বন্ধ্যাত্বকরণের পরই ছত্তীসগঢ়ে মৃত ১১ মহিলা

বন্ধ্যাত্বকরণের অস্ত্রোপচারের পরে প্রাণ গেল ১১ জন মহিলার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে এখনও লড়াই করছেন ৪৯ জন। ঘটনাস্থল ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরের এক সরকারি স্বাস্থ্যশিবির। শনিবার সরকারি উদ্যোগে বিলাসপুরের পেন্ডারি গ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, বন্ধ্যাত্বকরণের সময় চিকিত্সার গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার জেরে মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের নির্দেশে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ চার জন চিকিত্সককে বরখাস্ত করা হয়েছে। মৃতদের প্রতেকের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গুরুতর অসুস্থদের নিখরচায় চিকিত্সা ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৪ ২১:১৫
Share:

মঙ্গলবার বিলাসপুর হাসপাতালে অসুস্থ মহিলাদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ।

বন্ধ্যাত্বকরণের অস্ত্রোপচারের পরে প্রাণ গেল ১১ জন মহিলার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে এখনও লড়াই করছেন ৪৯ জন। ঘটনাস্থল ছত্তীসগঢ়ের বিলাসপুরের এক সরকারি স্বাস্থ্যশিবির। শনিবার সরকারি উদ্যোগে বিলাসপুরের পেন্ডারি গ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, বন্ধ্যাত্বকরণের সময় চিকিত্সার গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার জেরে মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের নির্দেশে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ চার জন চিকিত্সককে বরখাস্ত করা হয়েছে। মৃতদের প্রতেকের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গুরুতর অসুস্থদের নিখরচায় চিকিত্সা ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

Advertisement

গত ৮ নভেম্বর ওই হাসপাতালে একটি বন্ধ্যাত্বকরণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। আশপাশের প্রায় ৪০টি গ্রাম থেকে ওই শিবিরে ৮৩ জন মহিলা এসেছিলেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বন্ধ্যাত্বকরণের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মাথাপিছু ১ হাজার ৪০০ টাকা করে দিয়েছিলেন। অস্ত্রোপচার ভাল ভাবে মিটে যাওয়ার পর তাঁদের প্রত্যেককে ওষুধ দিয়ে ছেড়েও দেন চিকিত্সকেরা। অভিযোগ, সমস্যা শুরু হয় অস্ত্রোপচারের কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই। বাড়ি ফিরে ওই মহিলাদের বমি, পেটে যন্ত্রণা এবং জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। ৬০ জন মহিলাকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের বিলাসপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার রাত ৯টা পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের প্রত্যেকেরই বয়স ৩২-এর কম। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এখনও ৪৯জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের ছত্তীসগঢ় ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (সিআইএমএস)-এ স্থানান্তরিত করা হয়েছে। চিকিত্সকদের একাংশের মতে, অস্ত্রোপচারের পরে কোনও ভাবে ওই মহিলাদের শরীরে সংক্রমণ ছড়ায়। আর তার জেরেই এই মৃত্যু। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর তিন সদস্যের একটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করেছে। দফতরের ডিরেক্টর কমলপ্রীত সিংহ জানিয়েছেন, তদন্তে গাফিলতি ধরা পড়লে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। যদিও এ দিন তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। অন্য দিকে, বিলাসপুরের জেলাশাসক সোনমণি ভোরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আলাদা করে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিলাসপুরের ওই হাসপাতালে ভর্তি মহিলাদের সঙ্গে দেখা করেন। উল্লেখ্য, বিলাসপুর রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অমর অগ্রবালের নিজের জেলা। স্বাস্থ্য পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরকারকে ভর্ত্সনা করেছেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। তিনি বলেন, “দোষীদের শাস্তি চাই। ভাবতেই পারছি না, কী ভাবে এটা ঘটল!” এই ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বনধ ডেকেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন