আন্দোলনে শামিল দৃষ্টিহীন চাকরিহারারাও। নিজস্ব চিত্র।
পেশা ছিল শিক্ষকতা। আপাতত তাঁদের পরিচয়, তাঁরা চাকরিহারা। দৃষ্টিহীন হওয়ায় তাঁদের ভবিষ্যৎ বুঝি আরও বেশি অন্ধকার। বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্কে অবস্থানরত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে দাঁড়াতে হাজির হয়েছেন অপর্ণা মজুমদার, সোমনাথ নিয়োগীরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্যানেল বাতিল হয়েছে। তাতেই চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের দৃষ্টিহীন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, “আমরা যোগ্য শিক্ষক। আমরা যদি পরবর্তী পরীক্ষায় পাশ না করি, তার দায় কি রাজ্য সরকার নেবে?”
স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে নতুন করে নিয়োগ বিধি এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে মে মাসের শেষ সপ্তাহে। তাতে বিশেষ ভাবে সক্ষম শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও বাড়তি সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এতেই হতাশ চাকরিহারা দৃষ্টিহীন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। রাইটার ছাড়া পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারাদের সাহায্য করতে কোনও রাইটার এগিয়ে আসবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।
চাকরি বহাল রাখার যায় কী না, তা নিয়ে বিবেচনার অনুরোধ করছেন বিশেষ ভাবে সক্ষম শিক্ষকরা। নিজস্ব চিত্র।
চাকরিহারা শিক্ষিকা অপর্ণা মজুমদার বলেন, “আমরা যদি রাইটার না পাই, যদি ফেল করি, তা হলে কী হবে? মুখ্যমন্ত্রী কি আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দেবেন?”
বুধবার ‘অল বেঙ্গল ব্লাইন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের অবস্থানে। ওই সংগঠনের ৭০ জন সদস্য এই মুহূর্তে চাকরিহারা। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, হাই কোর্টে ডিভিশন বেঞ্চে রায়ের পর সরকার সুপ্রিম কোর্টেও তারা নিজেদের কথা জানিয়েছেন। স্কুল সার্ভিস কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রী, রাজ্য সরকারের কাছেও সংগঠনের শিক্ষক শিক্ষিকাদের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে। তাদের ক্ষোভ, নিজেদের যোগ্যতায় পাওয়া চাকরি হারিয়ে পথে বসতে হয়েছে, সরকারের অনীহা ও চরম অবহেলার কারণে। সংগঠনের সভাপতি তাপস রায় বলেন, “সরকার যদি পরীক্ষা ব্যবস্থার বাইরে আমাদের চাকরি বহাল রাখতে পারে, তা হলে আমরা উপকৃত হই।”
এর আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন পরীক্ষার্থীদের আবেদনের সময়সীমা, প্যানেল প্রকাশের সম্ভাব্য সময়সীমা। এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৬ জুন থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। অনলাইনে আবেদন করার শেষ দিন ১৪ জুলাই।