প্রথমে রাস্তাঘাটে উত্যক্ত করা, তার পর প্রেমের প্রস্তাব। কোনও উপায় না দেখে আত্মহত্যার হুমকি। কিন্তু তাতেও চিড়ে ভেজেনি। বিএসএফ জওয়ান ওই যুবকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন হাওড়ার জগাছার বাসিন্দা প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ছাত্রীটি। তাতেই ঘটে বিপত্তি। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রকাশ্য রাস্তায় ওই ছাত্রীটিতে খুনের হুমকি দিয়ে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ধর্মেন্দ্র গুপ্ত নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হাওড়ার জগাছায় ছাত্রীটির বাড়ির কাছের একটি রাস্তায়। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত যুবক পলাতক। ওই যুবকের খোঁজ চলছে বলে পুলিশের তরফে জাননো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ছ’মাস ধরে জগাছার সরকারি কলোনির ৯ নম্বর ব্লকে এক বন্ধুর কাছে থাকত ধর্মেন্দ্র। এর আগে সে কানপুরে ছিল। জগাছায় আসার পর থেকেই সে কলেজে যাতায়াতের পথে ছাত্রীটিকে উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। গত তিন মাস ধরে তা আরও বেড়ে যায়। ছাত্রীটিকে রাস্তায় হেনস্তাও করতে শুরু করে সে।
ছাত্রীটির পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছে, মাস দু’য়েক আগে কলেজে যাবার পথে রাস্তা আটকে তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ধর্মেন্দ্র। কিন্তু রাজি হননি ওই ছাত্রী। ক্ষিপ্ত ধর্মেন্দ্র প্রকাশ্য রাস্তাতেই চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করে ছাত্রীটিকে। বাড়ি ফিরে পরিবারকে বিষয়টি জানান ওই ছাত্রী। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর পাড়ার লোকেদের সামনে ক্ষমাও চায় অভিযুক্ত ধর্মেন্দ্র। তবে এই ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ছাত্রীটি। প্রভাব পড়ে তাঁর পড়াশোনার উপরেও।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর কিছু দিন চুপচাপই ছিল ধর্মেন্দ্র। তার পর ফের সে ছাত্রীটিকে হেনস্তা করতে শুরু করে। এমনকী বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকিও দেয় সে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যায় পাড়ার দোকান থেকে খাবার কিনতে গিয়েছিলেন ছাত্রীটি। একা বাড়ি ফেরার পথে তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়ায় ধর্মেন্দ্র। ছাত্রীটির হাত ধরে তাঁকে খুনের হুমকি দিতে শুরু করে। অভিযোগ, পালাতে চেষ্টা করলে রাস্তায় ফেলে আচমকাই তাঁকে চড়, ঘুষি, লাথি মারতে শুরু করে ধর্মেন্দ্র। পরে বেগতিক বুঝে তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখেই পালায়।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে আসেন ওই ছাত্রী। তবে ঘটনার রেষ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তাঁর চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রী বলেন, ‘‘ভর সন্ধ্যায় প্রকাশ্য রাস্তার মাঝে ফেলে বেধড়ক মারছিল আমাকে। সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।’’ এর পর কী ভাবে পড়াশোনা চালাবেন এখন সেই চিন্তাই তাঁকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।