প্রবল চাপের মুখে পড়ে শনিবার উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁর ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করতে বাধ্য হল অখিলেশ-সরকার। গত বুধবার বদায়ূঁতে দুই দলিত কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন করে তাঁদের মৃতদেহ আমগাছে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় ওই দুই কিশোরীর পরিবারের তরফে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পুলিশ কর্মী-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। এরই পাশাপাশি, এ দিন বিকেলে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব জাভেদ উসমানিকে সরিয়ে দিল অখিলেশ-সরকার। তাঁর জায়গায় নিযুক্ত করা হয়েছে অলোক রঞ্জনকে। কেন জাভেদকে সরানো হল, সে বিষয়ে সরকারি ভাবে যদিও কিছু জানানো হয়নি।
এ দিন দলিত ওই কিশোরীদের পরিবারের তরফে অভিযুক্তদের প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি জানিয়ে দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণ নয়, সুবিচার চান। শুক্রবার এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী। তদন্তের সবিস্তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এ দিন বদায়ূঁর ওই গ্রামে যান কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীও। তিনিও সিবিআই তদন্তের পক্ষেই সওয়াল করেন। চাপের মুখে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে ঘটনার বিচারের পাশাপাশি নিহতদের পরিবার প্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এ দিন সেই অবস্থান থেকে সরে এসে রাজ্য সরকার সিবিআই তদন্তের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে। লখনউতে এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, বদায়ূঁর ঘটনায় নিহতদের পরিবারের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিএসপি-র সাধারণ সম্পাদক স্বামীপ্রসাদ মৌর্য গত কাল বদায়ূঁ গিয়েছিলেন। ফিরে এসে মায়াবতীকে সবিস্তার জানিয়েছিলেনও তিনি। রবিবার সকালে মায়াবতী বদায়ূঁ যাবেন বলে দলীয় সূত্রে খবর। ওই দুই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
এ দিন ওই দুই দলিত কিশোরীর বাড়ি গিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন রাহুল গাঁধী। দুই কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন করে যে আমগাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল সেখানেও যান রাহুল। ঘটনার কথা স্থানীয় পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেও তাঁর কাছে ওই পরিবার দু’টির তরফে অভিযোগ করা হয়। রাহুল বলেন, “ওঁরা আমায় জানিয়েছেন, অর্থের বিনিময়ে মেয়েদের সম্মান ফিরে পাওয়া যাবে না। তাঁরা বিচার চান। রাজ্য পুলিশের প্রতি ওঁদের কোনও আস্থা নেই। আমিও একমত। নারীর সম্মানের কোনও অর্থমূল্য হয় না।” এর পরই রাহুল জানান, ওই পরিবারের দাবির সঙ্গে ঐকমত্য হয়ে তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, “যারাই এই অপরাধ করে থাকুক না কেন, তাদের জেনে রাখা উচিত এ দেশে এমন কাজ তারা করতে পারে না।”