নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণে নাম জড়াল শাসক দলের নেতা-সমর্থকের

নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণে এ বার নাম জড়াল শাসক দলের এক নেতা ও সমর্থকের। কোচবিহারে মাতালহাটের অঞ্চল সভাপতি তৃণমূলের আজিজার রহমান-সহ অভিযোগ উঠেছে সন্তোষ বর্মন নামে এক দলীয় সমর্থকের বিরুদ্ধেও। ওই নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে সন্তোষকে গ্রেফতার করেছে দিনহাটা থানার পুলিশ। এখনও অধরা অন্য অভিযুক্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ২১:৪৯
Share:

আজিজার রহমান। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণে এ বার নাম জড়াল শাসক দলের এক নেতা ও সমর্থকের। কোচবিহারে মাতালহাটের অঞ্চল সভাপতি তৃণমূলের আজিজার রহমান-সহ অভিযোগ উঠেছে সন্তোষ বর্মন নামে এক দলীয় সমর্থকের বিরুদ্ধেও। ওই নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে সন্তোষকে গ্রেফতার করেছে দিনহাটা থানার পুলিশ। এখনও অধরা অন্য অভিযুক্ত।

Advertisement

পুলিশ এবং নির্যাতিতার পরিবার সূত্রে খবর, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রীর স্কুলে গিয়ে সন্তোষ জানায়, মেয়েটির বাবা অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাবার কাছে নিয়ে যাওয়ার অছিলায় ওই ছাত্রীকে স্কুল থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় সে। কিন্তু হাসপাতালের রাস্তায় না গিয়ে গাড়ি অন্য রাস্তায় যাওয়ায় ভয় পেয়ে যায় ছাত্রীটি। অভিযোগ, সে সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও তাকে জোর করেই আলিপুরদুয়ারের একটি হোটেলে নিয়ে যায় সে। এর রাতে ওই হোটেলে তাকে ধর্ষণ করে সন্তোষ। পরের দিন তাকে মাতালহাটে ফিরিয়ে আনা হয়। সেখানেই একটি বাড়িতে ওই ছাত্রীটিকে জোর করে আটকে রাখা হয়। ছাত্রীটি জানিয়েছে, আজিজার রহমানের সঙ্গে সেখানে ছিলেন ঘেঁটাগুড়ির অঞ্চল সভাপতি তৃণমূলের প্রদীপ বর্মনও। ছাত্রীর দাবি, এর পর তাকে ধর্ষণ করে আজিজার। ঘটনার কথা যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য প্রদীপবাবু তাকে শাসানিও দেয় বলে অভিযোগ। ৫ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে ছাত্রীটি।

বাড়ি ফিরে ভয়ে প্রথমে এ বিষয়ে মুখ খোলেনি ছাত্রীটি। বরং বান্ধবীর বিয়েতে গিয়েছিল বলে বাড়িতে জানায় সে। সেই রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। পরের দিন, শনিবার মাকে গোটা ঘটনা জানায় সে। রবিবার সন্ধ্যায় দিনহাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই নির্যাতিতার মা। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ নিতে গড়িমসি করেছে পুলিশ।

Advertisement

ঘটনার কথা সংবাদমাধ্যমে জানাজানি হতেই পুলিশ নড়েচড়ে বসে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বিজেপি-র কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে-র অভিযোগ, “শাসক দলের নেতা জড়িত বলেই পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণে দেরি করছে।” অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব। তবে অভিযোগ নিতে গড়িমসির কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব এ দিন বলেন, “ঘটনায় জড়িত এক অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর এক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” গোটা ঘটনায় শাসক দলের নেতা-সমর্থকের নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন