বাড়ির দেওয়ালে পাক সেনার গুলির চিহ্ণ। ছবি: পিটিআই।
বিদেশসচিব পর্যায়ের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর জম্মু-কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর বারবার সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করছিল পাক সেনা। এ বার সেই আক্রমণের ধার বাড়িয়ে জম্মু-কাশ্মীরের আর এস পুরা সেক্টরে ব্যাপক গুলি বর্ষণ করল পাক রেঞ্জার্স। শনিবার ভোর থেকে চলা এই সংঘর্ষে সীমান্ত লাগোয়া এলাকার দুই গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও সাত জন। আহতদের মধ্যে বিএসএফের এক জওয়ানও রয়েছেন। অন্য দিকে, পাকিস্তানের দাবি, বিএসএফের ছোড়া গুলিতে মৃত্যু হয়েছে শিয়ালকোটের দুই বাসিন্দার। সূত্রের খবর, সকাল ৭টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিএসএফ-ও।
সেনা সূত্রে খবর, শনিবার ভোর থেকে আর এস পুরা সেক্টরে বিএসএফের ২২টি সীমান্ত চৌকি লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায় পাক সেনা। হামলার লক্ষ্য ছিল সীমান্তের গ্রামগুলিও। পাক সেনার গুলিতে মৃত্যু হয় মহম্মদ আক্রম এবং তাঁর ছেলের। জখম হন আক্রমের স্ত্রী, কন্যা-সহ আরও সাত জন। তড়িঘড়ি সীমান্তের গ্রামগুলি থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলি থেকে হাজার দু’য়েক গ্রামবাসিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত তাঁদের রাখা হয়েছে দু’টি সরকারি স্কুল ও একটি আইটিআই-তে। আহতদের চিকিত্সা চলছে জম্মু মেডিক্যাল কলেজে।
হামলার পর মর্টার ও গুলির টুকরো নিয়ে গ্রামবাসীরা। ছবি: পিটিআই।
এই নিয়ে গত দু’সপ্তাহে ভারত-পাক সীমান্ত বরাবর মোট ১৫ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করল পাক সেনা। গত ১৯ অগস্ট দু’বার যুদ্ধবিরতি ভেঙে পুঞ্চের হামিরপুর সাব-সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় সেনা চৌকি লক্ষ করে গুলি চালায় পাক সেনা। গত ২০ অগস্ট ফের দু’বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরির মাঞ্জাকোট সাব-সেক্টর ও পুঞ্চের হামিরপুর সাব-সেক্টরে গুলির লড়াই চলে। ১৭ ও ১৮ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের আরনিয়া ও আর এস পুরা সাব-সেক্টরে সারা রাত ধরে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ও মর্টার নিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর হামলা চালায় পাক সেনা। গুলির লড়াইয়ে এক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। গত ১১ অগস্ট আরনিয়া সেক্টরে পাক সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে আহত হন দু’জন বিএসএফ জওয়ান।