কার্তিক দাস।
টাকিতে বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার এক এজেন্টের বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হল। রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানার টাকি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম কার্তিক দাস (৬২)। পরিবারের দাবি, দেনা শোধ করতে না পেরে অপমানে-অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন কার্তিকবাবু। হাসনাবাদ থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃতের পরিবার জানিয়েছে, কার্তিকবাবু মহাকরণে অর্থ দফতরে কাজ করতেন। দু’বছর আগে তিনি অবসর নিয়েছিলেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্তিকবাবুর বড় ছেলে সুব্রত দাস একটি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। এলাকা থেকে কয়েক লাখ টাকা তুলে তিনি ওই সংস্থার বসিরহাট শাখায় রেখেছিলেন। অবসরের পর ছেলের হয়ে কার্তিকবাবুও গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা তোলার কাজে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, অবসরকালে পাওয়া এককালীন অর্থ থেকে লক্ষাধিক টাকা অর্থলগ্নি সংস্থায় বিনিয়োগ করেছিলেন কার্তিকবাবু।
সারদা কেলেঙ্কারির পর রাজ্যে একে একে এ ধরনের সংস্থা বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। ওই সংস্থার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অভিযোগ, এর পরই টাকা ফেরতের দাবিতে কার্তিকবাবুর বাড়িতে চড়াও হতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। এমনকী, বাবা-ছেলেকে হুমকিও দেন তাঁরা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি দিনের পর খারাপ হওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন কার্তিকবাবু। পরিবার সূত্রের খবর, সোমবার সকালে কার্তিকবাবু নিজের ঘরের দরজা খুলছেন না দেখে ছেলেদের সন্দেহ হয়। জানালা দিয়ে ঘরের মধ্যে চোখ রাখতেই দেখা যায়, সিলিং ফ্যানে লাগানো দড়িতে ঝুলছেন কার্তিকবাবু। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে দেহটি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই নিয়ে অর্থলগ্নি সংস্থায় বিনিয়োগ করে বসিরহাট মহকুমাতে এক দম্পতি-সহ ৭ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। কার্তিকবাবুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার কথা চাউর হওয়ায় এ দিন দুপুরে টাকিতে রোজভ্যালির দফতরে হামলা চালায় জনতা। ভাঙচুরের পাশাপাশি ওই অফিসের জিনিসপত্রও নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।