পাক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত কাশ্মীরের গ্রাম। ছবি: এপি।
কাশ্মীর সীমান্তে পাক হামলার জবাবে ভারতের কড়া অবস্থানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সুর নরম করল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার রাত থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর গুলি ও মর্টার হামলা অনেকটাই কমে এসেছে বলে সূত্রের খবর। কাঠুয়া জেলায় বিএসএফের চারটি চৌকি লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ হলেও তার তীব্রতা যে অনেকটাই কম তা স্বীকার করে নিয়েছে বিএসএফ।
জম্মু-কাশ্মীরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর প্ররোচনাহীন পাক হামলার জবাব যে ‘ট্রিগার’ দিয়েই দেওয়া হবে তা বৃহস্পতিবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে পাকিস্তানকে ‘শত্রু’ আখ্যাও দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি সুর চড়ান প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। হামলা বন্ধ না করলে ভারতীয় সেনা পাকিস্তানকে সমুচিত শিক্ষা দেবে বলেও জানান তাঁরা। দিল্লিতে কর্মরত পাক হাইকমিশনারকে ডেকে কড়া ভাষায় হামলার নিন্দা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও অবিলম্বে হামলা বন্ধ করতে বলে বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পাকিস্তানকে হামলা বন্ধ করতেই হবে। সীমান্তের ওপার থেকে গোলাগুলি বন্ধ হলে এপার থেকেও তা বন্ধ করা হবে।” এর পরেই আস্তে আস্তে কমতে থাকে হামলার তীব্রতা।
গত ন’দিন ধরে ১৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে পাক রেঞ্জার্স। হামলায় এখনও পর্যন্ত ৮ ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ১৩ জন নিরাপত্তাকর্মী-সহ আহত হয়েছেন অন্তত ৯০ জন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৩২ হাজার মানুষকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সীমান্তের শতাধিক গ্রাম। বিএসএফের এক মুখপাত্র এ দিন বলেন, “বৃহস্পতিবার রাত থেকে জম্মু এবং সাম্বা জেলায় কোনও হামলা হয়নি। রাত ৮টা নাগাদ কাঠুয়া এবং হীরানগর জেলায় বিএসএফের চারটি চৌকি লক্ষ্য করে সীমান্তের ওপার থেকে গুলিবর্ষণ হলেও তা মিনিট কুড়ির বেশি স্থায়ী হয়নি। এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতিরও কোনও খবর নেই। গত কয়েকদিনের তুলনায় পরিস্থিতি এখন অনেকটাই শান্ত।”
আপাতত পরিস্থিতি শান্ত হলেও ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলা ঠেকাতে সীমান্তের গ্রামগুলিতে সাধারণের জন্য বাঙ্কার তৈরি করতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।