সিউড়ি আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অভিযুক্তদের। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাড়ুইয়ের চৌমণ্ডলপুর গ্রামে পুলিশকে আক্রমণের ঘটনায় রবিবার আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই নিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল দশ। শনিবারই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। এ দিন ধৃত আরও পাঁচ অভিযুক্তকে রবিবার সিউড়ি আদালতে তোলা হয়। ধৃতেরা হলেন নইমা বিবি, নাজমুন্নিসা বিবি, বাবর আলি, শেখ নাসিরুদ্দিন এবং শেখ নবি নওয়াজ। এদের মধ্যে শেখ নাসিরুদ্দিন ও শেখ নবি নওয়াজকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ঋষি কুশারী।
মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের চৌমণ্ডল গ্রামে প্রচুর বোমা মজুত রয়েছে বলে গোপন সূত্রে খবর পায় পুলিশ। সেই মতো গত ২৫ সেপ্টেম্বর কয়েক জন পুলিশকর্মীকে নিয়ে ওই গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালাতে যান পাড়ুই থানার ওসি প্রসেনজিত্ দত্ত। গ্রামে ঢোকা মাত্রই বাধার মুখে পড়তে হয় তাদের।
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল, বোমা ছুড়তে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পিছু হটে পুলিশ। সেই সময়েই পুলিশের গড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুড়লে মাটিতে পড়ে যান ওসি প্রসেনজিত্ দত্ত। তিনি জানান, মাটিতে পড়ে যাওয়া মাত্রই কিছু লোক তাঁকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মোট ৪৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযুক্তদের খোঁজে এলাকায় দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়ে শনিবার গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে। এ দিনও তল্লাশি চালিয়ে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এলাকা দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে সাত্তোর-কসবা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রচুর বোমা ও অস্ত্র মজুত করা হয়। অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ১৬টি প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের উপর হামলার নেপথ্যে কারা ছিলেন এই নিয়ে শুরু হয় চাপানউতোর। রাজনৈতিক তরজায় নেমে পড়ে তৃণমূল ও বিজেপি। একে অপরের ঘাড়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করে। ঘটনার পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি এখনও থমথমে। গ্রামে চলছে পুলিশের টহল। এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান আইজি পশ্চিমাঞ্চল সিদ্ধিনাথ গুপ্ত। যেখানে বোমা মজুত রাখা ছিল সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যান তিনি। তিনি বলেন, “ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। গ্রামের যে সব জায়গায় এখনও বোমা ও অস্ত্র মজুত রয়েছে সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।” পাশাপাশি, আহত ওসি প্রসেনজিত্ দত্তকে দেখতে হাসপাতালে যান আইজি।