WBSCC Delhi Protest

চার মাস বেতনহীন, ‘যোগ্য’ হয়েও বঞ্চনার শিকার, দিল্লির দরবারে শিক্ষাকর্মীরা

গত ৩ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে রাজ্যের ‘যোগ্য’ তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৫ ২১:১০
Share:

নিজস্ব চিত্র।

‘যোগ্য’ হয়েও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে আজ তাঁরা চাকরিহারা। নিজেদের কষ্টের কথা শুধু রাজ্যের মানুষের কাছে নয়, জাতীয় স্তরে তুলে ধরতে এ বার সেই শিক্ষাকর্মীরাও দিল্লি রওনা হলেন।

Advertisement

৩ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক শিক্ষাকর্মীর প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে রাজ্যের ‘যোগ্য’ তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়। তার পর থেকে চার মাস অতিক্রান্ত। ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেতন পেলেও গ্রুপ সি ও ডি কর্মীরা তা থেকে বঞ্চিত।

স্কুলের চাকরি হারিয়ে দিনমজুর থেকে ডেলিভারি বয়ের কাজ করছেন অনেকে।

Advertisement

চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের পক্ষে অমিত মণ্ডল বলেন, ‘যোগ্য-অযোগ্য বিভাজন না হওয়ায় আজ আমাদের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। আমরা কেউ স্কুলে যেতে পারছি না। গত কয়েক মাস ধরে বেতন‌ও পাচ্ছি না। মুখ্যমন্ত্রী ভাতার ঘোষণা করেছিলেন। তাও পেলাম না। আমাদের পরিবার এখন প্রায় পথে বসেছে।’’

‘যোগ্য’ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি অধিকার মঞ্চে ১৫ জনের একটি দল মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশন থেকে দিল্লি উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সোমবার থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছিল লোকসভায় বাদল অধিবেশন। চাকরি ভারতের একাংশ বলেন, ‘‘প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে আমাদের চাকরি গিয়েছে। আমরা দিল্লিতে আমাদের করুণ অবস্থান তুলে ধরব।’’

গ্রুপ ডি কর্মী পূরবী ম‌ণ্ডল বলেন, ‘‘হঠাৎ করে চাকরি চলে যাওয়ার বিপর্যয় নেমে এসেছে। কিছুদিন আগে একটা কাজ করতাম। কিন্তু সেটা মরশুমে একবার হয়। বিপত্তারিণী পূজোর আগে হাতে বাঁধা সুতো প্রচলন রয়েছে। তা বানিয়ে বিক্রি করতাম। এখন সেটাও নেই।’’

সুষমা দাস গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মী। তাঁর মেয়ে কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত, চিকিৎসার জন্য অর্থের প্রয়োজন। চাকরি হারিয়ে সংসার চালানো এবং মেয়ের চিকিৎসা কী ভাবে করাবেন জানা নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ে কঠিন রোগে আক্রান্ত। ডাক্তারের খরচ প্রচুর। ভ্যাকসিন এর খরচ প্রায় ৬০০০ টাকা। না দিলে মেয়েটাকে বাঁচানো কঠিন।’’

ইতিমধ্যেই দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছে যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ২৩ ও ২৪ ধর্না অবস্থানে বসবেন। সেখানে একসঙ্গে আন্দোলনের যোগ দেবেন শিক্ষাকর্মীরাও। যৌথ ভাবে তাঁরা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ এবং সাক্ষাৎকারের চেষ্টা করবেন। তাঁদের বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানাবার জন্য দিল্লিতে সাধারণ মানুষকে লিফলেট ও বিলি করবেন।

আদালতে এসএসসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী 'যোগ্য' শিক্ষা কর্মী রয়েছে ৩৩৯৪ জন। এরমধ্যে ১২৫৫ জন গ্রুপ সি এবং ২১৩৯ গ্রুপ ডি। এপ্রিলের শেষে ভাতা ঘোষণা করেছিল মুখ্যমন্ত্রী। গ্রুপ সি-কে ২৫০০০। গ্রুপ ডি-কে ২০ হাজার। মে মাসে তার গেজেট নোটিফিকেশনও প্রকাশিত হয়। পরে সেই নোটিফিকেশন আদালতে চ্যালেঞ্জ হলে তা বাতিল হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement