বার্নপুরেও সহযোগিতার সুরে মোদী-মমতা

কলকাতার নজরুল মঞ্চের পর আসানসোলের বার্নপুর! ফের একমঞ্চে মোদী-মমতা! ফের দু’জনেই শোনালেন উন্নয়নের প্রশ্নে সহযোগিতার সুর! রাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিনে রবিবার সকালে বার্নপুরের জনসভায় দেশের উন্নয়নে ‘টিম ইন্ডিয়া’ কার্যকারিতার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবং সাম্প্রতিক অতীতে মোদীর সমালোচনায় মুখর হলেও এ দিন মমতা সেই সুরেই তাল মেলালেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ১৪:৪০
Share:

একই মঞ্চে, হাসিমুখে। বার্নপুরের পোলো গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শৈলেন সরকার।

কলকাতার নজরুল মঞ্চের পর আসানসোলের বার্নপুর! ফের একমঞ্চে মোদী-মমতা! ফের দু’জনেই শোনালেন উন্নয়নের প্রশ্নে সহযোগিতার সুর! রাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিনে রবিবার সকালে বার্নপুরের জনসভায় দেশের উন্নয়নে ‘টিম ইন্ডিয়া’ কার্যকারিতার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবং সাম্প্রতিক অতীতে মোদীর সমালোচনায় মুখর হলেও এ দিন মমতা সেই সুরেই তাল মেলালেন।

Advertisement

এ দিন সকালে দক্ষিণেশ্বর ও বেলুড় মঠ হয়ে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছন আসানসোলের বার্নপুরে। সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ বার্নপুরের পোলো গ্রাউন্ডে একটি অস্থায়ী হেলিপ্যাডে নামেন তিনি। সেখান থেকে প্রথমে ইস্কোর কারখানায় যান তিনি। এর পর বার্নপুরে এক জনসভায় যান তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী-সহ আসানসোলের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় প্রমুখ। জনসভায় ইস্কোর আধুনিকীকরণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মমতা। যে সৌজন্যের আবহ শনিবার আগাগোড়াই বজায় রেখেছিলেন দু’জন, এ দিনের অনুষ্ঠানেও তা ছিল চোখে পড়ার মতো। মমতা বলেন, “রাজনীতি থাকবে, পাশাপাশি উন্নয়নও হবে।” কেন্দ্র-রাজ্যকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার কথা বলেন তিনি। একই কথার পুনরাবৃত্তি হল মোদীর বক্তৃতায়। মোদি বলেন, “টিম ইন্ডিয়া ছাড়া ইন্ডিয়ার উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী হল একটি টিম। যে টিম দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।” মমতার মতোই তিনি বলেন, দলের চেয়েও দেশের স্বার্থ আগে রাখতে হবে।

১৯১৮ সালে তৈরি হয় বার্নপুরের ইস্কো কারখানা। ১৯৭২ সালে এর রাষ্ট্রায়ত্তকরণ হয়। আটের দশকের গোড়া থেকে কারখানা ধুঁকতে শুরু করে। কারখানার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের দাবি তোলেন সংস্থার শ্রমিক-কর্মীদের একাংশ। প্রায় তিন দশক ধরে এই দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান তাঁরা। অবশেষে ২০০৭ সালে সংস্থাটির দায়িত্ব নেয় সেল। সে বছরের ২৪ ডিসেম্বর বার্নপুরে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।

Advertisement

ইস্কোর আধুনিকীকরণ প্রকল্পের ‘কৃতিত্ব’ কে পাবেন— তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গিয়েছে শাসক দল ও বিরোধীদের মধ্যে। এ দিন মমতা দাবি করেন, “১৯৯৮ সালে এনডিএ সরকারের আমলে ইস্কোর আধুনিকীকরণের দাবি করেছিল তৃণমূল। আজ তা পূরণ হল।” আশির দশকে সিপিএম প্রভাবিত সিটু এবং কংগ্রেস প্রভাবিত আইএনটিইউসি-সহ পাঁচটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলে তৈরি করা হয় ‘ইস্কো বাঁচাও কমিটি’। পরবর্তী কালে এই কমিটির নেতৃত্বেই ইস্কো সংক্রান্ত আন্দোলন হয়েছে। তবে আশির দশক থেকে ধুঁকতে থাকা ইস্কো বাঁচাতে যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন, এ দিনের অনুষ্ঠানে তাঁরাই ছিলেন ব্রাত্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন