দুর্ঘটনার পরে জাতীয় সড়কের ধারে আমগাছের চারা সমেত সেই ৪০৭ গাড়িটি। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
রাস্তার ধারে শুয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় লরি চাপা পড়ে প্রাণ হারালেন পাঁচ জন। সোমবার সকালে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার মথুরাপুরের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। মৃতেরা হলেন, কাশেম শেখ (৫০), আসাদ শেখ (৫৫), আরমান শেখ (৩২), মানিক সর্দার (৫৫) এবং বাবলু শেখ (৫৫)। এঁদের সকলেরই বাড়ি নওদা থানার পাটকেবাড়িতে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগর থেকে আম গাছের চারা নিয়ে একটি ছোট ট্রাকে করে ফরাক্কা যাচ্ছিল ১৭ জনের একটি দল। ফরাক্কা থেকে সীমানা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে ঢুকে বর্ষাকালে ওই চারা সাইকেলে করে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করাটাই তাঁদের পেশা। ট্রাকটিতে তাই চারাগাছের সঙ্গে ছিল বেশ কয়েকটি সাইকেলও। কিন্তু মাঝপথে রাত আড়াইটে নাগাদ মথুরাপুরের কাছে জাতীয় সড়কের উপর গাড়িটি খারাপ হয়ে যায়। একেই রাত, তার উপর যে জায়গায় গাড়িটি খারাপ হয়, সেখানে ভাল মিস্ত্রি না থাকায় আলো ফোটার অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা। জাতীয় সড়কের এক পাশে দাঁড় করানো ছোট ট্রাকের সামনে রাস্তার উপরেই শুয়ে পড়েন ওই দলের আট জন। ঘুমিয়েও পড়েন ক্লান্তিতে। বাকিরা এ দিক ও দিকে ছড়িয়েছিটিয়ে ছিলেন। এ দিন সকাল ৫টা নাগাদ ওই গাড়ির পেছনে একটি লরি এসে সজোরে ধাক্কা মারে। দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটি ধাক্কার চোটে সামনে থাকা ঘুমন্ত ওই আট জনের উপর উঠে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৫ জনের। ট্রাকের খালাসি এবং চালক-সহ দলের বাকিরা অন্য জায়গায় ছিলেন বলে তাঁরা অক্ষত রয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। দুর্ঘটনায় আহত হন তিন জন।
ওই এলাকায় জাতীয় সড়কের চার লেনের কাজ হচ্ছে হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (এইচসিএল)-এর তত্ত্বাবধানে। ঘটনাস্থলের পাশেই তাদের অফিস। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন এবং ওই সংস্থার কর্মীরা উদ্ধারকাজে হাত লাগান। পরে পুলিশকর্মীরা আসেন। এইচসিএল-এর রিকভারি ভ্যানে করে সবাইকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে ভর্তি করা হয় তিন জনকে। ধাক্কা মারার পর লরি নিয়ে পালিয়ে যায় চালক।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই দলে ১৭ জন ছিলেন। দুর্ঘটনায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিন জন হাসপাতালে ভর্তি।”