কাজটা কঠিন
দেড় দশকেরও বেশি সময় ছাত্র পড়িয়ে মনে হয়েছে ছাত্রছাত্রীর অপারগতাকে সবর্সমক্ষে বড় করে দেখা হলে তাদের মনের ওপর বড্ড বেশি চাপ পড়ে। (‘চেষ্টা করছে...’, পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, ৪-৯) এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কর্তব্য হল এক গ্লাস জলের কতটা শূন্য, তা বড় করে না দেখিয়ে গ্লাসের কতটা পূর্ণ তাকেই বড় করে দেখানো।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষা সব ক্ষেত্রেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষকশিক্ষিকার আদানপ্রদান যত বেশি হবে, শিক্ষাদান ততই সহজ ও সার্থক হবে। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে ক্লাসরুমে শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত অত্যম্ত কম হলে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিকাঠামো অনুন্নত থাকলে ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষকের মনের নিবিড় যোগাযোগ কার্যত অসম্ভব। নিতান্ত বেয়াড়া ও অমনোযোগী ছাত্রের কাছে পড়াশোনাকে কী ভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় তা বই পড়ে বা ট্রেনিং নিয়ে শেখা যায় না।
গার্জিয়ান কল, বকুনি কিংবা মারের ভয় সত্যি সত্যিই এক জন ছাত্রকে একরোখা ও বেপরোয়া করে তুলতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকের পাশাপাশি বাবা-মায়ের ভূমিকাও কিছু কম নয়। বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে রোজগারের উদ্দেশ্যে অনেক মাকেই বাড়ির বাইরে বের হতে হচ্ছে। শিশু বয়সে কিংবা বয়ঃসন্ধির সময় সন্তানরা তাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু মায়ের সাহচর্য থেকে দিনের অধিকাংশ সময়ই বঞ্চিত হচ্ছে। ছোটরা বাড়িতে সময় কাটাতে বাধ্য হচ্ছে দাদু-ঠাকুমা কিংবা মাইনে করা কাজের লোকের সঙ্গে। এই পরিস্থিতি শিশুকিশোরদের মননের বিকাশে অন্তরায় হচ্ছে বহু ক্ষেত্রেই। দিনের অধিকাংশ সময় মায়ের শূন্যস্থান পূরণ করছে টেলিভিশনের কার্টুন কিংবা কম্পিউটার গেম। এর ফলে শিশু, কিশোরকিশোরীদের ভিড় বাড়ছে মন-চিকিৎসকের চেম্বারে।
বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের ‘প্রকৃত মানুষ’ করে গড়ে তুলতে শিক্ষকশিক্ষিকা কিংবা বাবা-মা কারও ভূমিকাই কম নয়। ছাত্রছাত্রীদের সমস্যাকে অন্তর থেকে বিবেচনা করে সমাধানের পথ বিশ্লেষণ করতে পারলে ওদেরই মঙ্গল হবে।
সুদীপ চট্টোপাধ্যায়। হাওড়া-৬
বিরক্তিকর
আনন্দবাজার পত্রিকা (‘গোস্বামী ধর্ম’, সম্পাদকীয়, ১২-৯) বামফ্রন্ট আর বাম নেতাদের সারদা বিষয়ে জোরদার আন্দোলনে রাস্তায় না নামার কারণে যে পরিহাসপূর্ণ কূট সমালোচনা করেছে, তার প্রেক্ষিতে একটা বিষয় জানার ইচ্ছে সংবরণ করতে পারছি না। পথে নেমে ঠিক কী ধরনের আন্দোলন করার প্রত্যাশা বা উপদেশ বর্ষিত হচ্ছে বিরোধীদের উদ্দেশে? দায়িত্বজ্ঞানহীন আন্দোলন? বিধানসভা ভাঙচুর? নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুরের মতো রাস্তা কাটা, দিনের পর দিন অবরোধ? এ হেন পরিস্থিতিতে যখন সাধারণ মানুষজনের নাভিশ্বাস উঠবে তখন আনন্দবাজার কি দায়িত্ব নিয়ে এ কথা লিখবে যে লক্ষ লক্ষ প্রতারিত মানুষের স্বার্থে এ ধরনের আন্দোলন অত্যন্ত জরুরি?
একেবারে মন খুলে বলি, অন্য কাগজের সঙ্গে আনন্দবাজার না পড়লে মনে হয় যেন উপোসী হয়ে থাকা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনপনেয় জেহাদ, ক্ষুরধার বিশ্লেষণ, গভীর সমুদ্র ছেঁচে অনবদ্য আনন্দবাজার ও তার সংবাদ সংস্থা। এরই মধ্যে এ ধরনের অযাচিত অকারণ উপদেশ একটু বিরক্তির কারণ হয়। এ ধরনের উপদেশবাণী আমার মতো এক পাঠকের চোখে অদূরদর্শিতা আর অপরিণত মানসিকতার প্রতিফলন হিসেবেই প্রতিভাত হয়।
বিকাশ বসু। সল্টলেক, কলকাতা-১০৬
অতিরিক্ত ট্রেন
সীমান্ত গুহঠাকুরতার চিঠির (‘হাসনাবাদের দাবি’, ১৬-০৭) জবাবে জানাই, হাসনাবাদের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকশিক্ষিকা, ব্যাঙ্ককর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যদের, যাঁরা অনেকেই কলকাতা ও শহরতলির বাসিন্দা, তাঁদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ নতুন সময়সারণিতে (২০১৪) একটি অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে।
ট্রেনটি (৩৩৫৩৬ ডাউন) হাসনাবাদ স্টেশন থেকে বিকেল ৫-২০ মিনিটে ছেড়ে অন্যান্য স্টেশনে থেমে, বসিরহাট স্টেশনে পৌঁছবে বিকেল ৫-৩৪ মিনিটে। ট্রেনটির শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছনোর নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৭-৩৭ মিনিট।
রবি মহাপাত্র। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক, পূর্ব রেলওয়ে, কলকাতা