আদালতে মিশরের পদচ্যূত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসি। ছবি: পিটিআই।
মিশরের পদচ্যূত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসিকে ২০ বছরের জেলের সাজা শোনাল মিশরের এক আদালত। ক্ষমতায় থাকার সময়ে প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের সামনে বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগে তাঁর এই সাজা। যদিও আদালতের অধিকারকে অস্বীকার করেছেন মুরসি। মুসলিম ব্রাদারহুড এই রায়কে বিচারের নামে প্রহসন হিসেবে বর্ণনা করেছে।
মুরসি মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। ‘আরব বসন্ত’-এ দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকা হোসনি মোবারক ক্ষমতা হারানোর পরে সে দেশে নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রার্থী মুরসি। সেই সময়ে সেনাপ্রধান ছিলেন আল-সিসি। কিন্তু, ক্ষমতায় বসার পরে সংবিধানের বেশ কিছু পরিবর্তন করে নিজের ক্ষমতা বাড়াতে থাকেন মুরসি। শুরু হয় বিক্ষোভ। কড়া হাতে সেই বিক্ষোভ দমন করা যায়নি। অবশেষে সেনা অভ্যূত্থানের মাধ্যমে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যূত করেন আল-সিসি। পরে আল-সিসিই মিশরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
ক্ষমতায় বসেই মুসলিম ব্রাদারহুডকে দমন করা শুরু করেন আল-সিসি। সংগঠনটিকে বেআইনি ঘোষণা করার পাশাপাশি ধরপাকড় ও বিচার শুরু হয়। বিচারে কয়েক হাজার ব্রাদারহুড কর্মীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়। একই সঙ্গে মুরসির বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ এনে বিচার শুরু হয়। এর মধ্যে বিক্ষোভকারীদের হত্যার অভিযোগের রায় এ দিন ঘোষিত হল। এ ছাড়াও মুরসির বিরুদ্ধে লেবাননের হিজবুল্লা, প্যালেস্তাইনের হামাস ও ইরানের ইসলামিক গার্ডের হয়ে দেশের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগের বিচার চলছে। রয়েছে দেশের গোপন তথ্য একটি সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে কাতারে পাচার করা এবং ২০১১-এ হোসনি মোবারক ক্ষমতায় থাকার সময়ে জেলেবন্দি নেতাদের ছাড়াতে জেলেভাঙার পরিকল্পনা করার মতো অভিযোগও।
এ দিনের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মুরসির আইনজীবীরা। পাশাপাশি মুসলিম ব্রাদারহুডও আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে মিশরের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে মুসলিম ব্রাদারহুড জানিয়েছে।