WB Teacher Recruitment 2025

এসএসসিতে পুরনো চাকরি ফিরে পেলেন ১৬৬ জন, তবে বাড়ির কাছে নয় দূরবর্তী জেলায়

প্রথম ধাপে নবম দশম একাদশ দ্বাদশে ফিরতে চলেছেন ১৬৬ জন। নভেম্বরে ৬ তারিখ ওই সমস্ত শিক্ষককে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা জানাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু ১৬৬ জনের মধ্যে অধিকাংশকেই দেওয়া হল যেখানে আগে চাকরি করতেন সেই স্কুলে, আর সেখানে শূন্যপদ না থাকলে ওই জেলার পার্শ্ববর্তী কোন‌ও স্কুলে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:১১
Share:

প্রতীকী চিত্র।

পুরনো স্কুলে শিক্ষকতায় ফিরতে চলেছেন ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের একাংশ। প্রথম ধাপে নবম দশম একাদশ দ্বাদশে ফিরতে চলেছেন ১৬৬ জন। নভেম্বরে ৬ তারিখ ওই সমস্ত শিক্ষককে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা জানাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ১৬৬ জনের মধ্যে অধিকাংশকেই দেওয়া হল যেখানে আগে চাকরি করতেন সেই স্কুলে, আর সেখানে শূন্যপদ না থাকলে পার্শ্ববর্তী জেলার কোন‌ও স্কুলে। অর্থাৎ নিজের জেলায় চাকরি পেল না বহু শিক্ষক।

Advertisement

একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষিকা মালবিকা নন্দী বলেন, ‘‘৬ তারিখ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আমাদের নিয়োগপত্র দেবে বলে ডেকে পাঠিয়েছেন।‌ এখন‌ও পর্যন্ত স্কুল সার্ভিস কমিশনের অনুমোদনপত্র আমি হাতে পাইনি। তবে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এসএসসি থেকে তাতে আমার বাসস্থান দেখান হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। যা আমার বাড়ি থেকে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে। আমি ২০১৬ থেকে চাকরি করছি আমার নিজের হুগলি জেলায় ১৮ কিলোমিটার দূরে একটি স্কুলে।’’

মালবিকার মতো আর‌ও শিক্ষক শিক্ষিকা জানান, কেউ ২০১২, ২০১৩ সাল থেকে শিক্ষকতা করছেন সরকারি স্কুলে। ১৬ সালে প্রথম এসএলএসটি পরীক্ষা দিয়ে তিনি নিজের জেলায় ফিরে আসেন। এখন পুরনো চাকরি ফিরে পেলেও তাদের যেতে হবে অন্য জেলায় অনেক দূরে। শিক্ষা দফতরকে অনুরোধ করার পরও কোনো সুরাহা হয়নি।

Advertisement

২০১৬ এসএসসি প্যানেলের বাতিলের পর চাকরি গিয়েছে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীর। এ দের মধ্যে একমাত্র যাঁরা ২০১৬-র আগে সরকারি চাকরি করতেন, তাঁরা তাঁদের পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই মতো পুরনো চাকরিতে ইতিমধ্যে প্রাথমিকের ১,৯৮৯ জন ফিরে গিয়েছেন। এ বার নবম দশম ও একাদশ-দ্বাদশে এসএসসিতে সুপারিশপত্র দেওয়া হবে ৫৪৬ জনকে।

শুধু শিক্ষা জগত নয়, বিদ্যুৎ , স্বাস্থ্য, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, রাষ্ট্রীয় সংস্থায় বিভিন্ন পদে ফিরে গিয়েছেন বেশ কিছু চাকরিহারা। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, গত মাসের ২৫শে অক্টোবর নথি যাচাই করা হয় ৫৪৬ জন চাকরিহারার। যাঁরা পুরনো চাকরিতে ফেরার জন্য আবেদন করেছিলেন।

চাকরিহারা শিক্ষকদের দাবি কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে তাঁদের নিজের জেলায় স্কুল বাজারের সুযোগ করে দেওয়া হোক। কিন্তু তা মানা হয়নি বলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের অভিযোগ। অসুস্থতার কারণে বহু শিক্ষক এখন এই দূরবর্তী জেলায় যাবেন কী করে তা নিয়ে চিন্তিত।

স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, বর্তমানে যিনি যে স্কুলে কর্মরত সেই স্কুলে ওঁদের চাকরির কোন‌ও সম্ভাবনাই নেই। আবার তালিকায় নাম থাকা অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকার আগের স্কুলের বিষয়, লিঙ্গভিত্তিক শূন্যপদ, ক্যাটাগরি, মাধ্যম আর নেই। তা হলে সেখানে নিয়োগ হবে কী করে!

তবে এ বিষয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য ভিন্ন। তারা মনে করছেন শিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে পুরনো চাকরিতে ফেরানোর ক্ষেত্রে দেরি হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করার খেসারত দিতে হল তাঁদের। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘নিজের জেলায় যাতায়াতযোগ্য দূরত্বে পোস্টিং দিতে হবে এই নিয়ে আমরা বারবার আন্দোলন করেছি। কিন্তু সেটা হল না শুনে খারাপ লাগছে। এর জন্য দায়ী দফতরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা। এখন চাকরি পেয়েও যেতে হবে দূরের স্কুলে।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement