প্রতীকী চিত্র।
ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে ভারসাম্য আনতে ফের উদ্যোগী রাজ্যের শিক্ষা দফতর। স্থগিত হওয়া ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’ ফের চালু করতে চলেছে দফতর। ১৯৩ জন শিক্ষকের বদলির অনুমোদন পাঠানো হল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-কে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলি প্রক্রিয়াতেও। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সরকারের তরফে ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর আওতাধীন বদলি প্রক্রিয়ার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এ বার আবার ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’ প্রক্রিয়া ফিরতে চলেছে। রাজ্য সরকার নতুন করে ১৯৩ জন শিক্ষকের নামে ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর অনুমোদন পাঠিয়েছে এসএসসিকে। তবে এই বদলি এ বার হবে জেলাভিত্তিক। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বদলি হবে না, এমনই খবর শিক্ষা দফতর সূত্রে।
ছাত্র-শিক্ষকের সংখ্যার অনুপাতে সামঞ্জস্য রাখতে ২০২৩ সালে রাজ্য সরকারের তরফে ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর প্রক্রিয়া চালু করা হয়। তখনই প্রায় ৬০০ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলির করে দেয় সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন শিক্ষকরা।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “যে কোনও বদলিতে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত যথাযথ কি না, তা যাচাই করা দরকার। এটা সব সময় করা হয় না।”
বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শিক্ষকেরা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরই ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। এমনকি বলা হয়েছিল, এই প্রক্রিয়ায় যাঁদের ইতিমধ্যে বদলি করা হয়েছে, তাঁদের আবার পুরনো কর্মস্থলেই ফেরানো হবে।
শিক্ষক মহলের একাংশের অভিযোগ ছিল, প্রশাসনিক বদলির নামে দূরবর্তী স্থানে বদলি করে দেওয়া হচ্ছিল। এমনকি চিকিৎসাজনিত কারণে বদলির আবেদনও খারিজ করা হয়েছিল অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকার। তাই তাঁরা সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন, জেলাভিত্তিক বদলি চালু করা হোক।
সেই আর্জিতে সাড়া দিয়েই সরকারের তরফ থেকে নতুন করে প্রায় ১০০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’-এর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্য থেকে প্রথম দফায় ১৯৩ জনের এই বদলির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে সরকার যখন সারপ্লাস ট্রান্সফার নিয়ে মামলা জিতে গেল এবং কিছু লোক শিক্ষকসমাজকে বিপদের মধ্যে ফেলে দিল, তখন সঙ্গে সঙ্গেই আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলাম ‘সারপ্লাস ট্রান্সফার’ হোক কিন্তু সেটা মানবিক হওয়া চাই। শিক্ষক শিক্ষিকারা বদলি চাইছেন, কিন্তু দূরে হলেই আপত্তি উঠছে। সরকার এ বার আমাদের আবেদন শুনেছে এবং জেলার মধ্যেই তাঁদের বদলি হবে।”