রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
ব্যারাকপুরের তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে গুলি করার ঘটনায় ন’জনের বিরুদ্ধে ব্যারাকপুর থানায় এফআইআর দায়ের করলেন তাঁর স্ত্রী অর্পিতা ভট্টাচার্য। অভিযুক্তেরা প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী শিবু যাদবের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
রবীনবাবুকে গুলি করে খুন করার চেষ্টার প্রতিবাদে কার্যত অশান্ত ব্যারাকপুর মণিরামপুরের সদর বাজার। গোটা এলাকা জুড়ে চলছে পুলিশি টহলদারি। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বন্ধ হয়ে যায় অঞ্চলের ফেরি চলাচল। বন্ধ হয় বাস ও অটো চলাচলও। তারই মধ্যে ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বিপদে পড়েন মানুষজন। বাস, অটো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। সকালের দিকে কিছু ট্যাক্সি ও মিনিডোর যাত্রী নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও রবীনবাবুর অনুগামীরা সেগুলোকে আটকে দেন। যাত্রীদের জোর করে টেনে নামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল।
রবীন্দ্রনাথবাবুর অফিস ঘর। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
পুলিশকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পেশায় আইনজীবী রবীন্দ্রনাথবাবু বুধবার রাতে ব্যারাকপুর সদর বাজারের নয়াবস্তি এলাকায় নিজের অফিসে ছিলেন। সেই সময় কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর দফতরের সামনে বোমা ছোড়ে। বোমার আওয়াজ শুনে হেলমেট হাতে দফতর থেকে বেরিয়ে এলে তাঁর দিকে রিভলভার তাক করে এক দুষ্কৃতী। তাকে লক্ষ করে হেলমেটটি ছুড়ে মারেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তার হাত থেকে রিভালভারটি পড়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে তিনি দৌড়তে শুরু করেন। তাঁকে লক্ষ করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে অভিযুক্তরা। মোট তিনটি গুলি লাগে তাঁর শরীরে। রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটতে ছুটতে তিনি কাছেই প্রণব সরকার নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে পড়েন। দুষ্কৃতীরাও তাঁকে তাড়া করে সেখানে ঢুকে পড়ে।
পেশায় ফিজিওথেরাপিস্ট প্রণববাবু জানিয়েছেন, রক্তাক্ত রবীন্দ্রনাথবাবুকে দেখে তাঁর বৃদ্ধা মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি কোনও মতে ওই যুবকদের বাড়ি থেকে বের করে দেন। পুলিশকেও খবর দেন তিনি। পুলিশ এসে রক্তাক্ত রবীনবাবুকে প্রথমে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই তাঁকে কলকাতায় ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই রাতেই অস্ত্রোপচার করে কোমর ও বুকের দুটি গুলি বের করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ফের অস্ত্রোপচার করে পায়ের গুলিটি বের করা হয়। আপাতত তিনি সুস্থ বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা।