যাত্রীর পেটে ক্ষুর চালানো সেই ট্যাক্সিচালক গ্রেফতার

আত্মরক্ষার্থেই চালকদের কাছে অস্ত্র রাখতে হয়। পুলিশ নয়, বিপদে পড়লে সেই অস্ত্রই তাঁদের রক্ষা করবে। এ যুক্তিতেই শুক্রবার যাত্রীর পেটে ক্ষুর চালানো ট্যাক্সিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছিল বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন। আর গ্রেফতার হওয়ার পর ধৃত চালক সেই যুক্তিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেন। জানালেন, ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে যাত্রীরা তাঁকে মারধর করায় আত্মরক্ষার্থেই তিনি ক্ষুর চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ১৩:১৬
Share:

আত্মরক্ষার্থেই চালকদের কাছে অস্ত্র রাখতে হয়। পুলিশ নয়, বিপদে পড়লে সেই অস্ত্রই তাঁদের রক্ষা করবে। এ যুক্তিতেই শুক্রবার যাত্রীর পেটে ক্ষুর চালানো ট্যাক্সিচালকের পাশে দাঁড়িয়েছিল বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন। আর গ্রেফতার হওয়ার পর ধৃত চালক সেই যুক্তিকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেন। জানালেন, ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে যাত্রীরা তাঁকে মারধর করায় আত্মরক্ষার্থেই তিনি ক্ষুর চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন।

Advertisement

গত বুধবার রাতে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ট্যাক্সির ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে তিন যাত্রীর এক জনের পেটে আচমকাই ক্ষুর চালিয়ে দেন অভিযুক্ত ট্যাক্সিচালক। শুক্রবার রাতে বাগুইআটি থেকে সেই চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম কুতুব আলি মণ্ডল। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়ায়। কুতুবের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় (খুনের চেষ্টা) মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার তাকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হবে।

কী হয়েছিল ওই রাতে?

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছিল, দুই বন্ধুর সঙ্গে কলকাতা ঘুরতে বেরিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ড থেকে আসা বছর তিরিশের যুবক বিশাল আনন্দ। বালিগঞ্জের একটি হোটেল থেকে খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁরা পার্ক স্ট্রিট হয়ে শোভাবাজার গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরতি পথে অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া নিয়ে ট্যাক্সিচালকের সঙ্গে বচসা শুরু হয় ওই তিন যাত্রীর। বচসা চলাকালীন আচমকাই বিশালের পেটে ক্ষুর চালিয়ে দেন চালক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয় মেডিক্যাল কলেজে। বৃহস্পতিবার ওই ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে জোড়াসাঁকো থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই যুবক।

কী ভাবে সন্ধান মিলল অভিযুক্ত চালকের?

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালানোর সময়ে একটি ভাঙা মোবাইল উদ্ধার হয়। তাতে ১৭ জনের নাম ও নম্বর পাওয়া যায়। সেই নম্বরের সূত্র ধরেই শুক্রবার রাতে ওই ট্যাক্সির মালিকের খোঁজ পায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর বাড়ি বাগুইআটির কাছে। মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্ধান মেলে অভিযুক্ত চালক কুতুবের। রাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জেরার মুখে ওই রাতের অপরাধ তিনি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত দাবি করেন, আত্মরক্ষার্থেই ওই রাতে ক্ষুর চালাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে ওই যুবকেরা তাঁকে মারধর করেছিল।

মাঝরাতে কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত রাস্তায় ট্যাক্সিচালক যাত্রীর উপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাল। জখম সেই যাত্রীকে রাস্তার উপর ফেলে রেখে পালিয়েও গেল। অথচ পুলিশ কোথায় ছিল? উঠেছে সেই প্রশ্ন। এমনকী, অভিযোগ মেলার পর দেখা গিয়েছে ওই এলাকার কোনও সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশের কাছে নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন