UGC NET JRF 2025 Topper

মা–ই বাবা! কলকাতাতেই কাজ করতে চান ইউজিসি নেট-এ দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বাংলার রিক্তা

চলতি বছরের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তরফে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (নেট)-এ দেশের মধ্যে গণজ্ঞাপন ও সাংবাদিকতা বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছেন রিক্তা চক্রবর্তী। দেশের মধ্যে এই বিভাগে মোট পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৬৪৬৩ জন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ২০:৫৬
Share:

মা ও ভাইয়ের সঙ্গে রিক্তা চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।

বয়স তখন ৯ পেরিয়ে ১০ ছুঁইছুঁই। হঠাৎ হারিয়ে গেল মাথার ছাদ! তারপর থেকে মায়ের আঁচলের ছায়াতেই মানুষ হওয়ার লড়াই শুরু করেছিলেন মধ্যমগ্রামের রিক্তা চক্রবর্তী। চলতি বছরের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তরফে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (নেট)-এ দেশের মধ্যে গণজ্ঞাপন ও সাংবাদিকতা বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছেন তিনি। দেশের মধ্যে এই বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলেন মোট ৬৪৬৩ জন। তার মধ্যেই দ্বিতীয় স্থানে রিক্তা। প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৯৮৪ পার্সেন্টাইল। জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ (জেআরএফ) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসাবে আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করেছেন রিক্তা।

Advertisement

কী ভাবে এল এই সাফল্য—

এমন প্রশ্নে প্রথমে কিছু সেকেন্ড নিশ্চুপ থেকে উত্তর এল, ‘‘জ়ার্নিটা ডেফিনেটলি লং ছিল!’’ প্রথম কয়েক সেকেন্ডের নিস্তব্ধতা বুঝিয়ে দিল রিক্তার এমন ফলের পিছনে রয়েছে বেশ কিছু বছর, হাজার হাজার ঘণ্টার প্রচেষ্টা। তাঁর কথায়, ‘‘এমন ফল শুধু আমার চেষ্টার জন্য নয়। আমার পরিবার, মা এবং অধ্যাপকদের নিয়মিত সাহায্যও রয়েছে।’’

Advertisement

চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ বাবাকে হারিয়ে ফেলেন রিক্তা। তারপর পরিবার বলতে মা এবং ভাই। মা রিনা চক্রবর্তী বর্তমানে রেলে কর্মরত। মায়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই রিক্তা বলেন, ‘‘মা সবসময় বলেন আমি তোদের বাবা ও মা, একসঙ্গে। যতদূর ইচ্ছে পড়াশোনা কর। আমি আছি!’’ ছোট ভাই আইন নিয়ে পড়াশোনা করছেন এখন।

সাংবাদিকতা নিয়ে হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ ফর উইমেন থেকে প্রথমে স্নাতক হন। এর পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা নিয়েই স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। অবসরে ভালবাসেন সিনেমা দেখতে। বাংলা-ইংরেজি-হিন্দি বলে নয়, যে কোনও ভাল সিনেমাই দেখতে বেশ পছন্দ করেন রিক্তা। পেশা নির্বাচনে কলকাতা ছাড়তে নারাজ সে। এর পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রির অর্জনের দিকে এগোবেন রিক্তা।

প্রসঙ্গত, সর্বভারতীয় স্তরের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তাক লাগানো ফল রাজ্যের কৃতীদের। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “২০২৫-এর ইউজিসি নেট জুনের ফলাফলে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার নিলুফা ইয়াসমিনকে বাংলায় ১০০ পার্সেন্টাইল পাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল। একই সঙ্গে গণজ্ঞাপন এবং সাংবাদিকতায় সর্বভারতীয় স্তরে দ্বিতীয় হওয়ার জন্য রিক্তা চক্রবর্তীকেও অভিনন্দন। তোমাদের কৃতিত্বে রাজ্য গর্বিত। তোমাদের মা-বাবা, অভিভাবক এবং শিক্ষকদেরও অভিনন্দন।” চলতি বছরের ইউজিসি নেট-এ জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ (জেআরএফ) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসাবে আবেদনের যোগ্যতা অর্জনে দেশে বাংলা বিষয়ে সর্বভারতীয় স্তরে তিন হাজার ৬৮৪ জনের মধ্যে প্রথম হয়েছেন কাটোয়ার নিলুফা ইয়াসমিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement