ব্যারাকপুরে দুঃসাহসিক ডাকাতি

এক দুঃসাহসিক এবং অভিনব ডাকাতির ঘটনা ঘটল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। ওই অঞ্চলে এর আগে এমন ডাকাতির ঘটনা তাঁদের রেকর্ডেও নেই বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। ঘটনাস্থল ব্যারাকপুরের টিটাগড় থানার বিড়লা গেট। শনিবার রাত আড়াইটের ঘটনা। ঠিক কী হয়েছিল ওই রাতে? পুলিশ সূত্রে খবর, ৪-৫ জনের সশস্ত্র একটি ডাকাত দল বিড়লা গেটের বাসিন্দা নিত্যানন্দ তিওয়ারির বাড়িতে হানা দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ১৪:০১
Share:

আহত গৃহকর্তা নিত্যানন্দ তিওয়ারি। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।

এক দুঃসাহসিক এবং অভিনব ডাকাতির ঘটনা ঘটল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। ওই অঞ্চলে এর আগে এমন ডাকাতির ঘটনা তাঁদের রেকর্ডেও নেই বলেও জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা। ঘটনাস্থল ব্যারাকপুরের টিটাগড় থানার বিড়লা গেট। শনিবার রাত আড়াইটের ঘটনা।

Advertisement

ঠিক কী হয়েছিল ওই রাতে?

পুলিশ সূত্রে খবর, ৪-৫ জনের সশস্ত্র একটি ডাকাত দল বিড়লা গেটের বাসিন্দা নিত্যানন্দ তিওয়ারির বাড়িতে হানা দেয়। প্রথমে ওই ডাকাত দলটি বাড়ির কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙে, তার পর দরজার তালা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢোকে। সেই সময় ঘরে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন নিত্যানন্দবাবু। বাড়ির ভিতর আওয়াজ হতেই তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। আওয়াজ কোথা থেকে আসছে তার হদিশ করতে তিনি এগিয়ে যান। তখনই কালো কাপড়ে মুখ ঢাকা ওই ডাকাতরা তাঁকে ধরে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখায়। তাঁর কাছ থেকে আলমারির চাবি চায় ডাকাতরা। নিত্যানন্দবাবু তা দিতে অস্বীকার করলে ডাকাতদেরই এক জন তাঁর মাথায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করে। ভয় পেয়ে গিয়ে নিত্যানন্দবাবু ডাকাতদের আলমারির চাবি দিয়ে দেন। এর পর ডাকাতরা আলমারি থেকে নগদ টাকা, গয়না লুঠ করে। সব জিনিসপত্র গুছিয়ে নেওয়ার পর তারা নিত্যানন্দবাবুর কাছে চা খেতে চায়। নিত্যানন্দবাবুর স্ত্রী তাদের চা করে খাওয়ান। এখানেই শেষ নয়! নিত্যানন্দবাবু পুলিশের কাছে জানান, ডাকাতরা নিজেদের মধ্য বলাবলি করতে থাকে এত মালপত্র কী ভাবে তারা নিয়ে যাবে! তখন ডাকাতরা তাঁর গাড়ির চাবি চায়। নিত্যানন্দবাবু গাড়িটি না নেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করতে থাকেন। কিন্তু ডাকাতরা তাতে কর্ণপাত করেনি। গাড়িতে মালপত্র বোঝাই করে নিয়ে চম্পট দেয় তারা। যাওয়ার আগে নিত্যানন্দবাবু ও তাঁর স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে দিয়ে যায়, কেড়ে নিয়ে যায় মোবাইল ফোনও। সেই সঙ্গে হুমকিও দেয়, চেঁচামেচি করলে ফল ভাল হবে না।

Advertisement

ডাকাতরা চলে যাওয়ার পরই কিছু দূরে এক আত্মীয়ের বাড়ি গিয়ে বিষয়টি জানান নিত্যানন্দবাবু। সেখান থেকেই পুলিশকে ডাকাতির খবরটি দেওয়া হয়। রবিবার ভোরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা। ডাকাতির পুরো বিবরণ শুনে তাঁরাও হতবাক। তাঁরা জানান, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে মাঝেমধ্যেই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু ডাকাতির পর গৃকর্তার গাড়ি নিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম। তাঁদের অনুমান, বাড়ির নিরাপত্তার বিষয়ে আগেই রেইকি করেছিল ডাকাতরা। ব্যারাকপুর পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান অজয় ঠাকুর জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। স্থানীয় কোনও দুষ্কৃতী এর সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন