শিক্ষা-স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে এক ধাপ এগোলো ইআইআইএলএম কলকাতার টিএলএফ। নিজস্ব চিত্র।
দিনের অর্ধেক সময় কাটে মুঠোফোনের রঙিন পর্দায় অথবা, অফিসের ল্যাপটপের নীল আলোয়। তার ফল খুব ভাল হচ্ছে না। খুব ছোট থেকেই স্কুলের শেষ বেঞ্চে বসে ব্ল্যাকবোর্ডের লেখা নজরে পড়ছে না! ঘুম নেই রাতে। চোখের উপর চাপ বাড়ছে, তাই বাড়ছে অস্বস্তিও। নানা কাজে হাজার হাজার টাকা খরচ করলেও চোখের স্বাস্থ্য যেন উপেক্ষিতই থেকে যায়। সেই চোখেরই খেয়াল রাখল কলকাতার ইআইআইএলএম-এর ‘টুওয়ার্ডস লাইফ ফাউইন্ডেশন (টিএলএফ)।’
৩ অগস্ট ২০২৫-এ সমাজ উন্নয়নের পথে আরও এক ধাপ এগোল টিএলএফ। সামাজিক ও পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে তাদের নতুন কেন্দ্রের উদ্বোধন হয় উল্টোডাঙায়। উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ‘সুশ্রুত আই ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’-এর সহায়তায় বিনামূল্যে চোখের পরীক্ষার শিবিরের আয়োজন করা হয়। অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া বহু মানুষের চক্ষু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে নানা চক্ষু পরীক্ষা করা হয় বিনামূল্যে। স্বল্প খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ইআইআইএলএম কলকাতার চেয়ারম্যান আরপি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যের উপর ভিত্তি করেই মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন সম্ভব। উল্টোডাঙ্গার এই কেন্দ্রে শুধু যে সেবা প্রদান করা হচ্ছে এমনটা নয়, পাশপাশি ঐক্যের বার্তাও বহন করছে এই কেন্দ্র। শিক্ষা ও সহানুভূতি যখন সচেতন কাজের সঙ্গে মিলিত হয়, তখনই আসল পরিবর্তন শুরু হয়।’’
উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্টরাও। নিজস্ব চিত্র।
ওই দিনের উদ্বোধন প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্টরাও। রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য কিশোর রাউথ, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা গৌরব চক্রবর্তী, ঋদ্ধিমা ঘোষ, উল্টোডাঙা বিবেকানন্দ ক্লাবের সভাপতি অচিন্ত্য কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক রাজর্ষি দাস, ইআইআইএলএম কলকাতার চেয়ারম্যান আরপি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং টিএলএফ-র কর্ণধার শিপ্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানের মর্যাদা বৃদ্ধি করে।
টিএলএফ এমন প্রচেষ্টার লক্ষ্য প্রসঙ্গে শিপ্রা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রটি শুধু যে নিজেদের সম্প্রাসারণ করছে এমনটা নয়। প্রতিটি শিশু ও তাদের পরিবার, যারা আমাদের উপর ভরসা রাখেন তাদের কাছে এটি একটি প্রতিশ্রুতি। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা, তাদের সুস্থ জীবন প্রদান করাই আমাদের ভবিষ্যতের অঙ্গীকার।”
ইআইআইএলএম কলকাতার-র শিক্ষাগত বৈচিত্র্যের একটি অংশ টিএলএফ। প্রচলিত সমাজ উন্নয়ন কার্যকলাপ (সিএসআর)-র থেকে আলদা হয়ে ভিন্ন ভাবে কাজ করে থাকে তারা। এর আওতায় প্রান্তিক শিশুদের ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় পাঠ দান করেন পড়ুয়ারা। সঙ্গে থাকে ইংরেজি কথপোকথনের ক্লাসও। কলকাতার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ইআইআইএলএম-র প্রথম, যারা সরাসরি শিক্ষাকে এ ভাবে যুক্ত করেছে সমাজ উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে।
উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। নিজস্ব চিত্র।
২০০৬-এ যাত্রা শুরুর সময় থেকে টিএলএফ বহু মানুষের জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তন এনে চলেছে। নতুন আরও একটি কেন্দ্র চালু হওয়ার ফলে তাদের কাজের পরিসরে প্রভাব বিস্তার করতে প্রস্তুত টিএলএফ। ‘প্রাণ দীপ্তি- দ্য গ্লোয়িং ভাইটাল’— এই মন্ত্রেই নিত্যদিন কাজ করছে টিএলএফ। যেখানে শুধু সাক্ষরতার স্বার্থেই নয়, তারা এগিয়ে চলেছে শিশু পুষ্টি, সাস্থ্যসেবা-সহ সমাজের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে। অবসন্ন চোখের শেষ অশ্রুটুকুও মুছে ফেলার অঙ্গিকারে অবিরাম কাজ করে চলেছে ইআইআইএলএম কলকাতার -র ‘টুওয়ার্ডস লাইফ ফাউইন্ডেশন।’