গাজায় চলছে ১২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি, মৃত ৯৮৫

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ১৩:১৭
Share:

শুধু স্মৃতি। গাজা ২৬ জুলাই ২০১৪। ছবি: এএফপি।

মাত্র ১২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি। তাই কাজে লাগাতে নেমে পড়েছেন গাজার বাসিন্দারা। এ ক’দিন ধরে জনশূন্য রাস্তায় মানুষ আর গাড়ির মিছিল। অনেক বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু অধিকাংশ বাড়িই ধ্বংসস্তূপ। ধ্বংসস্তূপ ঘেঁটে যা মিলছে তাই কুড়িয়ে নিচ্ছেন অনেকে। মিলছে মৃতদেহও। চড়চড় করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী তা ৯৮৫ ছুঁয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ছ’হাজার। ঘরছাড়া প্রায় ১,৪০,০০০ বাসিন্দা। মারা গিয়েছেন ৩৯ জন ইজরায়েলিও।রসদ সরবরাহ, ত্রাণ বিলি, আহত ও নিহতদের উদ্ধারের জন্য হামাস ও ইজরায়েল এই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। অন্য দিকে, দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সন্ধানে প্যারিসে নানা দেশের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক শুরু হয়েছে।

Advertisement

শনিবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে দশটা থেকে এই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে এর মধ্যেও হামাসের তৈরি সুড়ঙ্গগুলির অনুসন্ধান জারি থাকবে বলে জানিয়েছে ইজরায়েলি সেনা। পাশাপাশি, হামাস যদি ইজরায়েলি সেনা বা সাধারণ নাগরিকদের উপর কোনও হামলা চালায় তা হলে তৎক্ষণাৎ জবাব দেওয়া হবে বলে ইজরায়েল হুশিয়ারি দিয়েছে। মানবিকতার খাতিরে এই যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়া হয়েছে বলে হামাসের তরফে জানানো হয়েছে। যদিও ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোসে ইয়ালোন গাজায় সেনা অভিযানের পরিধি আরও বাড়ানোর কথা বলেছেন। যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গাজার বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে এসেছেন। অনেকেই তাঁদের ছেড়ে আসা ঘরবাড়ি দেখতে গিয়েছেন। ব্যাঙ্ক এবং দোকানের সামনে জমেছে দীর্ঘ লাইন।যুদ্ধবিরতির সুযোগে গাজার শেজাইয়া অঞ্চলে শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজ। গত কয়েক দিন এই অঞ্চলে প্রবল যুদ্ধ চলেছিল। যুদ্ধে পুরো এলাকাটিই কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে নিত্যব্যবহার্য নানা জিনিস। দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। সেখানে ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে বেশ কিছু মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮৫টি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে বলে প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

শুক্রবার ইজরায়েলের ক্যাবিনেটে দীর্ঘস্থায়ী শান্তিপ্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু শর্তগুলি মনমতো না হওয়ায় প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি। সূত্রের খবর, তিন দিন ধরে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি প্রস্তাবটির কাঠামো ঠিক করেছিলেন। সেখানে অন্তত সাত দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধ রাখার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। প্রস্তাবটি খারিজ হওয়ার পরে জন কেরি বলেন, “পুরো বিষয়টিই আপাতত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কাঠামোটি ঠিকই আছে, তবে প্রস্তাবটি সংশোধনের জন্য আরও আলোচনার প্রয়োজন।” শনিবারই প্রস্তাবটি নিয়েই কাতার, তুরস্ক, ফ্রান্স জার্মানি, ইতালি ও ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রীরা প্যারিসে আলোচনা শুরু করেছেন। প্রাথমিক ভাবে যেখানে থেকে চালু থাকা যুদ্ধবিরতি আরও বাড়িয়ে নেওয়ার দাবি উঠেছে। থাকবেন জন কেরি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরাও। অনেকের আশা রবিবার থেকে ঈদ উপলক্ষে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হামাসের তৈরি সুড়ঙ্গগুলি ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর ইজরায়েল। এখন পর্যন্ত ৩১টি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা গিয়েছে বলে ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে। অন্য দিকে, হামাসও অবরোধ তোলার দাবিতে অনড়।

Advertisement

ওই দিন দক্ষিণ গাজার খুজা গ্রামে ইজরায়েলি হানায় এক পরিবারের ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্যালেস্তাইনি স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। জবাবে হামাসও মধ্য ও দক্ষিণ ইজরায়েল লক্ষ করে রকেট হামলা চালায়। যদিও এই হামলায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও প্রতিবাদ চলছে। শুক্রবার সেখানে ‘ডে অফ অ্যাঙ্গার’-এর ঘোষণা করা হয়েছিল। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের পূর্ব জেরুজালেমে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সেখানে ইজরায়েলি সেনার হাতে চার জন প্যালেস্তাইনির মৃত্যু হয়েছে। ইজরায়েলি সেনা সূত্রে খবর, গাজায় তাঁদের দু’জন সেনার মৃত্যু হয়েছে ওই একই দিনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন