CU PG exam controversy

উপাচার্যের সই ছাড়াই সিদ্ধান্ত! পদত্যাগ করলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের অধ্যক্ষেরা

শিক্ষামহলের একাংশের অভিযোগ, এটি চূড়ান্ত অসম্মানজনক একটি সিদ্ধান্ত। এর ফলে কলেজের অধ্যক্ষদের নানা বাধার সম্মুখীন হতে হবে। এর প্রতিবাদে সিন্ডিকেটে যে ক’জন অধ্যক্ষ সদস্য রয়েছেন তাঁদের অনেকেই পদত্যাগ করলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৫ ১৯:৪৪
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে পদত্যাগ করলেন চারজন সিন্ডিকেটের অধ্যক্ষ। নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্নাতকত্তোর স্তরে পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কোনও কাজই করতে পারবেন না চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা। এর পরই শোরগোল পড়ে যায় অধ্যাপক মহলে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে যে ক’জন অধ্যক্ষ সদস্য রয়েছেন তাঁদের মধ্যে চার জন পদত্যাগ করলেন।

Advertisement

অভিযোগ, যেখানে নিয়োগ নেই বেশির ভাগ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সেখানে কাজ চলছে অতিথি শিক্ষক এবং রাজ্য সরকারি সাহায়তাপুষ্ট কলেজ শিক্ষক দিয়ে, সেখানে এমন বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া কী ভাবে হল! আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ এবং সারা বাংলা অধ্যক্ষ পরিষদ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (এবিপিসিসিউ) কমিটির সম্পাদক মানস কবি বলেন, ‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমাদের কোনও অধ্যক্ষের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। যাঁরা এই সিন্ডিকেটের সদস্য তাঁরা এই বিষয় কিছুই জানেন না। তাই সিন্ডিকেটের অনেক অধ্যক্ষই আজ পদত্যাগ করলেন।’’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে মোট ছ’জন অধ্যক্ষ সদস্য রয়েছেন। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে ওই ছ’জনের মধ্যে চার জন্য পদত্যাগ করেছেন। তিন জন সরাসরি সাংবাদিক বৈঠকে একজন অনলাইনে পদত্যাগ করেন। সরাসরি পদত্যাগ করেছেন বঙ্কিম সর্দার কলেজের অধ্যক্ষ তিলক চট্টোপাধ্যায়, যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কা, উইমেনস কলেজ ক্যালকাটার অধ্যক্ষ অনুপমা চৌধুরী এবং অনলাইনে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ধ্রুবচাঁদ হালদার কলেজের অধ্যক্ষ সত্যব্রত সাউ।

Advertisement

সিন্ডিকেটের অধ্যক্ষদের একাংশের অভিযোগ, এটি চূড়ান্ত অসম্মানজনক সিদ্ধান্ত। এর ফলে কলেজের অধ্যক্ষেরা নানা বাধার সম্মুখীন হবেন। পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তে পড়ুয়াদের মধ্যেও বৈষম্য আনা হচ্ছে। সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত দ্রুত তুলে নেওয়া উচিত।

২৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা নিয়ে নির্দেশিকা দেওয়া হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতকোত্তর কলেজগুলির পড়ুয়ারা কোথায় পরীক্ষা দেবেন তার তথ্য দেওয়া রয়েছে। তবে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের পরীক্ষার স্থল নিয়ে কোনও তথ্য । এ ছাড়াও সিন্ডিকেটের প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে সরাসরি উল্লেখ রয়েছে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং অতিথি শিক্ষকেরা স্নাতকোত্তর স্তরের পরিদর্শন, পরীক্ষা মূল্যায়ন-সহ কোনও কাজই করতে পারবেন না।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সিন্ডিকেটে সরকার মনোনীত প্রতিনিধি ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ‘সভার খসড়া কার্যবিবরণী’ যথাযথ জায়গায় প্রচার করার কথা জানানো হয়েছিল। ওই খসড়া তো পাঠানো হয়ইনি বরং রেজিস্ট্রার জানান এই সিদ্ধান্তে উপাচার্য সইও করেননি। শীঘ্রই এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হোক।’’

ওমপ্রকাশের আরও অভিযোগ, তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, উপাচার্যের সই ছাড়াই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কী ভাবে হল, তিনি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের এটি ‘স্বাভাবিক প্রক্রিয়া’। আর এর পরেই এটি একটি বেআইনি পদক্ষেপ বলে ক্ষিপ্ত হয় ওঠে শিক্ষামহলের একাংশ। তাঁরা দ্রুত এই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়া দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, আনন্দবাজার ডট কমের তরফে এই বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে ফোন করলে তাঁরা কেউই ফোন ধরেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement