আইএস জঙ্গিদের হামলায় বিধ্বস্ত থানা। আনবার প্রদেশ। ছবি: রয়টার্স।
ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের হাতে পতন হতে পারে ইরাকের আনবার প্রদেশের। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আনবারের প্রাদেশিক সরকার। সাহায্যের জন্য বাগদাদের কাছে আর্জিও জানানো হয়েছে। সঙ্কটের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবিদি। তবে এ জন্য বিদেশি সেনার সাহায্য নেওয়ার কথা তিনি বাতিল করে দিয়েছেন।
পাশাপাশি সিরিয়ার কোবানে অঞ্চলের অবস্থাও সঙ্কটজনক। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, অধিকাংশ কুর্দ শহর ছেড়ে সিরিয়ায় আশ্রয় নিলেও এখনও প্রায় ৭০০ জন ওখানে আটকে আছেন। এঁরা প্রধানত বয়স্ক মানুষ। আইএস জঙ্গিদের হাতে কোবানের পতন হলে এঁদের হত্যার আশঙ্কা করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তুরস্ক সীমান্তের খুব কাছে এই কোবানে। ফলে কোবানকে আইএস-এর হাত থেকে বাঁচাতে তুরস্কের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু এ বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে এখনও নারাজ তুরস্ক।
ইরাকের আনবার প্রদেশের রাজধানী রামাদিতে ক্রমাগত হামলা চালাচ্ছে আইএস। এর মধ্যেই ওই অঞ্চলের একটি সেনা ঘাঁটি তাদের দখলে চলে এসেছে। এ ছাড়া একাধিক থানাতেও তারা হামলা চালিয়েছে। ইরাকের সরকার জানিয়েছে, ইরাকি সেনা আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে কঠিন লড়াই চালাচ্ছে। সেখানে সেনাদের জন্য রসদ পাঠানো হয়েছে। তবে ইরাকি সেনা আইএস জঙ্গিদের ঠেকাতে পারবে কি না তা নিয়ে মার্কিন সেনার মধ্যেই সংশয় রয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন সেনা অফিসার ইরাকি সেনার দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। যেখানে কুর্দ মিলিশিয়ারা আইএস-এর অগ্রগতিই শুধু ঠেকায়নি, তাদের থেকে বেশ কিছু অঞ্চল ছিনিয়ে নিতে পেরেছে। সেখানে ইরাকি সেনা এখনও আইএস-এর অগ্রগতি সে ভাবে ঠেকাতেই পারেনি।
আইএস-এর হাত থেকে বাঁচতে তাই মার্কিন সেনার সাহায্য চেয়ে বাগদাদের কাছে আবেদন করেছে আনবার-এর প্রাদেশিক সরকার। তবে বাগদাদ এই আবেদন বাতিল করে দিয়েছে। মার্কিন বায়ুসেনা ওখানে বিমান আক্রমণ চালাচ্ছে। আনবার প্রদেশেই হাদিথা বাঁধ ও জলবিদ্যুত্ কেন্দ্র রয়েছে। সম্প্রতি আইএস-এর হাত থেকে বাঁধটি উদ্ধার করেছে ইরাকি সেনা। কিন্তু আনবারের পতন হলে এই বাঁধটির দখল আবার হারাতে হতে পারে।
কোবানেতে আইএস-এর হামলা এখনও ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে কুর্দ মিলিশিয়ারা। কিন্তু কত দিন এ ভাবে আইএস-কে ঠেকিয়ে রাখা যাবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল শঙ্কিত। আইএস কোবানের দখল নিলে সেখানে আটকে পড়া প্রায় ৭০০ বয়স্কের হত্যার আশঙ্কা প্রবল। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে দ্রুত সাহায্য করতে পারে তুরস্ক। কিন্তু সীমান্ত থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্ব হওয়া সত্ত্বেও সেনা পাঠাতে নারাজ তুরস্ক। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনাও হচ্ছে। কিন্তু সিরিয়ায় ঢোকার আগে আইএস-এর সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদের বিরুদ্ধেও সামরিক হস্তক্ষেপের আশ্বাস চায় তুরস্ক। পাশাপাশি কুর্দরা শক্তিশালী হয়ে উঠুক তাও চায় না তারা। ফলে কোবানের কুর্দ মিলিশিয়াদের অস্ত্র সাহায্য দিতে তাদের আপত্তি রয়েছে। কিন্তু শুধু বিমান হামলা চালিয়ে কোবানেতে আইএস-কে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না বলে আমেরিকা ও ব্রিটেন আবার জানিয়েছে।