সিয়াচেন বেস ক্যাম্পে সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীরের বন্যাদুর্গতদের সঙ্গে দীপাবলি কাটানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন আগেই। সেই মতো বৃহস্পতিবার কাশ্মীর সফরে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে গিয়েই মোদী পৌঁছে যান সিয়াচেনে। সীমান্তে সেনা জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলি পালন করেন তিনি।
বন্যাদুর্গতদের সঙ্গে দীপাবলি কাটাতে চান বলে মঙ্গলবারই টুইট করেছিলেন মোদী। পাঁচ মাসে তাঁর চতুর্থ কাশ্মীর সফরে তিনি যে সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গেও সময় কাটাবেন তা এ দিন সকালেই জানান তিনি। টুইটারে লেখেন, “সিয়াচেন যাচ্ছি। এই বিশেষ দিনে দেশের বীর সেনা-জওয়ানদের সঙ্গে কাটাতে পারব ভেবে গর্বিত। বাহিনীর প্রত্যেককে জানাতে চাই, দেশের সবাই তাঁদের এই লড়াইয়ে পাশে আছে। কাঁধ কাঁধ মিলিয়ে তাঁদের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রস্তুত। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা-সহ প্রতিকুল পরিস্থিতিতে দেশকে রক্ষা করে আসছেন তাঁরা। প্রত্যেক জওয়ানের জন্য গর্ব অনুভব করি।” সিয়াচেনে কিছু ক্ষণ কাটিয়ে শ্রীনগরে ফিরে আসেন তিনি। সেখানে বন্যাদুর্গতদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা-সহ বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকেরা। বিমানবন্দরেই তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসন নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। সূত্রের খবর, বৈঠকে ত্রাণের কাজে সাহায্যের জন্য আরও কেন্দ্রীয় সাহায্যের দাবি করেন ওমর। ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য এর আগে রাজ্যকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র। সেই সাহায্যের পরিমাণ বাড়িয়ে ৪৪ হাজার কোটি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এর পর রাজভবনে বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক শেষে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য অতিরিক্ত পাঁচশো সত্তর কোটি এবং ছ’টি হাসপাতালের মেরামতি ও আধুনিকিকরণের জন্য ১৭৫ কোটি টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের বিরোধিতায় প্রথম থেকেই সরব হুরিয়ত। প্রতিবাদ জানাতে এ দিন উপত্যকায় বনধের ডাক দেয় হুরিয়তের কয়েকটি শাখা সংগঠন। বনধের সমর্থনে হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি বলেন, “বন্যাবিধ্বস্ত কাশ্মীরের জন্য কিছুই করেনি কেন্দ্র। নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীও। ঈদে কাশ্মীরের মানুষকে শুভেচ্ছা না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দীপাবলি পালনও গ্রহণযোগ্য নয়। হুরিয়ত এর প্রতিবাদ করছে।” বনধের জেরে রাজধানী শ্রীনগর-সহ লাল চকের বেশির ভাগ দোকান-বাজার ছিল বন্ধ। দীপাবলির জন্য সরকারি দফতর-সহ স্কুল-কলেজও এমনিতেই বন্ধ ছিল।
তবে প্রধানমন্ত্রীর সফরেও বিরাম নেই আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর পাকিস্তানের গুলিবর্ষণের। বৃহস্পতিবার সকালেও বিএসএফের কয়েকটি চৌকি লক্ষ করে গুলি চালায় রেঞ্জার্স। বিএসএফের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে নাগাদ বিনা প্ররোচনায় গুলি চালাতে থাকে রেঞ্জার্স। গুলি চালানো হয় সাম্বা এবং আর্নিয়া সেক্টরে। তবে এই হামলায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।