বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি হিসেবে তাঁর নামে সিলমোহর পড়েছে গত শনিবার। মাঝখানে কেটেছে মাত্র একটা সপ্তাহ। ফের সেই শনিবারকেই অমিত শাহ বেছে নিলেন নতুন টিম গঠনের জন্য।
দায়িত্ব পেয়ে তিনি যে নিজের মতো করে ঘুঁটি সাজাবেন, দলের অন্দরে তা নিয়ে জল্পনা ছিল। কিন্তু এ দিন টিম-অমিতে একটি নাম না থাকা অবাক করেছে রাজনীতির কারবারিদের। তিনি সুলতানপুরের সাংসদ বরুণ গাঁধী। বিজেপি সূত্রে খবর, মোদীর মন্ত্রিসভায় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীন দায়িত্ব মানেকাকে দেওয়ায় বরুণকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরানো হয়েছে। সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি তিনি পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বেও ছিলেন।
অমিত এ দিন ১১ জন সহ-সভাপতি, ৮ জন সাধারণ সম্পাদক, ১৪ জন সম্পাদক এবং ১০ জন দলীয় মুখপাত্রের নাম ঘোষণা করেছেন। বিজেপি-র দাবি, নতুন কমিটি গঠনে তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সদস্যদের অর্ধেকের বয়স পঞ্চাশের নীচে। বাকি সদস্যদের ৯৯ শতাংশের এখনও ষাট হয়নি। বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক জে পি নাড্ডা এ দিন বলেন, “অমিত শাহের নেতৃত্বে নতুন এই যুবা টিম প্রধানমন্ত্রী মোদীর স্বপ্নপূরণে কাজ করবে।”
কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে অমিত সহ-সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে একটা সময় দলই বাধ্য করেছিল মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ থেকে ইস্তফা দিতে। পরের দিকে নির্বাচনের কাজে লাগানো হয় ইয়েদুরাপ্পাকে। সহ-সভাপতি পদে রয়েছে মুক্তার আব্বাস নাকভির নাম। অন্য দিকে, সাধারণ সম্পাদকের পদে নতুন যে চার জনকে নিয়ে আসা হয়েছে, তাঁরা হলেন, রাম মাধব, সরোজ পাণ্ডে, ভূপেন্দ্র যাদব এবং রামশঙ্কর ক্ষেত্রিয়া। এদের মধ্যে রাম মাধবের পরিচিতি সঙ্ঘ পরিবারের মুখ হিসেবে। এর আগে অমিতের নামে সিলমোহর দিতে সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছিলেন মোদী। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছে জে পি নাড্ডা, রাজীবপ্রতাপ রুডি, মুরলীধর রাও এবং রামলালের নামও।
নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের মধ্যে বোঝাপড়া যে বিজেপিকে এ বারের নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে যথেষ্ট সাহায্য করেছে, তা নিয়ে নিঃসন্দেহ দলের অন্য নেতারা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মোদী দলের সর্বভারতীয় সভাপতি হিসেবে অমিতকেই চেয়ে এসেছেন। সেই মতো গত সপ্তাহে অমিত দায়িত্বও পেয়েছেন। দু’জনেই মনে করেন, সরকার চালাতে গেলে দলের সঙ্গে সংযোগ রাখা অত্যন্ত জরুরি। বিজেপি সূত্রে খবর, সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে এই প্রথম এক জন সাধারণ সম্পাদককে দলের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বিজেপি মনে করে, বাজপেয়ীর আমলে সরকারের সঙ্গে দলের ব্যবধান বেড়ে যাওয়াটা পরের বার ক্ষমতায় আসতে না পারার অন্যতম কারণ। ফের সেই ভুলের পথে পা বাড়াতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব।