গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম
বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) হিসাবে রাজ্যের নিযুক্ত করা হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সোমবারই ঘোষণা হতে চলেছে গোটা দেশে ভোটার তালিকায় বিশেষ পরিমার্জন বা এসআইআর। যেখানে এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এই প্রক্রিয়ার ফলে বিপাকে পড়েছে বহু স্কুল। প্রতিষ্ঠানগুলির প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, সামনেই যে রকম মাধ্যমিকের টেস্ট ও চূড়ান্ত পরীক্ষা। তার পরেই উচ্চ মাধ্যমিক রয়েছে। পাশাপাশি প্রাথমিকে সামেটিভ ও স্কুলগুলির পঠনপাঠান রয়েছে। শিক্ষক না থাকলে এই কাজগুলি করবেন কারা।
সারা রাজ্য বুথ বেড়ে হয়েছে প্রায় এক লক্ষ। আর সমসংখক অফিসারও নিযুক্ত করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। স্থায়ী পদে কর্মরত কর্মী আধিকারিকদের বিএলও হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। যার মধ্যে সিংহভাগ রয়েছেন প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত স্থায়ী শিক্ষক শিক্ষিকারা। প্রধান শিক্ষকদের অনেকেই বলছেন, সামনেই উচ্চ মাধ্যমিকের চতুর্থ সেমেস্টার। কোনও বিষয়ে একজন শিক্ষকও না থাকলে পঠনপাঠন হবে কী করে?
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা একটি উদ্বেগের বিষয়। আমরা স্কুলগুলির সঙ্গে কথা বলছি। পাশাপাশি সরকারের সঙ্গেও কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা অঞ্চলের বৃন্দাবনচক প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত জানা বলেন, ‘‘আমাকে নিয়ে স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক রয়েছে তিনজন। ইতিমধ্যেই একজন শিক্ষককে দূরবর্তী স্থানে বিএলওর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আরও একজনকে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে। স্কুল চলবে কী করে?"
একই ছবি কলকাতায় বিভিন্ন সরকার সরকার ঘোষিত ও সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির। কোথাও ছাত্র সংখ্যা ১১০০-১৩০০ মতো। বেশির ভাগ স্কুলে স্থায়ী শিক্ষক রয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ জনের মধ্যে। সেখান থেকে বিএলও অফিসার হিসেবে নিয়ে নেওয়া হয়েছে ১২ থেকে ১৩ জন করে শিক্ষককে।
ভবানীপুর মিত্র ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘একদিকে এসএসসির ফলে শিক্ষক পদ শূন্য হচ্ছে। তার উপর কমিশনের কাজের জন্য শিক্ষকেরা নিযুক্ত হওয়ার ফলে স্কুলের স্বাভাবিক পঠনপাঠন চলবে কী করে। শিক্ষকের বিকল্প তো শিক্ষকরাই। তা আমরা পাব কোথা থেকে?’’
ইতিমধ্যেই বিএলওর কাজে এত শিক্ষক নেওয়ার প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন সংগঠন ও মঞ্চগুলি। তারা জানান, রাজ্যে প্রায় ৯৪ হাজার বুথ। এর মধ্যে শিক্ষকরা ৯০% এর বেশি বুথে বিএলও। এসআইআর এর কাজ শুরু হলে বিএলও-রা কোনও ভাবেই বিদ্যালয়ে পাঠদানের কাজে নিয়মিত সংযুক্ত থাকতে পারবেন না। শিক্ষার অধিকার দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষকদের এই কাজে লাগানোর তীব্র বিরোধিতা প্রথম থেকেই তাঁরা করে আসছেন।