কলকাতার কলেজ হস্টেল থেকে শনিবার সকালে বেরিয়েছিল আলোলিকা দলুই। অথচ শনিবার সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও ওই তরুণী বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়েন তাঁর পরিজন ও বান্ধবীরা। এ দিন রাতে তাঁর সহপাঠীরা কলকাতার আলিপুর থানায় আলোলিকার নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। রবিবার সকালে তমলুক শহর সংলগ্ন পায়রাটুঙির কাছে রূপনারায়ণ নদীর চরে মেদিনীপুরের ধর্মার বাসিন্দা আলোলিকা দোলুইয়ের (১৮) দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে রূপনারায়ণের চরে স্থানীয়রা এক তরুণীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৃতের কাছে থাকা পরিচয়পত্র থেকে তাঁর নাম জানতে পারে। ওই তরুণীর বাড়ি মেদিনীপুর শহরের ধর্মার বিবেকানন্দনগরে। কলকাতার ‘যোধপুর উইমেনস পলিটেকনিক কলেজ’-এ কম্পিউটার সায়েন্সের প্রথম বর্ষের ছাত্রী আলোলিকা কলেজের হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর কাছ থেকে একটি টাকার ব্যাগ, ফোন নম্বর লেখা ‘নোট বুক’, আধার কার্ড, হাওড়া থেকে মেদিনীপুর স্টেশন পর্যন্ত যাওয়ার ট্রেনের টিকিট পাওয়া গিয়েছে। টাকার ব্যাগে নগদ আড়াইশো টাকা ও কাগজে মোড়া অবস্থায় সিঁদুরও পাওয়া গিয়েছে। ওই তরুণীর বাবা অনন্ত দোলই পেশায় শিক্ষক। আগে কেশপুরের পারুলিয়া গ্রামে অনন্তবাবুরা থাকতেন। পরে ধর্মা এলাকায় বাড়ি করে চলে আসেন তাঁরা।
ওই তরুণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনন্তবাবুর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে বিবাহিত। ছোট মেয়ে আলোলিকা মেদিনীপুরেরই একটি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে মাধ্যমিক পাশ করে। তারপরেই কলকাতার ওই কলেজে পলিটেকনিক পড়তে ভর্তি হয় সে। মাঝে-মধ্যেই সে বাড়িতে আসত। আলোলিকার সঙ্গে মেদিনীপুর শহরে স্থানীয় এক যুবকের প্রেম ছিল । ওই যুবকের সঙ্গে বিয়ে করতে চেয়েছিল ওই তরুণীর। আলোলিকার পরিবার সূত্রে দাবি, আলোলিকার সঙ্গে মেদিনীপুর শহরেরই এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। ওই যুবককে বিয়েও করতে চেয়েছিল ওই তরুণী। কিন্তু পরিবারের লোকেরা বিয়ে দিতে অস্বীকার করায় তা নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল বলেও অভিযোগ।