WB Madhyamik 2024

পরীক্ষকদের দেখতে হবে মাধ্যমিকের ইংরেজি মাধ্যমের খাতাও, নির্দেশের জেরে বাড়ছে অস্বস্তি

চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির তরফেও উত্তরপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। সেই খাতা দেখতে হবে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। পর্ষদের এ হেন নির্দেশের জেরে পরীক্ষকদের মধ্যে বাড়ছে অস্বস্তি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি

১২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। ২৯ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে উচ্চ মাধ্যমিক। তবে ইতিমধ্যেই পরীক্ষকদের কাছে খাতা দেখার নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনও তা বাকি রয়েছে। তবে, এই পরীক্ষার খাতা দেখার বিষয়ে নতুন নির্দেশ পাওয়ায় অস্বস্তি বাড়ছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্য়ে। কারণ, চিরাচরিত পদ্ধতিতে বাংলা মাধ্যমের খাতা দেখার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ইংরেজি মাধ্যমের খাতাও তাঁদেরই দেখতে হবে বলেই নির্দেশ।

Advertisement

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে বহু পরীক্ষকের কাছে এমন নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে, যেখানে একই সঙ্গে বাংলা এবং ইংরেজি মাধ্যমে লিখিত উত্তরপত্র দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কতগুলি খাতা তাঁদের দেখতে হবে, তার সংখ্যাও উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে সূত্রের খবর, পরীক্ষকরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা উল্লেখ করে পাল্টা পর্ষদের কাছেই ইংরেজি মাধ্যমের খাতা দেখা থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছেন বেশ কিছু পরীক্ষক। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অ্যাডভান্সড সোস্যাইটি ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হঠাৎ করে ইংরেজি মাধ্যমের উত্তরপত্র দেখার নির্দেশ দেওয়া হলে তাঁদের পক্ষে তা যথাযথ ভাবে পালন করা যথেষ্ট সমস্যার। বাস্তবিক এই সমস্যার কথা মাথায় রেখে পর্ষদকে খাতা দেখার ক্ষেত্রে পরীক্ষকদের সঠিক ভাবে বেছে নিতে হবে। অন্যথায়, সঠিক সময়ে খাতা দেখা সম্পূর্ণ না হলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে।”

Advertisement

প্রসঙ্গত, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) এবং ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইসিএসই) বোর্ডের সঙ্গে পাল্লা দিতেই শেষ কয়েক বছরে ধাপে ধাপে বিভিন্ন সরকারি স্কুলগুলিতে ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করা হয়। চলতি বছরেই মাধ্যমিক পরীক্ষায় তেমন ১০০-র বেশি স্কুলের তরফে ইংরেজি মাধ্যমে উত্তরপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। তাই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে সেই সমস্ত খাতা দেখার জন্যে পরীক্ষকদের কাছে নিয়মমাফিক নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।

এই বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ইংরেজি মাধ্যমে উত্তরপত্র দেখতে হলে ভুল মূল্যায়নের সমস্যা তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থীরাও প্রাপ্য নম্বর থেকে বঞ্চিত হতে পারে। ইতিমধ্যেই বহু পরীক্ষক পর্ষদকে চিঠি লিখে এই বিষয়ে আর্জি জানিয়েছেন। ”

চলতি বছরের মাধ্যমিকে বসেছে ৯,২৩,০১৩ জন পরীক্ষার্থী। উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭,৯০,০০০। পর্ষদ সূত্রে আগেই জানানো হয়েছিল, মাধ্যমিকে ইংরেজি মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়েছে, এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি। সেই হিসাবে পৃথক ভাবে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষক-স্ক্রুটিনিয়ারের সংখ্যা যথাক্রমে প্রায় ৫১৮৩৮ হাজার এবং ৫৫ হাজার। আর মাধ্যমিকে প্রধান পরীক্ষকের সংখ্যা প্রায় ১,৪৭৮

কলকাতার যাদবপুর বিদ্যাপীঠও ইংরেজি মাধ্যমে পঠনপাঠন চালু করেছে বেশ কয়েক বছর হল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “স্কুলের প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষিকা যোগ্যতার নিরিখে এই কাজের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই সচেতন ভাবে উত্তরপত্র দেখলেই এই নিয়ে যাবতীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব।”

প্রসঙ্গত, মাধ্যমিকে মোট সাতটি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান বিভাগের গণিত, ভৌতবিজ্ঞান এবং জীবনবিজ্ঞান এবং কলা বিভাগের ভূগোল এবং ইতিহাস বিষয়গুলি রয়েছে। এই প্রসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক আধিকারিকের বক্তব্য অনুযায়ী, উল্লিখিত বিষয়ের মধ্যে বেশির ভাগ বিষয়ই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ইংরেজি মাধ্যমে পাঠগ্রহণ করা বাধ্যতমূলক হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখার জন্য এই ধরনের সমস্যা কাঙ্ক্ষিত নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন