নদিয়ার ভক্তবালা বিএড কলেজে টাকার বিনিময়ে ছাত্রভর্তির ঘটনায় কার্যত কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়কেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, বিএড কলেজগুলির উপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরদারিতে শিথিলতা ছিল। প্রশ্ন উঠেছে, টিএমসিপি-র দিক থেকে অভিযোগের আঙুল ঘোরাতেই কি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢাল করছেন মন্ত্রী? পার্থবাবু জানিয়েছেন, কী ঘটনা ঘটেছে, তা তাঁর জানা নেই। তবে আর্থিক বেনিয়মে জড়িত থাকলে কেউই রেহাই পাবেন না বলে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে ভক্তবালা কলেজের ১৭ জন পড়ুয়া লিখিত ভাবে অভিযোগ জানান, মোটা টাকার বিনিময়ে সেখানে ভর্তি হয়েছেন তাঁরা। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা টিএমসিপি নেতা তন্ময় আচার্যের মাধ্যমেই মোটা টাকার বিনিময়ে তাঁরা ওই কলেজে ভর্তি হন বলে জানিয়েছিলেন অভিযোগকারীরা। ঘটনার তদন্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এক সদস্যের কমিটি গড়ে রাজ্য সরকার। গত সপ্তাহে সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন পার্থবাবু। সেখান থেকে বেরোনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী জানান, উচ্চশিক্ষা সচিবকে রিপোর্টটি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সচিবের রিপোর্ট পেলে তা খতিয়ে দেখবেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গেই পার্থবাবু বলেন, “কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএড কলেজগুলিতে যে নজরদারির দরকার ছিল, তাতে যেন কোথাও একটা শিথিলতা হয়েছে। এত শিথিলতা থাকা উচিত ছিল না। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দেখে প্রাথমিক ভাবে আমার এই ধারণা হয়েছে।”
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলু অবশ্য মন্ত্রীর কথার বিরোধিতা করেননি। তবে তিনি দায় চাপিয়েছেন আগের উপাচার্যের উপরে। হাংলু বলেন, “এই ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়েছিলেন গত বছর জুলাইয়ে। আমি গত নভেম্বরে দায়িত্ব নিই। মন্ত্রীর মত সম্পর্কে যা বলার আগের উপাচার্য বলতে পারবেন।” হাংলুর দাবি, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে পরিদর্শনে কোনও খামতি ঘটেনি। প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপ কুমার মহান্ত বলেন, “আমি ন’মাস উপাচার্য ছিলাম। সেই সময় কোনও অনিয়ম হয়নি।”