কসবা আইন কলেজ। —ফাইল চিত্র।
কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতর ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং সেই সময়ের ভিডিয়ো করার অভিযোগ উঠেছে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্র ও দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। কলেজের নির্দিষ্ট সময় পেরিয়েও কিছু পড়ুয়া এবং ওই প্রাক্তনী কলেজপ্রাঙ্গনে থেকে গিয়েছিলেন সে রাতে। কী ভাবে তাঁরা থেকে যেতে পারলেন, তা নিয়ে প্রথম থেকেই উঠছে প্রশ্ন। এ বার প্রশ্ন উঠছে কলেজ উপাধ্যক্ষের গতিবিধি নিয়েও।
গত ২৫ কসবার ওই আইন কলেজের ভিতরে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। প্রথমেই উপাধ্যক্ষ নয়না চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন সে দিন তিনি মাত্র ১০ মিনিটের জন্য কলেজে গিয়েছিলেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, নয়না সে দিন সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে কলেজে ঢোকেন। সেই অনুযায়ী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরও করেন। তার পর ১০টা নাগাদ কলেজ থেকে বেরিয়ে যান।
কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে হাজিরা খাতায় অন্য তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই খাতায় নয়নার আসা-যাওয়ার সময়ে গরমিল রয়েছে। উপাধ্যক্ষ দাবি করেছিলেন, সিলেবাস কমিটির বৈঠক থাকায় তিনি সে দিন কলেজে এসে বেশি ক্ষণ থাকেননি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে যান। সে ক্ষেত্রে তিনি মিনিট দশেক কলেজে ছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে দাবি করেছিলেন। কিন্তু রেজিস্ট্রার খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে অন্য তথ্য। সেখানে নয়নার প্রবেশের সময় লেখা রয়েছে ‘৯:৫০’ আবার প্রস্থানের সময়ও লেখা রয়েছে ‘৯:৫০’। কিন্তু এই দুই ৯টা ৫০ মিনিট সকাল না সন্ধ্যা— তা কোথাও উল্লেখ করা নেই। তা ছাড়া, প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, দু’টি হাতের লেখাও পৃথক ব্যক্তির। ফলে প্রশ্ন উঠছে তাঁর গতিবিধি এবং হাজিরা খাতায় করা স্বাক্ষর নিয়ে।
গত ২৯ জুন থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল কলেজ প্রাঙ্গন। দীর্ঘ বৈঠক এবং আলোচনার পর সোমবার ৭ জুলাই কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় খুলেছে কলেজ। শুরু হয়েছে পঠনপাঠন। সকাল ৭টায় কলেজ খোলার পর অধ্যক্ষ-সহ শিক্ষক-অধ্যাপকেরা নিয়ম মেনেই উপস্থিত হয়েছেন। তাঁদের জন্য নতুন হাজিরার খাতা রাখা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পুরোনো খাতাটি এখন ব্যবহার করা যাবে না, এমনটাই জানানো হয়েছে। উপযুক্ত কারণ ছাড়া কোনও শিক্ষার্থীকেই কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বহিরাগত বা অন্য কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে বৈধ অনুমতি ছাড়া কলেজে প্রবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।