Children in Rindanga village

মাতৃভাষা বাংলা নয়, স্কুলের পড়া বুঝতে না পারা কোড়া-শিশুদের পথ দেখাচ্ছেন এমবিএ দিদিমণি

২০১৯ সাল থেকে ঈশানীর সঙ্গে ওদের পথ চলা শুরু। এখন ঋণডাঙা গ্রামের ১৮ জনকে বাংলা শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছেন ঈশানী। রোজ নিয়ম করে গ্রামে যান। বাংলা ভাষার খুঁটিনাটি হাতেকলমে পাঠ দেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:০১
Share:

পথবাতির আলোয় আসে শিক্ষার আভা! নিজস্ব চিত্র।

কোড়া উপজাতির ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আজকাল স্কুলে যাচ্ছে। বীরভূমের প্রত্যন্ত ঋণডাঙা গ্রামের ওই শিশুগুলি অবশ্য পড়ে বাংলা মাধ্যম স্কুলে। ফলে মাতৃভাষা কোড়া ছেড়ে বাংলায় সব পড়াশোনা বুঝে নিতে, লিখতে-পড়তে খানিক অসুবিধা হয় বৈকি! তবু, ওরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবু, ওরা স্বপ্ন দেখে।

Advertisement

ভোর হতেই ঋণডাঙা গ্রামীণ জীবন ঘিরে ধরে ব্যস্ততা। চাষের কাজে বা পাড়ার মোড়ে ছোট চায়ের দোকানেই রোজগার। কেউ কেউ যান সাইকেল নিয়ে বোলপুর শহরের দিকে, কোনও কাজের সন্ধানে। এ গ্রামের সব ঘরে এখনও নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। তবে পথবাতি রয়েছে। রোজের খাওয়ায় পান্তা-সর্বস্ব। দামী মুঠোফোন বা রঙিন জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখনও পা ফেলেনি এ গ্রামে। ছোটরা অবশ্য স্বপ্ন দেখে, বড় হওয়ার স্বপ্ন। কেউ চিকিৎসক, কেউ পুলিশ কেউ আবার উকিল হতে চায়। ওরা পড়াশোনা করতে চায়। ইটভাটায় কাজ করা একাকী মা-ও কষ্ট করে স্কুলে পাঠান মেয়েকে। কিন্তু প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা স্কুলের পড়ায় মন দিতে পারে কি?

এই পড়ুয়াদের নিয়েই কাজ করেন শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা ঈশানী বিশ্বাস। এমবিএ ডিগ্রি থাকলেও চাকরির বদলে এই শিশুদের নিয়ে কাজ করতে ভালবাসেন তিনি। বাংলামাধ্যম স্কুলের এই সব পড়ুয়ারা বাড়ি ফিরে ভাল করে পড়া বুঝে নেয় ঈশানীর কাছে। শেখে বাংলা, গল্প, কবিতা, ছবি আঁকা— আরও কত কী।

Advertisement

ঈশানী বলেন, ‘‘নিয়ম করে ওদের পড়াতে যাই। স্কুলের পড়া সবটা বুঝে নেওয়ার মতো ক্ষমতা এখনও তৈর হয়নি ওদের। বাড়িতেও সাহায্য করার মতো কেউ নেই। তাই সে কাজটা আমিই করে দিই।”

২০১৯ সাল থেকে ঈশানীর সঙ্গে ওদের পথ চলা শুরু। এখন ঋণডাঙা গ্রামের ১৮ জনকে বাংলা শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছেন ঈশানী। রোজ নিয়ম করে গ্রামে যান। বাংলা ভাষার খুঁটিনাটি হাতেকলমে পাঠ দেন। এখানেই শেষ নয়, ছবি আঁকা শেখানো, মেয়েদের সুরক্ষার পাঠও দিয়ে থাকেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বরাবরই ইচ্ছে ছিল অন্য রকম কিছু করব। আর ওদের সঙ্গে কাটানো সময়টা আমি খুবই উপভোগ করি। প্রত্যেকেরই বয়স ৫ থেকে ১৮। ওদের শেখার খুব আগ্রহ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement