জখম লক্ষ্মী কর্মকার। নিজস্ব চিত্র।
ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের দাদাগিরি। এবারে ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে দমদম স্টেশন লাগোয়া বিপিন গাঙ্গুলি রোডে। ঘটনায় দমদম থানায় তারক সাহা, উত্তম শেখর ও লোকনাথ সাহা নামে তিন তৃণমূল কর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করেন তৃণমূল।
অভিযোগ, তৃণমূলের তিন কর্মী দীর্ঘদিন ধরেই দমদমের বাসিন্দা গণেশ কর্মকারের ফ্ল্যাটকে জোর জবরদস্তি তৃণমূলের পার্টি অফিস বানাতে চাইছিল। সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই তাঁদেরকে মারধর করা হয়।
তিনি জানান, ওই ফ্ল্যাটের এক তলার একটি কামরায় তাঁর মা মঞ্জুদেবী এবং বোন থাকেন। তিনি কাছেই একটি বাড়িতে থাকেন। অফিস যাতায়াতের পথে তিনি মাঝেমধ্যেই এই ফ্ল্যাটে ঘুরে যান। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাতেও অফিস থেকে ফেরার পথে তিনি ফ্ল্যাটের নিচে সাইকেল রাখছিলেন। সেই সময় অভিযুক্ত তিন জন যুবক এসে হাজির হয়। তাঁকে ফ্ল্যাটের একটি কামরা ছেড়ে দিতে বলে। এই নিয়ে তাঁর সঙ্গে যুবকদের বচসা বাধে। অভিযোগ, তারপর আচমকাই তাঁকে মারধর করতে শুরু করে তারা।। চিত্কার শুনে তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন তাঁর বোন লক্ষ্মী। অভিযোগ লক্ষ্মীদেবীকেও বাঁশ দিয়ে মারতে শুরু করে তারা। লক্ষ্মীদেবীর মাথায় আঘাত লাগে। চিকিত্সার জন্য তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত উত্তম ওই ফ্ল্যাটেরই বাসিন্দা। তার দাবি, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পুলিশের কাছে তিনিও একটি পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দমদমের বিপিন বিহারী গাঙ্গুলি রোড লাগোয়া এলাকায় সকাল থেকেই চাঞ্চল্য ছড়ায়। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগে এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন সকালেই অবশ্য দমদম থানার পুলিশ ও ব্যারাকপুর কমিশনারেটের কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করা হবে।”
গণেশবাবুর পরিবার অভিযুক্তদের তৃণমূলের কর্মী বলে অভিযোগ করলেও এলাকার তৃণমূল নেতা তথা দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পারিষদ প্রবীর পাল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “ বরং গণেশই আমাদের মিটিং মিছিলে যায়। নানা সমস্যায় আমার কাছে আসে। অভিযুক্ত তিনজন কোনও দিনই তৃণমূলে ছিল না।” প্রবীরবাবু যুক্তি, “ওই ফ্ল্যাটের ছোট্ট ওই ঘরে আমাদের পার্টি অফিস কেন করতে যাব? ওই এলাকায় আমাদের জমি কিনে বড় পার্টি অফিস আছে। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।”