকুরিজীবীদের উপার্জনটা তো ফিক্সড, তাই পকেট বুঝে খরচ না করতে পারলে সমূহ বিপদ। তাই বাজেটর খবরাখবর একটু রাখতেই লাগে।

আর প্রত্যাশা? একদম মধ্যবিত্ত সংসারে থেকে বড় হয়েছি। তাই আমার মতো চার-পাঁচজন সাধারণ মানুষের বাজেট নিয়ে যা প্রত্যাশা থাকে, আমারও তাই। যেমন, ইনকাম ট্যাক্সের অঙ্কটা কমুক, 80C-র লিমিটটা বাড়ানো হোক, ব্যাঙ্কের সেভিংস বা এফডি-তে ইন্টারেস্ট রেটটা বাড়ুক, রোজকার জিনিস পত্র— মানে চাল-ডাল-তেল-নুন-গ্যাস-পেট্রোলের মতো পণ্যের দামগুলো একটু কমুক।

আসলে আমরা, যারা মিডিল ক্লাস, সব সময় চিন্তা করি কোথা থেকে একটু বাঁচানো যায়, একটু সঞ্চয় করা যায়। এই সঞ্চয়টাই আসলে আমাদের মতো চাকুরিজীবীদের ‘extra income’।এই উপার্জিত এক-একটা টাকাই মধ্যবিত্তকে এক-একটা নতুন স্বপ্ন বুনতে সাহায্য করে আর এই পুঁজিগুলোই এক দিন আমাদের স্বপ্ন পূরণের দিনটার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

তাই একটা ভাল বাজেট দেশকে যেমন উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যায়, তেমনই দেশের ‘আম আদমি’, মানে আমাদেরও ‘রোটি কাপড়া অওর মকানের’ পাশাপাশি আর একটু ভাল করে বাঁচার পথটা প্রসস্ত করতে পারবে বলে মনে হয়। চাহিদা এইটুকুই। আর একটু ভাল ভাবে বাঁচার।

(লেখক চাকুরিজীবী)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন