কালো টাকা কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে তিন জনের নাম জানাল কেন্দ্র

যাবতীয় জল্পনা সত্যি করে বিদেশি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে কালো টাকা গচ্ছিত রেখেছেন এমন তিন জনের নাম সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ওই তিন জন হলেন প্রদীপ বর্মণ, পঙ্কজ চিমনলাল লোধিয়া এবং রাধা এস টিম্বোলা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৪ ১৪:৩০
Share:

যাবতীয় জল্পনা সত্যি করে বিদেশি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে কালো টাকা গচ্ছিত রেখেছেন এমন তিন জনের নাম সোমবার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ওই তিন জন হলেন প্রদীপ বর্মণ, পঙ্কজ চিমনলাল লোধিয়া এবং রাধা এস টিম্বোলা। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র ইস্তেহারে বিদেশি ব্যাঙ্কে রাখা কালো টাকা উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি ছিল। সেই কারণে বিজেপি-র মুখপাত্র সম্বিত্‌ পাত্র এ দিন বলেন, “নামপ্রকাশের প্রক্রিয়া শুরু হল। কালো টাকা কাণ্ডে আজ এক ঐতিহাসিক দিন।”

Advertisement

তালিকায় যে তিন জনের নাম এ দিন প্রকাশ পেয়েছে তাঁদের মধ্যে প্রদীপ বর্মণ ডাবর গ্রুপের প্রাক্তন এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর। রাজকোটে প্রোমোটারির ব্যবসা রয়েছে পঙ্কজ চিমনলালের। অন্য নামটি যাঁর সেই রাধা এস টিম্বোলা গোয়ার এক জন খনি ব্যবসায়ী। তিন জনের বিরুদ্ধেই আয়কর এবং আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত আইনে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কেন্দ্রের ওই হলফনামায় তাদের প্রাক্তন ডিরেক্টরের নাম থাকায় কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছে ডাবর। এ দিন এক বিবৃতি দিয়ে ওই সংস্থা জানায়, প্রদীপবাবুর ওই অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ ভাবে বৈধ। তালিকায় তাঁর নাম থাকাটা দুর্ভাগ্যজনক। বিদেশি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট আছে এমন সব ব্যক্তিদের ‘একই তুলিতে রং করা হচ্ছে’ বলে ওই সংস্থার অভিযোগ। তাদের দাবি, সমস্ত নিয়মকানুন মেনে প্রদীপবাবু এক জন অনাবাসী ভারতীয় হিসেবে ওই অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। এমনকী, ওই অ্যাকাউন্টের কথা এ দেশের আয়কর দফতরকে জানানো হয়। সেই সংক্রান্ত করও মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ওই সংস্থার দাবি।

Advertisement

রাজকোটের শিরজি ট্রেডিং কোম্পানির কর্ণধার পঙ্কজ চিমনলাল লোধিয়াও কালো টাকার মালিকের তালিকায় তাঁর নাম থাকায় মর্মাহত। সমস্ত কর মিটিয়ে দেওয়ার পরেও কী ভাবে কেন্দ্র তাঁর নাম তালিকায় রেখেছে তা অবাক করেছে লোধিয়াকে। গোয়ার খনি ব্যবসায়ী টিম্বোলাও বুঝতে পারছেন না, কেন তাঁর নাম শীর্ষ আদালতে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে।

লোকসভা ভোটের সময় নির্বাচনী ইস্তাহারে বিজেপি জানিয়েছিল, সরকার গঠনের ১০০ দিনের মধ্যে বিদেশি ব্যাঙ্কে গচ্ছিত কালো টাকা উদ্ধার করা হবে। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পাঁচ মাস পরেও মোদীর সরকার সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়নি বলে সম্প্রতি কংগ্রেস অভিযোগ তোলে। তারই প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি গত সপ্তাহে মন্তব্য করেন, নাম প্রকাশ্যে এলে কংগ্রেসের মুখ ফের পুড়বে। পাশাপাশি তিনি ইঙ্গিত দেন, তদন্তের পরে ৮০০টি নামের তালিকার মধ্যে ১৩৬টি নাম প্রকাশ করা যেতে পারে। কংগ্রেস যদিও ওই দিন জানিয়েছিল, শুধু ১৩৬ জনের নাম কেন, কেন্দ্র সমস্ত নামই জানিয়ে দিক শীর্ষ আদালতকে।

এ দিনের হলফনামায় শীর্ষ আদালতকে কেন্দ্র জানিয়েছে, যত ক্ষণ না পর্যন্ত বাকিদের বিরুদ্ধে আইন ভাঙার কোনও অভিযোগ নথিভুক্ত না হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। এই নিয়ে আগামী মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। বাকি নাম প্রকাশ না করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের এই যুক্তি আদালতে আদৌ টেকে কি না এখন সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন